মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে মোটরসাইকেল-অটোরিকশা সংঘর্ষে জনি (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন রিয়াদ (২৬) নামের আরেকজন। তারা মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ষোলঘর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সার্ভিস লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জনি ও আহত রিয়াদের বাড়ি ঢাকার লালবাগ এলাকায়।

হাসারা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘মোটরসাইকেল-অটোরিকশা সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

আরো পড়ুন:

পঞ্চগড়ে ট্রাক্টর উল্টে চালকের মৃত্যু

সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাকচাপায় ২ যুবকের মৃত্যু

মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো.

সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু হয়।’’

শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুসা ইব্রাহিম বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোটরসাইকেল চালক জনির মৃত্যু হয়। রিয়াদের পিঠের হাড় ভেঙে গেছে। তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।’’

ঢাকা/রতন/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে সরকার শিগগির পদক্ষেপ নেবে: আসিফ মাহমুদ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার শিগগির পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াও নির্বাহী আদেশে সরকার যে কোনো দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে নিষিদ্ধের বিষয়ে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক (আইনি কাঠামো) কী হবে, সরকার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস গতকাল শুক্রবার তাদের ওয়েবসাইটে আসিফ মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। এতে তিনি বলেছেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিকভাবে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার সঙ্গে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে দলীয়ভাবে তাদের নিষিদ্ধ, নিবন্ধন বাতিল করাসহ যে কোনো ব্যবস্থা সরকার নিতে পারে। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, বাংলাদেশের জনগণের চাওয়ার প্রতিফলন ঘটাতে সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।’

আসিফ মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এক ধরনের ‘ঐকমত্য’ হচ্ছে, এটি অত্যন্ত ইতিবাচক। মানুষ তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলটির অগণতান্ত্রিক, একগুঁয়েমি মনোভাব ও কার্যকলাপ মেনে নিতে পারেনি। এ জন্যই ৫ আগস্টের আগে ও পরে তাদের নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন ঐকমত্য হলে সরকারের জন্য যে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনৈতিক দল; যে বা যারাই হই না কেন, আমরা এ দেশের জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করি। ফলে ৫ আগস্টের পরে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও চাওয়া, সেগুলো প্রাধান্য দেওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। বিএনপির পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি উঠেছে, তাকে সাধুবাদ জানাতে চাই।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন বিষয়ে সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পরে আমরা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছি। গণঅভ্যুত্থান যারা ঘটান, পরবর্তী প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা না থাকার কারণে আমরা অতীতে দেখেছি, অভ্যুত্থানের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যায়। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরেও মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এসব বিবেচনা করে যারা স্বৈরাচার হটানোর আন্দোলনে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা একটি দল গঠনের চিন্তা করেছে। তা ছাড়া ৫ আগস্টের পর গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া অনেকেই কোনো রাজনৈতিক ব্যানারে যাননি।’

ছাত্রদের নতুন দলে সরকারের প্রতিনিধি থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের নীতিগত অবস্থান হলো– বর্তমান সরকারের ছাত্র প্রতিনিধি যারা আছেন, তাদের মধ্য থেকে কেউ যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেন, তাহলে তাঁর সরকারে থাকা ঠিক হবে না। কেউ সে প্রক্রিয়ার সঙ্গে গেলে অবশ্যই সরকার থেকে পদত্যাগ করে সেখানে যাবেন।’ ছাত্রদের দলে নিজের অংশগ্রহণ বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি এখনও ভাবিনি। কিছু বিষয় পর্যালোচনা করছি। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে সবাই জানতে পারবে।’

সরকার সংস্কারের পক্ষে; রাজনৈতিক দলগুলো চাইছে দ্রুত নির্বাচন। বিষয়টি সাংঘর্ষিক কিনা– উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, মোটেই সাংঘর্ষিক নয়। এসব বিষয় পুরোটাই আমাদের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। বর্তমান সরকার স্পষ্টই একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। ৫ আগস্টের পরে মানুষের মধ্যে এ মনোভাবই ছিল, যে কোনো একটি রাজনৈতিক দলকে যদি ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেও আগের গতানুগতিক ধারায় কাজ করবে। তবে এসব বিষয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি সরকারও হচ্ছে। কারণ, সমাজের প্রতিটি কাঠামোতেই স্বৈরাচারের দোসররা রয়ে গেছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করে আমরা যদি কোনো দলের হাতে ক্ষমতা তুলে দিই, তাদের জন্য সরকার পরিচালনা কঠিন হবে। এ কারণে ছয়টি সংস্কার কমিশনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এগুলো শাসনতান্ত্রিক সংস্কার। বাকি সংস্কার জনস্বার্থমূলক। সেগুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ