বাগেরহাটের শরণখোলায় লোকালয়ে চলে আসা ২০ ফুট লম্বা বিশাল আকৃতির একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ। শুক্রবার  বিকেলে শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রাম থেকে কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি) ও ভিটিআরটি টিমের সদস্যরা সাপটি উদ্ধার করেন।

সিপিজি লিডার মো. খলিলুর রহমান জানান, গ্রামবাসী মরিয়ম বেগম দুপুরে তার হারিয়ে যাওয়া ছাগল খুঁজতে গিয়ে স্থানীয় মালেকের বাড়ির বাগানে অজগরটিকে দেখতে পান। সাপটি ছাগলটিকে পেঁচিয়ে ধরেছিল। তবে স্থানীয়দের উপস্থিতি টের পেয়ে অজগরটি ছাগলটিকে ছেড়ে পাশের ঝোপে আশ্রয় নেয়। পরে তল্লাশি চালিয়ে সিপিজি ও ভিটিআরটি সদস্যরা সাপটিকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধার করা অজগরটির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট এবং ওজন প্রায় ৫৫ কেজি। বিশাল আকৃতির সাপটি লোকালয়ে চলে আসায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশু ও গবাদিপশুর নিরাপত্তা নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা মো.

ফারুক হোসেন বলেন, উদ্ধার করা অজগরটি বনরক্ষীদের সহায়তায় নিরাপদে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবমুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের বন্য প্রাণী খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসে। তবে সাপ বা অন্য কোনো বন্য প্রাণী দেখলে আতঙ্কিত না হয়ে বন বিভাগকে জানানোর অনুরোধ করছি। সাপকে পিটিয়ে না মেরে আমাদের সহযোগিতা করুন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি এ ধরনের ঘটনা আবারও ঘটে, তাহলে দ্রুত বন বিভাগে খবর দিন। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় প্রায়ই বন্য প্রাণী লোকালয়ে প্রবেশ করে। তবে দ্রুত উদ্ধার ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসব প্রাণীকে নিরাপদে বনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন দরবন স ন দরবন

এছাড়াও পড়ুন:

চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার 

বাঘ পাচারকারী ও চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়াতে হবে। বাঘ সংরক্ষণের সুফল জনগণের সামনে দৃশ্যমান করতে হবে। 

বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর বন ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সচিবালয় থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, ‘‘বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণী নয়, এটি বাংলাদেশের গর্ব ও জাতিসত্তার প্রতীক। যেমন আমরা সুন্দরবন নিয়ে গর্ব করি, তেমনি গর্ব করি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েও। সাহস, ভালোবাসা ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে আমরা বাঘকে দেখি। ক্রিকেটারদের ‘টাইগার’ নামে ডাকাও সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ।’’

সাম্প্রতিক বাঘ শুমারির ফল তুলে ধরে উপদেষ্টা জানান, কিছু ইতিবাচক উদ্যোগের কারণে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে হরিণ শিকারে নিয়ন্ত্রণ, বারবার অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ এবং চোরা শিকার রোধে আরও কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘‘বাঘের মৃত্যু ও পাচারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ-বাঘ দ্বন্দ্বও বেড়েছে। এজন্য সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় সামাজিক সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’’

পাশাপাশি সুন্দরবনে অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘কারা চোরাকারবারি, আর কারা বিকল্প জীবিকার সুযোগ পেলে সেই পথ পরিহার করবে তাদের তালিকা তৈরি করে জানাতে হবে, যেন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারি।’’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায়, পরিবেশ সংরক্ষণে এবং বাঘকে টিকিয়ে রাখতে সম্মিলিতভাবে সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।’’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। 

অনুষ্ঠানে ‘সুন্দরবনে সংঘাতপ্রবণ বাঘ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ এবং ‘টাইগারস্ অব দ্য সুন্দরবনস’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পাশাপাশি, সুন্দরবনভিত্তিক পটের গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঘ রক্ষায় সুন্দরবনের চারপাশে হবে সুরক্ষাবলয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার