পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ল
Published: 27th, March 2025 GMT
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার। কমিশনগুলো স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী, স্থানীয় সরকার ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। নতুন সময় অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করার সময় পাবে এসব সংস্কার কমিশন।
আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়। এর মধ্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। আর স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটি সংস্কার কমিশন এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। মার্চ মাস পর্যন্ত এসব কমিশনের সময় রয়েছে। এখন তা আরও বাড়ল।
এর আগে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বেলে ঢাকায় নেমে দুপুরে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং খালেদা জিয়াকে দেখেন। এরপর তিনি খালেদা জিয়ার সর্বশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদনগুলোও দেখেন।
তবে এই চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। গত রাতে চীন থেকে এসেছেন আরও চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁরা রাতেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্ত হন বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাঁকে নিয়ে দেশের মানুষ উদ্বেগে রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
বিএনপির মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, সর্বশেষ গত রাতে আসা চীনের চারজন চিকিৎসক হলেন কাই জিয়ানফাং, ইউয়ান জিন, মিজ ঝাং ইউহুই ও মিজ মেং হং। তাঁরা রাত ১০টা ১০ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছালে বিএনপির মহাসচিব স্বাগত জানান।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সেটা কিছুটা উন্নতির দিকে। হৃদ্যন্ত্রে জটিলতা রয়েছে। বাকি সমস্যাগুলো অনেকটাই অপরিবর্তিত।
হাসপাতালের প্রধান ফটক কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতাল এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি রয়েছে। হাসপাতালের নিকটবর্তী দুটি মাঠে আজ সেনা ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের পরীক্ষামূলক অবতরণ ও উড্ডয়নের কথা রয়েছে। এ নিয়ে অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি না ছড়াতে সরকারের দিক থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গতকালও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা হাসপাতালে গিয়ে বিএনপির নেত্রীর খোঁজখবর নিয়েছেন। সবার মুখে প্রশ্ন, খালেদা জিয়ার অবস্থা কোন পর্যায়ে, তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাকে দেখতে দেশে আসছেন কি না ইত্যাদি।
তবে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া যাবে কি না, সে বিষয়েও বিদেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা মতামত দেবেন। এই মতামতের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে এবং পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়ে প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়। গত রোববার ভোরের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টাপ্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
হাসপাতালে পৌঁছালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান এবং ছোট ভাই শামীম এসকান্দার প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টা প্রায় আধা ঘণ্টা হাসপাতালে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি বেগম জিয়ার পরিবার ও দলের নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তাঁর চিকিৎসক দল প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করে। তাঁরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই ও জনস হপকিনস হাসপাতাল এবং যুক্তরাজ্য ও চীনসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধান ও সহায়তায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে তিনি দেশবাসীর কাছে বেগম জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানান।
হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও ছিলেন।
আরও যাঁরা গেলেনএর আগে গতকাল দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ও বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম হাসপাতালে যান। তাঁরা খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
পরে ফয়জুল করীম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা দায়িত্বশীল আছেন, তাঁদের থেকে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। আগের মতোই এখন পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত খুব পরিবর্তন হয়েছে—এ রকম তাঁরা আমাকে খবর দিতে পারেন নাই।’