অভিষিক্ত অশ্বিনীর বলে, রায়ানের ব্যাটে মুম্বাইর প্রথম জয়
Published: 1st, April 2025 GMT
প্রথমে অভিষিক্ত অশ্বিনী কুমার বল হাতে ৩ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটিং লাইনআপে ধ্বস নামান। এরপর রায়ান রিকেলটন ৪টি চার ও ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৬২ রানের ইনিংস খেলে দলকে অনায়াস এক জয় উপহার দেন। যা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের প্রথম জয়, টানা দুই ম্যাচ হারের পর।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাতে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কলকাতা আগে ব্যাট করতে নেমে অশ্বিনীর বোলিং তোপে ১৬.
১১৭ রানের মামুলি টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫.২ ওভারেই ৪৬ রান তুলে ফেলে মুম্বাই। এই রানে রোহিত ফিরেন ১ ছক্কায় ১৩ রান করে। তবে আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রিকেলটন ছিলেন অটল। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে তিনি মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। যেখানে ছিল ৪টি চার ও ৪ ছক্কার মার। দলীয় ৯১ রানের মাথায় উইল জ্যাক ১ ছক্কায় ১৬ রান করে ফেরার পর সূর্যকুমার এসে ঝড় তোলেন। মাত্র ৯ বলে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় স্কাই অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংস খেলে ৪৩ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই দলকে জয়ের বন্দরে নোঙর করান। তার সঙ্গে ৪১ বলে ৪টি চার ও ৫ ছক্কায় ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন রিকেলটন।
বল হাতে কলকাতার আন্দ্রে রাসেল ২.৫ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন।
তার আগে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নামে কলকাতা। কিন্তু অভিষিক্ত পেসার অশ্বিনীর বোলিং তোপের মুখে পড়ে। অশ্বিনী ৩ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন। শুধু তাই নয়, অভিষেক ম্যাচে নিজের করা প্রথম বলেই তিনি আজিঙ্কা রাহানের উইকেট শিকার করেন। এরপর রিংকু সিং, মানিশ পান্ডে ও আন্দে রাসেলের উইকেট নেন তিনি।
দীপক চাহার ২ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, হার্দিক পান্ডিয়া, ভিনেশ পাথুর ও মিচেল স্যান্টনার।
ব্যাট হাতে কলকাতার অঙ্গকৃষ রখুবংশী ১৬ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন। রামানদীপ সিং ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান। এছাড়া মানিশ পান্ডে ১৯, রিংকু সিং ১৭ ও আজিঙ্কা রাহানে করেন ১১ রান।
অভিষেক ম্যাচেই দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচসেরা হন অশ্বিনী কুমার।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানি থেকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স উঠে এসেছে ষষ্ঠ স্থানে। আর কলকাতা নেমে গেছে তলানিতে।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট ন ন র ক লটন প রথম কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।