বিয়ের বাড়িতে গান বাজানোর জেরে বাসর ঘর ভাঙচুর
Published: 23rd, February 2025 GMT
নাটোরে বিয়ে বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় বাসর ঘর থেকে বাইরে এনে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে ।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলার বাগাতিপাড়ার জয়ন্তীপুর গ্রামের মিন্টু আলী শাহের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
শুক্রবার সকালে মিন্টু আলী শাহের ছেলে আরাফাত শাহের (২১) সঙ্গে পাশ্ববর্তী লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া ছোটময়না গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ের বিয়ে হয়।
আরো পড়ুন:
কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: বিএনপি ও যুবদলের ৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘বোমা’ হামলায় বিএনপি নেতা আহত
এলাকাবাসী জানান, বিয়ে উপলক্ষে গত দুইদিন ধরে সাউন্ড বক্সে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে নাচানাচি করছিলেন আগত অতিথিরা। প্রথমদিন গ্রামের আব্দুল আওয়াল শাহ গিয়ে বরের বাবাকে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। এরপর বরের বাবা সাউন্ড কমিয়ে দেন। দ্বিতীয় দিন রাতে আবারো উচ্চ শব্দে গান বাজাতে শুরু করলে আব্দুল আওয়াল শাহ ও তার ছেলেসহ স্থানীয় তিনজন বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বরকে বাসর ঘর থেকে বের করে দিয়ে বাসর ঘর ভাঙচুর করে।
বরের বাবা মিন্টু আলী শাহ বলেন, “হঠাৎ করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাড়িতে ঢুকে বরকে বাসর ঘর থেকে টেনে বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। এরপর তারা ঘরে থাকা খাটসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আব্দুল আওয়াল শাহ। তিনি বলেন, “কয়েকদিন ধরে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে এলাকার কাউকে ঘুমাতে দিচ্ছিল না বিয়ে বাড়ির লোকজন। আমরা তাদের গান বাজাতে মানা করেছি।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেওয়া হবে।”
বাগাতিপাড়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, “এমন একটি ঘটনার কথা শুনেছি । থানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।