এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালনকালে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
Published: 15th, January 2025 GMT
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে কর্মসূচি পালনকালে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েক জন আহত হয়েছেন।
পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ ৫ দাবিতে বুধবার সকালে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন। অন্যদিকে, ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একদল লোক পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যায়।
সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার কর্মসূচি ছিল পূর্বনির্ধারিত। স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টিও গতকাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।
সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে লোকজন এনসিটিবির সামনে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে মাঝে অবস্থান নেয়। তখন দুই পাশ থেকে দুই পক্ষ পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয়। বেলা ১টার কিছু সময় পর কিছু লোক সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান। এতে কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন নারীও আছেন।
স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি অভিযোগ করেছে, তাদের ওপর হামলা হয়েছে। অন্যদিকে, সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা দাবি করেছে, তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে।
নবম ও দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ থাকা একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি। এরপর সরকার সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং পাঠ্যবইয়ের পিডিএফ সংস্করণ থেকে সেটি সরিয়ে নতুন একটি গ্রাফিতি সংযুক্ত করা হয়। তবে, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি আগের গ্রাফিতিটি সংযোজনের দায়ে রাখাল রাহা ওরফে সাজ্জাদের অপসারণ এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি করছে।
আজ এনসিটিবির সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহম্মদ ইয়াকুব মজুমদার। দাবির মধ্যে আছে—অবাঙালিদের (ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী) আদিবাসী সম্বোধন করে কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না, কোনো বইপুস্তক ছাপানো যাবে না, লেখালেখি করা যাবে না, কোনো নাটক-সিনেমা বা গল্প-কাহিনি রচনা করা যাবে না। বাঙালিদেরই বাংলাদেশের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের (অবাঙালি) ‘আদিবাসী’ বলা ও প্রচারণাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খিসা বলেছেন, “এটা ‘মব’ বাহিনীর হামলা। তারা আগে থেকেই সেখানে লাঠি নিয়ে অবস্থান করছিল। হামলায় আমাদের ১২ জন আহত হয়েছেন।”
তিনি অবিলম্বে তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার করার দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/সুকান্ত/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র জনত র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম আলো বাংলাদেশের মানুষের বিজয়ের সঙ্গী
বাংলাদেশের সাহসী সাংবাদিকতায় নতুন ইতিহাস গড়ে চলেছে প্রথম আলো। মানুষের লড়াই-সংগ্রাম, আনন্দ-বেদনার গল্প তুলে ধরে পত্রিকাটি হয়ে উঠেছে দেশের মতোই দক্ষিণ এশিয়ার নির্ভরযোগ্য নাম। পথচলার প্রতিটি ধাপই ছিল চ্যালেঞ্জে ভরা, তবু থেমে না গিয়ে প্রথম আলো শুধু সংবাদ পরিবেশনেই নয়, জনগণের শক্তি ও সচেতনতা জাগিয়ে তোলার কাজেও কাজ করে চলেছে। প্রথম আলো বাংলাদেশের মানুষের বিজয়ের সঙ্গী। সাহসী সাংবাদিকতার প্রতীক হিসেবেই প্রথম আলোকে সামনের দিনগুলোতে পাড়ি দিতে হবে।
প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। নগরের ডিআইটি এলাকায় অবস্থিত আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তনে আয়োজিত এই সুধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। বিকেল চারটায় জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিক, শিল্প উদ্যোক্তা, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাঁরা প্রথম আলো নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি নানা পরামর্শও দেন।
প্রথম আলোকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দেওয়া বক্তব্যে কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ বলেন, প্রথম আলো বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে। মানুষের লড়াই সংগ্রাম, আনন্দ–বেদনার গল্প ধারণ করার মাধ্যমে প্রথম আলো বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় অনন্য হয়ে উঠেছে।
শুধু সংবাদ পরিবেশন নয়, প্রথম আলো জনগণের শক্তি জাগিয়ে তোলার জন্য কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ রুমন রেজা। তিনি বলেন, প্রথম আলো এগিয়ে যাবে, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক দীনা তাজরিন বলেন, ত্বকীসহ নারায়ণগঞ্জের সব হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রথম আলো নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছে। প্রথম আলো সাহসী সাংবাদিকতার প্রতীক বলে মন্তব্য করেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের প্রভাষক ফারজানা আফরোজ। তিনি বলেন, এই সাহসিকতা নিয়ে প্রথম আলো সত্য প্রকাশ করে যাবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের আলী আহম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তনে