পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার। কমিশনগুলো স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী, স্থানীয় সরকার ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। নতুন সময় অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করার সময় পাবে এসব সংস্কার কমিশন।

আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়। এর মধ্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। আর স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটি সংস্কার কমিশন এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। মার্চ মাস পর্যন্ত এসব কমিশনের সময় রয়েছে। এখন তা আরও বাড়ল।

এর আগে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আখবারুন নিসা’: আরবি সাহিত্যে নারীর হারানো ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন

আরব-ইসলামি ঐতিহ্য এক বিশাল ভাণ্ডার। এখানে জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য আর ইতিহাসের অগণিত পাণ্ডুলিপি ধুলোয় ঢাকা পড়ে আছে। যেসব গ্রন্থ প্রায় হারিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তার অন্যতম একটি হলো আমির উসামা ইবনে মুনকিজ আল-কিনানি আশ-শাইজারি (মৃ. ৫৮৪ হি.) রচিত আখবারুন নিসা (নারীর কথকতা) নামের বিরল গ্রন্থটি। এই বইটি কেবল একটি প্রকাশনা নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক জগতে একটি বড় ঘটনা।

ইরাকি গবেষক ড. রশিদ আল-খাইয়ুন এই দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি সমকালীন যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্য-সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। বইটি প্রকাশ করেছে সৌদি আরবের কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, তাদের বিখ্যাত ‘তাহকিকুত তুরাস’ সিরিজের ৫২তম খণ্ড হিসেবে।

মাঝারি আকারের প্রায় সাতশো পৃষ্ঠার এই সংস্করণে রয়েছে বিস্তারিত টীকা-ভাষ্য, সূচিপত্র এবং একটি বিশাল ভূমিকা, যা গ্রন্থের মূল্য ও গুরুত্বকে নতুন করে তুলে ধরেছে।

উসামার পদ্ধতি একেবারেই ব্যতিক্রমী। প্রতিটি অধ্যায় শুরু হয় কোরআনের একটি আয়াত দিয়ে, তারপর দু-তিন বাক্যের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা, তারপর সংশ্লিষ্ট আলোচনা ও কবিতা।হারানো ঐতিহ্যের পুনরাবিষ্কার

এই প্রকাশনার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো, গ্রন্থটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রায় অজ্ঞাত বা অর্ধ-অজ্ঞাত ছিল। পাণ্ডুলিপির শুরু ও কিছু অধ্যায় হারিয়ে যাওয়ায় পুরোনো ও নতুন কোনো গ্রন্থ-তালিকায় এর উল্লেখ মেলা ভার।

ড. খাইয়ুন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভাষাতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও সাহিত্যিক প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণ করেছেন যে গ্রন্থটির রচয়িতা স্বয়ং আমির উসামা ইবনে মুনকিজ—যাঁকে ইমাম জাহাবি ‘ইসলামের বীর যোদ্ধা ও শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম’ বলে অভিহিত করেছেন। (জাহাবি, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১২/৫৬৭-৫৭৩, দারুল কুতুবিল আরাবি, বৈরুত, ১৯৮৫)

পাণ্ডুলিপিটির খোঁজের গল্প যেন কোনো রোমাঞ্চকর উপন্যাস। বড় বড় লাইব্রেরি—জাহিরিয়া, আজহারিয়া, খেদিভিয়া, বার্লিন, লাইডেন, প্যারিস—কোথাও এর নামগন্ধ ছিল না। অবশেষে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান, এক ব্যক্তিগত সংগ্রহে মিলল একমাত্র পরিচিত পাণ্ডুলিপি। সেটি এখন কিং ফয়সাল সেন্টারে সংরক্ষিত রয়েছে।

পাণ্ডুলিপিটি তুলনামূলকভাবে পরবর্তীকালের (সম্ভবত দশম-একাদশ হিজরি শতাব্দী), কিন্তু ভাষা, শৈলী, ঘটনা ও নামের বর্ণনা ষষ্ঠ হিজরি শতাব্দীর সঙ্গে পুরোপুরি মিল আছে। ড. খাইয়ুন কিতাবুল ইতিবার ও আল-লুমা ফি আখবারি বনি সুলাইম-এর মতো উসামার অন্যান্য গ্রন্থের সঙ্গে তুলনা করে এবং ইবনুল জাওযি, ইবনে আসাকিরের সমকালীন রচনার সঙ্গে মিলিয়ে নিশ্চিত করেছেন যে এটিই মূল আখবারুন নিসা গ্রন্থ।

আরও পড়ুনইসলামে ভাষা, সাহিত্য ও বই২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯আখবারুন নিসা বইয়ের মলাট

সম্পর্কিত নিবন্ধ