নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে রিমান্ডে
Published: 12th, February 2025 GMT
এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে পৃথক দুই হত্যা মামলায় ১০ দিন এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে শাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
আজ তাদের কারাগারে থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ধানমন্ডি ও যাত্রাবাড়ী থানার দুই হত্যা মামলায় নজরুল ইসলাম মজুমদারের ১০ দিন করে ২০ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই মামলায় তার পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে, ধানমন্ডি থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় শাফি মোদ্দাসের খান জ্যাতির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তার সাত দিনেরই মঞ্জুর করেন আদালত।
ধানমন্ডি থানার মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট বিকাল ৫টায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ছাত্র জনতার সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন শিক্ষার্থী শামীম (১৩)। মিছিলটি কলাবাগান এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অতর্কিত আক্রমণে আহত হন শামীম। এরপর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে পরের দিন ৬ আগস্ট চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় গত ৩ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২৮ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা জাহানারা বেগম।
যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানার চিটাগাং রোডে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইমন হোসেন গাজী নামের এক যুবক। এ ঘটনায় তার ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
এদিকে, এদিন একই আদালত বাড্ডা থানার মামলায় নজরুল ইসলাম মজুমদারকে, পল্লবী থানার মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড এর মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গুলশান থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া, যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় সাবেক ওসি আবুল হাসানকে ও মাইনুদ্দিনকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ল ইসল ম ধ নমন ড আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।