খুঁজতে গিয়ে দেখেন ছাগলটি অজগরের কবলে, উদ্ধারের পর সুন্দরবনে অবমুক্ত
Published: 22nd, March 2025 GMT
সুন্দরবন-সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার লোকালয় থেকে প্রায় ২০ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার সোনাতলা গ্রাম থেকে সাপটি উদ্ধার করে ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যেরা। পরে বন বিভাগকে নিয়ে অজগরটিকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া অজগরটির ওজন প্রায় ৫৫ কেজি। বড় আকারের সাপটি লোকালয়ে দেখা যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সিপিজি লিডার খলিলুর রহমান বলেন, ‘গতকাল দুপুরে ছাগল খুঁজতে গিয়ে একটি বাগানের ভেতর অজগর সাপটি দেখতে পান সোনাতলা গ্রামের মরিয়ম বেগম। ছাগলটিকে পেঁচিয়ে ধরেছিল সাপটি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ছাগলটিকে ছেড়ে দিয়ে পাশের ঝোপে আশ্রয় নেয় সাপটি। পরে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে অজগরটি উদ্ধার করা হয়।’
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, উদ্ধার করা অজগরটি বনরক্ষীদের সহায়তায় নিরাপদে অবমুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাপ দেখলে পিটিয়ে না মারারও অনুরোধ জানান তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন
এছাড়াও পড়ুন:
চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার
বাঘ পাচারকারী ও চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়াতে হবে। বাঘ সংরক্ষণের সুফল জনগণের সামনে দৃশ্যমান করতে হবে।
বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর বন ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সচিবালয় থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘‘বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণী নয়, এটি বাংলাদেশের গর্ব ও জাতিসত্তার প্রতীক। যেমন আমরা সুন্দরবন নিয়ে গর্ব করি, তেমনি গর্ব করি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েও। সাহস, ভালোবাসা ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে আমরা বাঘকে দেখি। ক্রিকেটারদের ‘টাইগার’ নামে ডাকাও সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ।’’
সাম্প্রতিক বাঘ শুমারির ফল তুলে ধরে উপদেষ্টা জানান, কিছু ইতিবাচক উদ্যোগের কারণে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে হরিণ শিকারে নিয়ন্ত্রণ, বারবার অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ এবং চোরা শিকার রোধে আরও কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘‘বাঘের মৃত্যু ও পাচারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ-বাঘ দ্বন্দ্বও বেড়েছে। এজন্য সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় সামাজিক সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’’
পাশাপাশি সুন্দরবনে অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘কারা চোরাকারবারি, আর কারা বিকল্প জীবিকার সুযোগ পেলে সেই পথ পরিহার করবে তাদের তালিকা তৈরি করে জানাতে হবে, যেন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারি।’’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায়, পরিবেশ সংরক্ষণে এবং বাঘকে টিকিয়ে রাখতে সম্মিলিতভাবে সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।’’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
অনুষ্ঠানে ‘সুন্দরবনে সংঘাতপ্রবণ বাঘ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ এবং ‘টাইগারস্ অব দ্য সুন্দরবনস’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পাশাপাশি, সুন্দরবনভিত্তিক পটের গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।
ঢাকা/এএএম//