ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় সুজন শেখ (২২) নামে এক নসিমন চালক নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের চিতাঘাটা নামক রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত সুজন শেখ গুনবহা গ্রামের মুঞ্জু শেখের ছেলে। 

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রেলক্রসিংটি অরক্ষিত। এখানে কোনো গেটম্যান নেই। সুজন শেখ বোয়ালমারী বাজার থেকে নসিমনে রড-সিমেন্ট বোঝাই করে চতুল-ধুলপুকুরিয়া এলাকায় যাচ্ছিলেন। সকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি চিতাঘাটা রেলক্রসিংয়ে নসিমনটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় নসিমনটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং চালক সুজন মারাত্মক আহত হন। পরে স্থানীয়রা প্রথমে তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। 

রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রেল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/তামিম/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপই সমাধান

কুড়িগ্রামের চিলমারীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আজ পথহীন। শিক্ষকেরা গাছতলায় বসে ক্লাস নেন, শিক্ষার্থীরা ধুলা, ময়লা আর যানবাহনের শব্দের মধ্যে পড়াশোনা করে। এ ঘটনা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঘটেনি। ঘটেছে নৈতিক অবক্ষয়ের ফলে।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, সরকারি জায়গায় বন্দোবস্ত পেয়ে বিদ্যালয়ের পথরোধ করে বাড়ি নির্মাণ করেছেন এক ব্যক্তি। ফলে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের চরম অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি। যে দেশে শিক্ষা খাতকে অন্যতম ‘অগ্রাধিকার’ বলে দাবি করা হয়, সেখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশপথই যদি রক্ষা করা না যায়, তাহলে প্রশাসন আসলে কী করছে?

বছরের পর বছর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ওয়াপদা খালের বাঁধ দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করেছেন। সেই পথটি যে সরকারি খাসজমি, এ কথা প্রশাসন সবচেয়ে ভালো জানে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এক ব্যক্তি নিজেকে ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে ওই জমি বন্দোবস্ত নিতে পেরেছেন। এরপর ধীরে ধীরে স্থাপনা গড়ে তুলে বিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশপথ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এই অনিয়ম কি প্রশাসনের অগোচরে হয়েছে?

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছে। কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রথম আলো উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি ‘প্রশিক্ষণে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, ‘সমাধান বের করা হবে’। কিন্তু এই ‘হবে’ শব্দটিই মূল সমস্যা। প্রশাসন বছরের পর বছর শুধু ‘হবে’ বলেই দায়িত্ব এড়িয়ে গেছে। এদিকে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের পথ দখল করে স্থাপনা দাঁড়িয়ে গেছে দিব্যি।

বিদ্যালয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টির প্রবেশপথ রক্ষার দায়ও রাষ্ট্রের। কিন্তু বিদ্যালয়ের স্বার্থে তেমন কোনো সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না। কেন? আমরা আশা করি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করবে, যাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশে পাঠদান ও পাঠ গ্রহণ করতে পারে।

বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ পুনরুদ্ধার করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন উদাসীনতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে নিশ্চিত করতে হবে জবাবদিহি। একটি বিদ্যালয়ের পথরোধ করা মানে হাজারো শিশুর ভবিষ্যতের পথরোধ করা। আমরা আশা করি, প্রশাসন গড়িমসি না করে অবিলম্বে বিদ্যালয়টিতে প্রবেশের বাধা অপসারণ করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ