পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ল
Published: 27th, March 2025 GMT
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার। কমিশনগুলো স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী, স্থানীয় সরকার ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। নতুন সময় অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করার সময় পাবে এসব সংস্কার কমিশন।
আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়। এর মধ্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। আর স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটি সংস্কার কমিশন এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। মার্চ মাস পর্যন্ত এসব কমিশনের সময় রয়েছে। এখন তা আরও বাড়ল।
এর আগে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ কী
প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো যখন প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমে গেছে, জাতীয় পার্টি (জাপা) তখনো নিশ্চিত নয় যে তারা আদৌ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না। এ প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকার শেষ পর্যন্ত কী অবস্থান নেয়, সেটিও দলটির কাছে স্পষ্ট নয়। এর সঙ্গে রয়েছে জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে বিভক্ত জাতীয় পার্টির দুই অংশের পরস্পরবিরোধী তৎপরতা। এসব কারণে দলটির ভবিষ্যৎ কী—সে আলোচনাও সামনে এসেছে।
গত ১৪ মাসে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটাই কোণঠাসা। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের সভা-সমাবেশে পুলিশের বাধা, কার্যালয়ে হামলা এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকার মতো ঘটনাগুলো এতে বড় ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত করে নির্বাচনী প্রচারে নেমে গেছে।
তিন নির্বাচনের ‘দোসর’–বিতর্কবিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বা ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’ হিসেবে সমালোচিত। এ দায় তারা এড়াতে পারছে না। ফলে ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’, এই তকমা দলটির রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ সুযোগে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন ও গণ-অধিকার পরিষদ প্রকাশ্যেই চাচ্ছে, জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচন করার সুযোগ না পায়।
যদিও তিনটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় জাতীয় পাটিকে ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’ বলার বিষয়ে দলটির নেতাদের ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। তাঁদের দাবি, ভোটে গিয়ে জাতীয় পার্টি কোনো অন্যায় করেনি। তাঁরা সংসদের ভেতরে–বাইরে আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যায়-অপরাধের যথাযথ সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে জি এম কাদের ‘দোসর’ পরিচয়ের দায় নিতে শুরু থেকেই অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন।
এ ছাড়া আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনে নৈতিকভাবে না যাওয়া উচিত ছিল। তবে নির্বাচনে গিয়ে আমরা আইনগতভাবে কোনো অন্যায় করিনি। এ জন্য আমাদের স্বৈরাচারের দোসর বলা হচ্ছে। আমরা যদি দোসর হই, এর বিচারটা জনগণের হাতে দেওয়াই তো ভালো।’
নির্বাচন করতে প্রস্তুত দুই পক্ষইবিভক্ত জাতীয় পার্টির দুই অংশের উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া গেছে, সেটি হলো তাঁরা এখন পর্যন্ত মনে করতে পারছেন না যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে।
তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি অনুকূল বা প্রতিকূল যা-ই হোক, দলটির উভয় অংশই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এ ক্ষেত্রে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশটি এককভাবে আর আনিসুল ইসলামের অংশটি জোটগত ভোটে বেশি আগ্রহী।
এ বিষয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কিছু সমমনা দলের সঙ্গে কথা বলছি। এটা এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো কিছু হয়নি। দেখা যাক, কী হয়।’
তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির জন্য যে পরিবেশ-পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ কতটা পাবে, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যে বেশ সংশয় আছে।
এ বিষয়ে জি এম কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমাদের হয় নির্বাচন করতে হবে, না হয় ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে। আমরা এককভাবে নির্বাচন করার চেষ্টা করব। কারও সঙ্গে মৌখিক সমঝোতাও করতে পারি।’
জানা গেছে, পরিস্থিতি নজরে রেখে জাতীয় পার্টির দুই পক্ষই ভোটে থাকার জুতসই উপায় খুঁজছে। নেতাদের ধারণা, জোটের মাধ্যমে ভোটে গেলে তাঁদের আসন-সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। তবে এসব সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা স্থিতিশীল হয়, তার ওপর।
প্রতীক নিয়ে সংকটজাতীয় পার্টি লোগো