ডাক জীবন বীমা ঢাকা অঞ্চলে চাকরি, পদ ৩০, আবেদন শেষ মঙ্গলবার
Published: 6th, April 2025 GMT
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজারের কার্যালয়, ডাক জীবন বীমায় জনবল নিয়োগের আবেদন শেষ হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার। এই প্রতিষ্ঠানের পূর্বাঞ্চল, ঢাকার অধীন অফিসে ৯ ক্যাটাগরির পদে ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে ৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। আগ্রহীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
১.পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর (স্টেনোটাইপিস্ট)
পদসংখ্যা: ৩
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। সাঁটলিপিতে প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন গতি ইংরেজিতে ৮০ শব্দ ও বাংলায় ৬০ শব্দ এবং কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন গতি ইংরেজিতে ৩০ শব্দ ও বাংলায় ২৫ শব্দ থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১০,২০০–২৪,৬৮০ টাকা (গ্রেড–১৪)
২. পদের নাম: পিএলআই অ্যাকাউন্ট্যান্টপদসংখ্যা: ৪
যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি।
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা (গ্রেড-১৪)
৩. পদের নাম: পিএলআই অ্যাকাউন্ট্যান্ট (ফিল্ড)পদসংখ্যা: ৫
যোগ্যতা: এইচএসসি বা সমমান পাস।
বেতন স্কেল: ৯,৭০০-২৩,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৫)
৪. পদের নাম: ড্রাইভার (হালকা)পদসংখ্যা: ৩
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস। হালকা গাড়ি চালনার বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ হালকা গাড়ি চালনায় দুই বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)
৫. পদের নাম: কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (টাইপিস্ট)পদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: অন্যূন দ্বিতীয় বিভাগে বা সমমানের জিপিএতে এইচএসসি বা সমমান পাস। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন গতি ইংরেজিতে ২০ শব্দ ও বাংলায় ২০ শব্দ থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)
আরও পড়ুনশিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, সংশোধিত পদ ১৮৭১৩ মার্চ ২০২৫৬. পদের নাম: অ্যাকাউন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন পিএলআইপদসংখ্যা: ৭
যোগ্যতা: এইচএসসি বা সমমান পাস।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)
৭. পদের নাম: অফিস সহায়ক (এমএলএসএস)পদসংখ্যা: ৫
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)
৮. পদের নাম: পরিচ্ছন্নতা কর্মীপদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণি বা জেএসসি পাস।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)
৯. পদের নাম: নিরাপত্তা প্রহরীপদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)
আরও পড়ুনঢাকা ওয়াসায় চাকরি, বেতন ছাড়াও আছে সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা২২ মার্চ ২০২৫বয়স: সব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ১ মার্চ ২০২৫ তারিখে অবশ্যই সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবেদন যেভাবেআগ্রহী প্রার্থীদের এই ওয়েবসাইটে ফরম পূরণের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। নিয়োগসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এই লিংকে জানা যাবে। অনলাইনে আবেদন করতে কোনো সমস্যা হলে টেলিটক নম্বর থেকে ১২১ নম্বরে কল অথবা [email protected] বা [email protected] ঠিকানায় ই-মেইলে যোগাযোগ করা যাবে। এ ছাড়া টেলিটকের জবপোর্টালের ফেসবুক পেজে মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে। মেইল/মেসেজের সাবজেক্টে প্রতিষ্ঠান ও পদের নাম এবং ইউজার আইডি ও যোগাযোগের নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অধীনে বড় নিয়োগ, পদ ২৫৫২৩ মার্চ ২০২৫আবেদন ফিঅনলাইনে ফরম পূরণের অনধিক ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার ফি বাবদ ১ থেকে ৬ নম্বর পদের জন্য ১০০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ১২ টাকাসহ মোট ১১২ টাকা; ৭ থেকে ৯ নম্বর পদের জন্য ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা এবং সব গ্রেডে অনগ্রসর নাগরিকের (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ) জন্য ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
আবেদনের সময়সীমা: ৮ এপ্রিল ২০২৫, বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুনবিসিআইসিতে বড় নিয়োগ, পদ ৬৮৯২১ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমম ন প স ট ল টক র পদ র ন ম ৪৯০ ট ক পদস খ য সমম ন র য গ যত
এছাড়াও পড়ুন:
মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।
‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা
শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।
শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫ঐতিহাসিক পটভূমি
মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা
মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।
আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’
সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট
আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪