কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পরিত্যক্ত আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে শামীম মিয়া (৩৭) নামে এক পিঠা বিক্রেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার স্থানীয়রা ভৈরব বাজারের হলুদপট্টি এলাকার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের যুবলীগের কক্ষে লাশটি দেখে থানায় খবর দেন। দুপুর ২টার দিকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি ৫ আগস্ট ব্যাপক ভাঙচুরের শিকার হয়। তখন থেকে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে বলে জানান ওসি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ আওয় ম ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে
দেশে মাদকাসক্তি পরিস্থিতি এমনিতেই ভয়াবহ। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) মালয়েশিয়া থেকে আসা একটি নতুন ও ভয়ংকর সিনথেটিক মাদক ‘এমডিএমবি’র চালান জব্দ করেছে, চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছে। এ ঘটনায় নতুন মাদকের বিস্তারের বিষয়টি সামনে এল। মাদকটি ভেপ এবং ই-সিগারেটের ই-লিকুইডের সঙ্গে মিশিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে, যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক নতুন ধরনের নীরব হুমকি।
এমডিএমবি হলো অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি তরল সিনথেটিক মাদক। ডিএনসি মহাপরিচালকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর মাত্র কয়েক ফোঁটা স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা হ্যালুসিনেশন, আক্রমণাত্মক আচরণ এবং হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা ঘটায়। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো ভেপ ডিভাইস ও ই-সিগারেট এখন তরুণসমাজে একটি ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ হিসেবে জনপ্রিয় এবং মাদক কারবারিরা সেই জনপ্রিয়তার সুযোগ নিয়েই এই বিষ ছড়াচ্ছে।
ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমকে ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে ব্যবহার করছে মাদক কারবারিরা। সংকেতপূর্ণ পোস্ট, বিশেষ ইমোজি এবং লাইভ ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন হওয়ায় সাধারণ ব্যবহারকারী বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে এটি মাদক লেনদেন বলে শনাক্ত করা কঠিন। এটি প্রমাণ করে, মাদক কারবারিরা গতানুগতিক পথের পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকেও কাজে লাগাচ্ছে।
এই মাদকের জাল ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষিত শ্রেণির তরুণদের মধ্যে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও উচ্চশিক্ষিত পেশাদার ব্যক্তির উপস্থিতি। এই মাদকের বিস্তার রোধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানের পাশাপাশি সরকারের একাধিক স্তরে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। ভেপ ডিভাইস, এর ই-লিকুইডের উৎপাদন, আমদানি ও বিক্রির ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। এই ডিভাইসগুলোর অপব্যবহার রোধ করতে দ্রুত কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান–প্রদানের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংঘটিত মাদক লেনদেন ট্র্যাক করার জন্য ডিএনসি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে সাইবার নজরদারি ও ডিজিটাল ফরেনসিকের ক্ষেত্রে আরও সক্ষম করে তুলতে হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে এই মাদক আমদানির রুট স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভেপ ডিভাইসগুলোর অপব্যবহার এবং এর মাধ্যমে মাদক সেবনের ঝুঁকি সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ব্যাপক সচেতনতা ও পরামর্শমূলক কর্মসূচি শুরু করতে হবে। নতুন সিনথেটিক মাদক এবং ডিজিটাল মাধ্যমে এর ব্যবসার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮-কে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিতে হবে।
ডিজিটাল যুগে মাদকের নতুন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এখনই দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে তা আমাদের জনস্বাস্থ্য এবং তরুণসমাজের ভবিষ্যৎকে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবে।