জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চাইলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মত অনুযায়ী আগে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। আগে জাতীয় নির্বাচন দিলে ক্ষমতায় যাওয়া দল স্বৈরাচারী হয়ে উঠবে—এমন ভাবলে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েও তা ঠেকানো যাবে না।

‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন গণতন্ত্রকে টেকসই করবে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। রাজধানীর উত্তরায় উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে নাগরিক ঐক্য, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা এই আলোচনা সভা ও ইফতারের আয়োজন করে।

এই আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে অন্তত দুই বছর তো লাগবে। এই সময়ে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, সেটা সামাল দিতে পারবেন? কত মানুষ মারা যাবে, বলতে পারেন? আবেগে অনেক কিছু বলা যায়; কিন্তু আবেগ দিয়ে রাষ্ট্র চলে না, রাজনীতি চলে না।’ তিনি আরও বলেন, গায়ের জোরে কেউ ক্ষমতায় যেতেও পারবে না, থাকতেও পারবে না। কেউ যদি মনে করে, নির্বাচন দিলে যারা ক্ষমতায় যাবে, তারা স্বৈরাচারী হয়ে উঠবে, নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে তো সেটা ঠেকানো যাবে না। সেটা ঠেকাতে হলে রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সেই লড়াই জারি রাখতে হবে।

মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে গভীর শোক এবং ধর্ষক–হত্যাকারীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করেন মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর লক্ষ্য ছিল নতুন বাংলাদেশের। যে নতুন বাংলাদেশ মানে, মাগুরার ওই শিশুটি বা অন্য শিশুরা নিরাপদ থাকবে, মানুষ না খেয়ে থাকবে না, বিনা চিকিৎসায় কেউ মারা যাবে না, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে।

আলোচনা সভায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। যদি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চান, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।’ তিনি বলেন, আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন মানে স্বৈরাচার হাসিনার ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন, পতিত আওয়ামী লীগের টাকার খেলা। এর মধ্য দিয়ে আবারও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সারা দেশ দাপিয়ে বেড়াবে।

আমজনতার দলের আহ্বায়ক মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী লড়াই হয়েছে হাসিনার পতনের পর একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য নয়। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে এমন কোনো দাবি নিয়ে হাজির হবেন না, যাতে দেশে আবারও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’

অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সংগঠক মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ডাকসুর সাবেক জিএস মোস্তাক আহমেদসহ গণতন্ত্র মঞ্চ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ