২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কয়েকজন তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি (সিইউআরএইচএস)। মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা ও স্নাতক গবেষণা সংস্কৃতির প্রসারে কাজ করে এই সংগঠন। প্রথম দিকে তাদের এই কার্যক্রম ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমাবদ্ধ। ক্লাবের সদস্যরা ফেসবুক গ্রুপে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক তথ্য দিতেন। পরে নিজেরাই তা শেয়ার করতেন। ২০২২ সালে ‘জামাল নজরুল ইসলাম ন্যাশনাল কনফারেন্স’ আয়োজনের মাধ্যমে চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি মূলধারার সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা সঠিক তথ্যের অভাব। এটি নিরসনে শুরু থেকেই কাজ করছি আমরা।’ সংগঠনটি বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা ও ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও শিক্ষাপদ্ধতি, বৃত্তির খবর, প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়। তাদের আরও একটি উদ্যোগ হলো ‘স্কলার্স রিসেপশন’। যেখানে উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ দেখায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্লাব০৯ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গবেষণা উৎসব থেকে শুরু করে টেডএক্স চিটাগং ইউনিভার্সিটি, বেস্ট রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড, স্কলারস রিসেপশন—নানা আয়োজনের সঙ্গেই রয়েছে সিইউআরএইচএস। এসব কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৩ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর কর্তৃক মিলেছে বিজ্ঞান সংগঠনের স্বীকৃতি।

বর্তমানে তাদের ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত আছেন ৯৮ হাজারের বেশি সদস্য। অনুসারী আছেন আরও ৪৮ হাজার, যাঁদের অধিকাংশই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির সভাপতি ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক কাবেরী দাশ বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রমগুলো প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থী ও আট শর বেশি গবেষকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্যসূত্র পেয়ে তাঁরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন, পিএইচডি করছেন। আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। এই বিষয়গুলোই আমাদের বড় প্রাপ্তি।’

আরও পড়ুনচট্টগ্রাম থেকে গিয়ে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহরের মেয়র হলেন তৈয়ব১২ অক্টোবর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট

এছাড়াও পড়ুন:

আট বছর পর ছাত্রদলের ‘ঢাউস’ কমিটি, পদ পেলেন ৪২০ জন

আট বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে পদ পেয়েছেন মোট ৪২০ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে শাখা ছাত্রদলের এত বড় কমিটি হয়নি। এ কারণে একে ‘ঢাউস’ কমিটি বলছেন শিক্ষার্থীরা। আবার এ কমিটির করার ক্ষেত্রে সংগঠনটির গঠনতন্ত্রও মানা হয়নি।

গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ছাত্রদলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে কমিটির এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন এ তালিকায় সই করেন। চাকসুতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয়ী আয়ুবুর রহমান এ কমিটিতেও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যর আংশিক কমিটি প্রকাশ হয়েছিল। তবে চাকসু নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে অন্য প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় একজনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্র। বাকি চার সদস্যর আংশিক কমিটিই এখন পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। সর্বশেষ সংগঠনটির শাখা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছিল ২০১৭ সালে। তখন সদস্য ছিল ২৪৩ জন। এরপর ২০২৩ সালে এ কমিটি বিলুপ্ত হয়।

শাখা ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র মতে কমিটির সদস্য থাকার কথা ৮১ জনের। তবে ঘোষিত কমিটির সংখ্যা গঠনতন্ত্রের পাঁচ গুণের বেশি। এতে ৫৫ জন সহসভাপতি, ৯২ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৬৩ জন সহসাধারণ সম্পাদক, ৬৪ জন সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও ৬২ জন সদস্য পদে রয়েছেন। ৪২০ সদস্যর এ কমিটিতে ছাত্রী রয়েছেন মাত্র ১১ জন। কিন্তু সংগঠনটিতে ছাত্রী থাকার কথা ছিল অন্তত ১০ শতাংশ। সে হিসাবে ৪২০ সদস্যর অন্তত ৪২ জন ছাত্রী পদে থাকার কথা।

গঠনতন্ত্র না মেনে ‘ঢাউস’ কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির শাখা সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহুদিন কমিটি না থাকায় সাংগঠনিকভাবে অনেককে মূল্যায়ন করতে হয়েছে, তাই সদস্যসংখ্যা এত বেশি। গত ১৫ বছর আমাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সংগঠনের নেতাদের কারাগারে দেওয়া হতো, এ কারণে আগে কমিটি গোছানোর সুযোগ হয়ে ওঠেনি।’

ছাত্রীর সংখ্যা কম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, নারী সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন। তবে নারীদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা কম। তবু যাঁরা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন, আমরা তাঁদের সবাইকে গ্রহণ করেছি।’

গঠনতন্ত্র না মেনে কমিটি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা সভাপতি মো. আলাউদ্দিন মহসিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।

কমিটিতে পদ পাওয়া চাকসুর এজিএস আয়ুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহুদিন ধরে কমিটি না থাকায় আমাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা ছিল। তবে চাকসুর পর নতুন কমিটি ঘোষণায় এখন সবার মধ্যে নতুন করে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। আমাদের কমিটি বিশাল হলেও আমরা বিশ্বাস করি, একসঙ্গে বসে শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনসিপির জাতীয় ছাত্রশক্তির কমিটি ঘোষণা, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে জাহিদ–বাকের
  • জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল
  • আট বছর পর ছাত্রদলের ‘ঢাউস’ কমিটি, পদ পেলেন ৪২০ জন