বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতারআগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ভিসা সেবা চালু হচ্ছে কালফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিতরমজানে দুর্নীতিমুক্ত ত্রাণ প্যাকেজ চালু করবে পাকিস্তানরিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামানজেনিথ ইসলামী লাইফের সব সূচকেই প্রবৃদ্ধি১৫ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করেই নির্বাচন হতে হবে: গোলাম পরওয়াররমজানে কম লাভ করে জনগণের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারগুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯.
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
তিস্তায় দেখা বড় সাদা কপাল রাজহাঁস
তিস্তা নদী পরিযায়ী পাখিদের একটি পথ। এখানে পরিযায়ী পাখি এসে অবস্থান করে না। কিছুটা সময় বিশ্রাম নেয়। দু-চার দিন থেকে চলে যায় ভাটিতে। শীত মৌসুমে অনেক পাখি তিস্তায় আসে। কয়েক বছর ধরে যে পাখিগুলো আমরা দেখেছি, তার থেকে ভিন্ন একটি পাখি এ বছর দেখতে পেলাম। বড় সাদা-কপাল রাজহাঁস। আমি আগে আর কোথাও এ পাখি দেখিনি। ফলে প্রথম দেখার একটি বিশেষ আনন্দ আছে।
পাখিটি বাংলাদেশে অনিয়মিতভাবে দেখা যায়। বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীতে কয়েক বছর ধরে আমরা কয়েকজন আলোকচিত্রী নিয়মিত যাই। তাঁদের কেউ অতীতে এ পাখি দেখতে পাননি। আমাদের জানামতে, তিস্তায় এটাই এ পাখি দেখার প্রথম রেকর্ড। যেহেতু পাখিটি দেখতে অনেক বড়, তাই কেউ সহজে চিহ্নিত করতে পারে।
পরিযায়ী পাখির মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীতে অনেক পাখি দেখা যায়। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এমনকি পূর্বাঞ্চলে পরিযায়ী পাখি আসারও আগে নীলফামারী-লালমনিরহাট-রংপুরে তিস্তা নদী ধরে পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করে। ২০২০ সাল থেকে এমনটাই দেখে আসছি।
এ বছর নভেম্বর মাসের শুরুতেই রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা নদীর মহিপুর ঘাট থেকে নৌকায় উজানের দিকে যাই। প্রথম দিনই অনেক প্রজাতির পাখি দেখতে পাই। শুরুতে একঝাঁক গাঙচিল দেখলাম। দুই প্রজাতির গাঙচিল একসঙ্গে। এদের ছবি তুলে আরও খানিকটা উজানে যেতেই দেখতে পাই একঝাঁক পাতারি হাঁস। তারও খানিকটা উজানে কয়েকটি চখাচখি।
অনেক দূর থেকে দেখলাম কয়েক প্রজাতির হাঁসের একটি বড় মিশ্র ঝাঁক। খালি চোখে বোঝা যাচ্ছিল না কী হাঁস। ক্যামেরার লেন্সে দেখতে পেলাম পান্তামুখি হাঁস, রাঙা দিঘেরি, নাইরলি হাঁস, পিয়ং হাঁস। নৌকায় উজানে যেতে যেতে দেখলাম কয়েকটি পাখি আরও দূর থেকে উড়ে আসছে। দূরত্ব কিছুটা কমলে নিশ্চিত হলাম পাখির সংখ্যা ৪। আরও কাছে এলে বুঝলাম রাজহাঁস। ছবি তুলে জুম করে দেখলাম এগুলো বড় সাদা-কপাল রাজহাঁস। ২০০৮ সালে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বাংলাদেশের পাখি গ্রন্থে রেজা খান সাদা-কপাল রাজহাঁস সম্পর্কে লিখেছেন, ‘বিরলতম, কখনো দেখা মেলে। শীতের পরিযায়ী; মোটে একবার দেখা যাবার রেকর্ড আছে ঢাকার কোনো বড় নদীর এলাকায় অবিকল রাজহাঁস সাদৃশ্য।’ তবে এরপর আরও অনেকবার দেখা গেছে।
বিরল বড় সাদা-কপাল রাজহাঁস দেখা যাচ্ছে শুনে আলোকচিত্রী খাইরুল ইসলাম পলাশ এবং রানা মাসুদও তিস্তায় চলে আসেন। খাইরুল ইসলাম দেখতে পেলেও রানা মাসুদ আর দেখতে পাননি। পরে আমরা আরও বেশ কয়েক দিন তিস্তা নদীতে গিয়েছি কিন্তু আর বড় সাদা-কপাল রাজহাঁস দেখতে পাইনি। স্থানীয় কয়েকজনের কাছে শুনেছি, কোনো এক শিকারি রাজহাঁস মেরেছে। নিশ্চিত হওয়া যায়নি এই হাঁসগুলোকে কেউ মেরেছে কি না। এমনও হতে পারে, দূরে কোথাও চলে গেছে। শীত মৌসুম শেষ হলে এই পথ ধরে ফিরবে আবার আগের ঠিকানায়।
বড় সাদা-কপাল রাজহাঁসের ইংরেজি নাম গ্রেটার হোয়াইট–ফ্রন্টেড গুজ। বৈজ্ঞানিক নাম Anser albifrons।
এই রাজহাঁসের চঞ্চু ও মাথার মাঝখানে সাদা থাকার কারণে এর নামকরণ হয়েছে বড় সাদা-কপাল রাজহাঁস। পেটের অংশের হালকা গাঢ় ধূসর রঙে ছোপ ছোপ কালোর মিশেল চোখে পড়ে। লেজের দিকটা সাদা। পা হলদেটে। পালক প্রধানত গাঢ় ধূসর। পাখার ওপরের সাদা সরু রেখা চোখে পড়ে। পাখিটি আকৃতিতে অনেক বড় হওয়ায় দূর থেকে দেখতেও দারুণ দেখায়।
তুহিন ওয়াদুদ: অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর