Samakal:
2025-11-02@06:59:43 GMT

ফাগুন হাওয়ায় মন উচাটন

Published: 14th, February 2025 GMT

ফাগুন হাওয়ায় মন উচাটন

শীতের রুক্ষতা শেষে রঙিন হয়ে উঠছে প্রকৃতি। কোকিলের ডাকে মাতোয়ারা চারপাশ। উচাটন মন আর ঘরে থাকে না। বেরিয়ে পড়ে প্রিয়জনের হাত ধরে উৎসব বিহারে। কারণ বসন্ত এসে গেছে ভালোবাসার পসরা নিয়ে। 

এক সময় পাশাপাশি দুই দিন পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপিত হতো। তবে পঞ্জিকা সংশোধনে কয়েক বছর ধরে প্রেম ও প্রকৃতির উৎসব দুটো একই দিন উদযাপিত হয়ে আসছে। এবার দিবস দুটি শুক্রবারে পড়ায় উৎসবপ্রিয় জাতির কাছে এ যেন মধুচন্দ্রিমা।

বসন্ত প্রেমের ঋতু। ফাল্গুনে শুরু হয় ভালোবাসার গুনগুনানি। শুধু প্রকৃতি নয়, মানব মনও রঙিন হয়ে ওঠে। খুলে যায় দখিনা দুয়ার। কী নেই বসন্তের! রং, রূপ,  রস ও লাবণ্য– সব রয়েছে। আছে মাতাল দখিনা সমীরণ। পাহাড়, বন, নগর, বন্দর– সব রঙিন হয়ে উঠবে বসন্তের আগমনে। রঙিন প্রজাপতির ডানায় প্রেমের বারতা। ডালে ডালে শিমুল, পলাশ আর কৃষ্ণচূড়াদের মিছিল। কবিগুরু ভাষায় ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।’ তারপরও হুট করে বিষণ্ন দুপুরে কোকিলের কুহু ডাকে মন কেমন করে ওঠে। যেন দূরের কোনো বেদনা মনে উঁকি দেয়। কবি নজরুলের কবিতার মতো ‘এলো মেলো দখিনা মলয় রে প্রলাপ বকিছে বনময় রে/ অকারণ মন মাঝে বিরহের বেণু বাজে/ জেগে ওঠে বেদনা ঘুমন্ত।’

প্রাচীনকাল থেকে বসন্ত উৎসব পালিত হয়ে আসছে। খ্রিষ্টের জন্মের বেশ কয়েকশ বছর আগে মানুষ বসন্ত উৎসব পালন করত। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০ অব্দে পাথরে খোদাই করা বসন্ত উৎসবের নমুনা পাওয়া গেছে। সব জাতির পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাতে এই উৎসবের বিবরণ পাওয়া যায়। বেদ, পুরাণেও এই উৎসবের উল্লেখ রয়েছে। ১৫৮৫ সালে সম্রাট আকবর ফসলি সনের প্রবর্তন করেন। একই সঙ্গে প্রতি বছর ১৪টি উৎসব পালনের রীতি প্রবর্তিত হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল বসন্ত উৎসব। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্ত উৎসব পালনের রীতি চলে আসছে। ১৪০১ বঙ্গাব্দ থেকে বাংলাদেশে ঘটা করে ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপনের রীতি চালু হয়। এখন বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে বসন্ত বরণ। পহেলা ফাল্গুন দেশজুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

গত শতকের নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে পশ্চিমের ভ্যালেনটাইন্স ডে দেশে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। ভালোবাসার যুগল কাব্যে ভরে ওঠে পথপ্রান্তর। যেন ‘মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে।’ শুধু কি যুগল ভালোবাসা? না। এখন ভালোবাসা দিবস হয়ে গেছে সর্বজনীন। আবালবৃদ্ধবণিতার প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে চারপাশ। পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে হওয়ায় উৎসব হয়ে উঠেছে আরও রঙিন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুরে বলতে হয়, ‘আজি পল্লবে পল্লবে বাজে রে– দূরে গগনে কাহার পথ চাহিয়া আজি ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।’
ভালোবাসার এই দিনে বাংলাদেশের রয়েছে দ্রোহের ইতিহাস। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি  স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছিলেন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ুব, কাঞ্চন, দিপালীরা। সেই আন্দোলনের পথ বেয়ে নব্বইয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল গণতন্ত্রের স্বাদ।

জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হতে যাচ্ছে বসন্ত ও ভালোবাসার উৎসব। রুক্ষ শীত শেষে বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে যেভাবে জেগে ‍ওঠে, রক্তস্নাত বিপ্লবের পর এবারের বসন্ত নতুন রূপে ধরা দিক জাতির কাছে। দেশ হয়ে উঠুক সাম্য ও ভালোবাসার, দায় ও দরদের। বসন্তের দোলা লাগুক সবার হৃদয়ে। ভালোবাসার ভ্রমর গান গেয়ে উঠুক প্রতিটি প্রাণে। জীবন উদ্ভাসিত হোক উৎসবে উচ্ছ্বাসে। ফের ফিরে যেতে হয় কবিগুরুর কাছে, ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/ তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/ আমার আপন হারা প্রাণ আমার বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ/ তোমার অশোকে কিংশুকে অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে…।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বসন ত উৎসব উৎসব প ল বসন ত র উদয প

এছাড়াও পড়ুন:

ডাইনির সাজে শাবনূর!

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে নিজের খবর জানান দেন তিনি। এবার সেই পর্দার প্রিয় নায়িকা হাজির হয়েছেন এক ভিন্ন সাজে—ডাইনির রূপে!

প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী হ্যালোইন উৎসব। পশ্চিমা বিশ্বে এটি এক জনপ্রিয় দিন, যেখানে মানুষ নানা ভুতুড়ে সাজে নিজেদের উপস্থাপন করে। যদিও অনেকেই মনে করেন এটি কেবল ভূতের সাজের উৎসব, আসলে মৃত আত্মাদের স্মরণেই হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এ দিনটি উদযাপিত হয়।

আরো পড়ুন:

পর্দায় ‘মহল্লা’র ভালো-মন্দ

বাবা হওয়ার কোনো বয়স আছে? সত্তরে কেলসির চমক

সেই উৎসবের আমেজে এবার শামিল হয়েছেন শাবনূরও। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ছবিতে দেখা গেছে, ছেলে আইজানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেজেছেন ভয়ংকর এক ডাইনির সাজে—চোখের কোণ বেয়ে নেমে আসছে লাল রক্তের রেখা, সঙ্গে এক ‘ভূতুড়ে’ চেহারার চরিত্র।

ছবির ক্যাপশনে শাবনূর লিখেছেন, “আমি সাধারণ মা নই, আমি একজন দুর্দান্ত মা—যিনি একজন ডাইনিও! হ্যালোইনের শুভেচ্ছা, বাচ্চারা!”

পোস্টের শেষে তিনি যোগ করেছেন, “এটা শুধু মজা করার জন্য।”

ভক্তরা কমেন্টে ভরিয়ে দিয়েছেন শুভেচ্ছা ও প্রশংসায়। কেউ লিখেছেন, “শাবনূর মানেই চমক,’ কেউ আবার জানিয়েছেন, ‘হ্যালোইনেও আপনি আমাদের শাবনূরই—ভালোবাসা রইল।”

ঢাকা/রাহাত/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়
  • টোকিওতে জমেছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
  • সন্ধ্যা নদীর দুকূলে উৎসবের ঢেউ, উজিরপুরে নৌকাবাইচে মাতলেন হাজারো মানুষ
  • রাঙামাটি রাজবন বিহারে দুদিনের কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু