চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবাল। যদিও বিপিএল খেলছেন বরিশালের হয়ে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় তামিমের বরিশাল মুখোমুখি হবে তামিমের হোমটাউন চট্টগ্রামের বিপক্ষে। চট্টগ্রামবাসী এই ম্যাচে কোন দলের সমর্থন করবেন? এমন প্রশ্নে চট্টগ্রামবাসীকে নিজের দলকেই সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন তামিম। 

ফাইনাল পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেন, ‘চিটাগংবাসীর উচিত চট্টগ্রামকে সাপোর্ট করা। আমি ব্যাটিংয়ে নামলে তারা হয়তো আমার জন্য একটু চেয়ার আপ করতে পারে। কিন্তু চিটাগংবাসীকে তাদের নিজের দলকেই সমর্থন করতে হবে।’

এবারের বিপিএলে শুরু থেকেই মাঠে নিজেদের দর্শক পেয়েছে ফরচুন বরিশাল। সিলেট এবং চট্টগ্রাম পর্বের মাঠে ছিলেন বরিশালের দর্শক। বরিশাল এই ফ্যানবেজ তৈরিতে সক্ষম হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তামিম।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান, এই ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য খেলি। যে মাঠেই খেলি বরিশালের সবসময় দর্শক ছিল। বরিশাল খুবই সাকসেসফুলি ফ্যানবেজ করতে পেরেছে। ভক্তদের জন্য ফাইনালে জেতার চেষ্টা থাকবে। যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারি ইচ্ছে আছে লঞ্চে ট্রফি নিয়ে যাওয়ার।’ 

এছাড়া বিপিএল বাঁচানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তামিম। তিনি জানান, বিপিএল নিয়ে বিতর্ক যেমন ছিল, বিপিএলে ভালো দিকও ছিল। এবারের আসরে রান হওয়াটা ভালো দিক বলে উল্লেখ করেন তিনি। তামিমের মতে, প্রতিদিন বিপিএল নিয়ে বিতর্ক তৈরি করলে বিদেশিদের কাছে ভালো বার্তা যায় না। এটাকে একসঙ্গে বাঁচানোর আহ্বান তার। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতীয়রা ষড়যন্ত্র করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে: জামায়াত সেক্রেটারি

বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দা‌বি জা‌নি‌য়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি অভিযোগ তুলেছেন, “দিল্লির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে ভারতীয়রা আমাদের বুদ্ধিজীবী তথা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।”

আরো পড়ুন:

টিটোর আত্মত্যাগে শত্রুমুক্ত হয় সাভার

বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ

রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্ম গেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট হল রুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তি‌নি এই অভিযোগ উত্থাপন করেন গোলাম পরওয়ার।

গোলাম পরওয়ার ব‌লেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বুদ্ধিজীবী হত্যার রহস্য এখনো রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে।” 

স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই এ হত্যাকাণ্ডের বিচারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি দাবি করে গোলাম পরওয়ার বলেন, “বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সব দোষ জামায়াতের ঘাড়ে চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা হয়েছে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে ভারত এবং তাদের এ দেশীয় এজেন্ট জড়িত ছিল; তা ভারতীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও লেখকদের লেখনি থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়।”

গোলাম পরওয়ারের ভাষ্য, “মূলত, ১৪ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের কথা থাকলেও ভারতীয় পরিকল্পনায় তা দুই দিন বিলম্বিত হয়। আর এ দু’দিনে আমাদের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, প্রকৌশলী, আইনবিদসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল। মূলত, যাদেরকে সে সময় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষে হলেও ভারত ও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের আদর্শবিরোধী ছিলেন। তাই তাদের পথচলাকে নির্বিঘ্ন করার জন্যই এই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতা-পরবর্তী কোনো সরকারই বুদ্ধিজীবী হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। বরঞ্চ আওয়ামী লীগ তদন্ত রিপোর্ট চাপা দিয়ে রেখেছে।”

এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি অভিযোগ করেন, “এমনকি চলচিত্রকার শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হানের অন্তর্ধানের ঘটনা আজো রহস্যাবৃত্তেই রয়ে গেছে।” 

বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানান জামায়াতের সে‌ক্রেটা‌রি জেনা‌রেল।

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় দিবসের মাত্র দুদিন আগে ঢাকাসহ সারা দেশে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতেই এমন নৃশংসতা চালিয়েছিল পাকিস্তান। এতদিন এই ইতিহাস চর্চিত হয়ে এলেও মিয়া গোলাম পরওয়ার দাবি করছেন, ভারতীয়রা ষড়যন্ত্র করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। 

মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাস বিতর্কে গোলাম পরওয়ারের প্রকাশ্যে এই দাবি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হলো স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের জামায়াত আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনে জামায়াতের পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।

উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য জিয়াউল হাসান, মু. আতাউর রহমান সরকার, জামাল উদ্দিন, মুহিবুল্লাহ ও নাসির উদ্দীন প্রমুখ।

মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, “বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই আমরা তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে বিভাজন করতে চাই না। তারা যে আদর্শেরই হোন না কেন, তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতে চাই।”

তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। 

ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, “জাতি হিসেবে যারা আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিতে চায়নি, তারাই এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের অপশক্তি। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, বিজয়ের ৫ দশক অতিক্রান্ত হলেও এ হত্যাকাণ্ডের কুশীলবরা আজো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। স্বাধীন দেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হানের হত্যার রহস্যের জট এখনো খোলেনি।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ