আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ চেয়ে ঢাকায় লিফলেট বিতরণ করায় লালমনিরহাটের আলোচিত কলেজ শিক্ষক মুকিব মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

সোমবার রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) রেজাউল করিম মল্লিক।

তিনি বলেন, শিক্ষক মুকিব মিয়াকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই থানায় তার নামে একটি মামলা রয়েছে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত মুকিব মিয়া বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুকিব ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

গত শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে তার লিফলেট বিতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা শুরু হয়। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর থেকে দলের প্রধান শেখ হাসিনাসহ অনেক শীর্ষ নেতাই দেশের বাইরে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধেরও মামলা হয়েছে।

ঢাকার শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে শিক্ষক মুকিবকে থানায় হস্তান্তর করেছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। মুকিবকে রিমান্ডে আনা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

গঙ্গার ঢেউ কি বিহার থেকে বঙ্গের দিকে আসছে

প্রায় এক মাস হয়ে গেল বিহারের নির্বাচনের। ভারতের পূর্ব-দক্ষিণ অঞ্চলে এই নির্বাচনের ফল নিয়ে বিস্ময় কাটছেই না। বিজেপি জোট এখানে কেবল যে জিতেছে তা–ই নয়, বিপক্ষকে অনেকটা ধসিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে কংগ্রেস জোটের প্রায় ৮০ আসন কমে গেছে। ২৪৩ আসনের বিধানসভায় বিজেপি জোটের দখলে গেল দুই শর বেশি আসন।

যদিও নিবিড় অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধিকাংশ জায়গায় খুব অল্প অল্প ভোটে বিরোধীরা হেরেছে; কিন্তু আসনের বড় ব্যবধানে আরএসএস পরিবার দারুণ উজ্জীবিত। এখন তারা বলছে, গঙ্গার পানি বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে চলেছে জোয়ার হয়ে। কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী সে রকমই হুঁশিয়ারি দিলেন কলকাতার অভিভাবকদের। সত্যি কি তা–ই ঘটতে চলেছে? গঙ্গার আসন্ন এই প্রবাহে পদ্মাপারের মানুষদের জন্যও বিশেষ বার্তা আছে কি?

এসআইআর তলোয়ার কাকে বধ করবে?

ভারতের রাজনীতিতে বিহার ও বাংলার চরিত্র এক রকম নয়। তা ছাড়া প্রতি স্থানীয় নির্বাচনই স্থানীয় চরিত্রের। ফেডারেল ভারতের সেটা এক সৌন্দর্যও বটে। ভোটের মনোনয়ন ও প্রচারে বিহারে জাতপাতের বিবেচনা যতটা তীব্র, বাংলায় সে রকম ঘটে ধর্মীয় পরিচয়ে।

ফলে এটা বেশ প্রশ্নবিদ্ধ দাবি, বিহারের নির্বাচনী কলাকৌশল পশ্চিমবঙ্গও মাত করবে। তবে মমতার জন্য মাঠপর্যায়ে উদ্বেগজনক অনেক কিছু আছে। প্রায় দেড় দশক তিনি ও তাঁর দল ক্ষমতায়। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বহু অভিযোগ জমেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

তা ছাড়া সর্বভারতীয় বিজেপির তুলনায় তৃণমূল একান্তই প্রাদেশিক দল। পুরো বিজেপি ইতিমধ্যে প্রায় সব জনপদের উপযোগী দুর্দান্ত এক নির্বাচনী মেশিনে পরিণত হয়েছে। আবার ‘এসআইআর’–এর নামে পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে সূক্ষ্ম পক্ষপাতদুষ্ট এক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের আগে-আগে। এর প্রয়োগ থেকে বিহারের মতোই বাংলায়ও রাজনৈতিক সুবিধা পেতে চাইছে বিজেপি।

আরও পড়ুনভারত: যে কারণে উত্তর জনসংখ্যা চায় কমাতে, দক্ষিণ চায় বাড়াতে ২৮ নভেম্বর ২০২৪

‘এসআইআর’ হলো স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন। সরল বাংলায় যাকে বলে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই সংশোধনে বসে অনেক ভোটারের বেলায় প্রায় ১২টি নথি দেখাতে হবে। যে রাজ্যগুলোতে বিজেপিবিরোধীদের জমিন শক্ত, মুখ্যত সে রকম জায়গায় এটা শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্যে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বড় সংখ্যায় ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে।

‘নিবিড় সংশোধন’ হলে বাদ পড়বে সেসব ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ ও ‘রোহিঙ্গারা’।
বিহারের অভিজ্ঞতা বলছে, এসআইআরে বাদ পড়ছে প্রধানত প্রান্তিক মানুষ; যারা পারিবারিক সব ধরনের নথিপত্র ঠিকঠাক রাখার মতো দক্ষ নয়। বাংলায় এ রকম বেশি ঘটবে মুসলমান, মতুয়া ও আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে। এর মধ্যে মুসলমানেরা এখানে তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামদের সমর্থক। বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকায় এ রকম নিবিড় সংশোধন চালানো হয় অতি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা আসনগুলোতে। স্থানীয়রা যেগুলোকে বলে ‘মার্জিনাল সিট’।

বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে এসআইর তথা ভোটার তালিকা সংশোধন

সম্পর্কিত নিবন্ধ