মানববন্ধন শেষে আসামির বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ
Published: 15th, April 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আসামি গ্রেপ্তার ও তার বিচার দাবি করে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে আসামির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের সোনালিয়া চকবাজার গ্রামে গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধরা। পরে সন্ধ্যার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার গিয়াস উদ্দিনের কলা বাগানে তারই চাচা আকবর আলীর ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হামলার শিকার হন আকবর আলী (৬৫)। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে গত শনিবার গিয়াস উদ্দিনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা হয় এবং ওই রাতে দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক রাশেদুজ্জামান।
তবে সোমবার বিকেলে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে উত্তেজিত জনতার একটি অংশ গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে হামলা হামলার পর অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিসংযোগের সময় ওই বাড়িতে নারী ও শিশুরা অবস্থান করছিলেন। তবে তারা নিরাপদে সরে যান বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে মির্জাপুর থানার ওসি বলেন, পুলিশ-সেনাবাহিনীর যৌথ অবস্থানে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে নিখোঁজ ৩ ছাত্রদল নেতার সন্ধানে মানববন্ধন
২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নিখোঁজ তিন ছাত্রদল নেতার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্রদল। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির নেতারাও সংহতি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জামান রানা ও আল-আমিনকে নিখোঁজের ১১ বছর পরও উদ্ধার করা যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম-খুন, পেটোয়া বাহিনীর হামলা ও নির্যাতন ছিল নিয়মিত ঘটনা।”
আরো পড়ুন:
ভাইকে তো পাব না, অন্তত বিচার যদি পাই: বিশ্বজিতের ভাই
বিশ্বজিৎ হত্যার দৃশ্যচিত্র আজো দেশের মানুষকে কাঁদায়: অধ্যাপক রইছ
বক্তারা সব নিখোঁজ নাগরিকের সন্ধান নিশ্চিত করা এবং বিচার বিভাগের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জবির ছাত্রদল সমর্থিত জাকসুর প্যানেলের জিএস প্রার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খাদিজাতুল কোবরা বলেন, “আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বহু মানুষ গুম হয়েছে। স্বাধীন দেশে ভাইদের খুঁজতে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়, এটাই আমাদের বেদনা। আমরা এমন দেশ চাই যেখানে কেউ গুম হবে না এবং সবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “ফ্যাসিস্ট আমলে বহু বিএনপি নেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। ছাত্রলীগের হাতে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমাদের অনেকে ফিরে এলেও জবির তিন ভাইকে এখনো পাইনি। দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা মৃত্যুকে উপেক্ষা করে আন্দোলন করছি। গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।”
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ্ উদ্দিন বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে গুম-খুন ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। জুলাই আন্দোলনের পরও অনেকের সন্ধান পাইনি। জবির তিন ছাত্রদল নেতা, আমার কাজিন ইলিয়াস আলীসহ বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। প্রতি ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করি, পরদিন ভুলে যাই-এটাই দুঃখজনক।”
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, “অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো জবিতে এখনো হয়নি। আমরা চাই, জবি থেকে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।”
ঢাকা/লিমন/জান্নাত