অটোরিকশায় শুইয়ে এক তরুণের পিঠের ওপর জুতা পায়ে চেপে ধরে আছেন আরেক তরুণ। সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন উচ্চ স্বরে গান বাজাচ্ছেন। পায়ের নিচে থাকা তরুণ চিৎকার করে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন। কিন্তু উন্মাদনায় মেতে থাকা তরুণেরা তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। এভাবেই শহরের প্রধান সড়কে প্রায় দুই কিলোমিটার ওই তরুণকে ঘোরানো হয়। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

আজ রোববার দুপুরে প্রকাশ্যে নাটোর শহরের কানাইখালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী তরুণের নাম ফয়সাল হোসেন (২৫)। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী। বাড়ি শহরের কানাইখালি মহল্লায়। নির্যাতন করা তরুণেরা ছাত্রদলের নেতা-কর্মী।

ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল হোসেন জানান, তিনি শহরের ফায়ার সার্ভিসের মোড় থেকে বাড়িতে ফেরার সময় পেছন থেকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রিমন। তাঁরা সবাই নবাব সিরাজ–উদ–দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এস এম জুবায়েরের অনুসারী। তাঁরা প্রথমে তাঁকে সড়ক বিভাজকের ওপর ফেলে মারধর করেন। পরে অটোরিকশায় তুলে নির্মম নির্যাতন করেন এবং শহর ঘুরে বেড়ান। তাঁকে মারার কারণ জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ‘তুই ছাত্রলীগ করিস কেন?’ পরে ‘আর ছাত্রলীগ করব না’—মর্মে মুচলেকা নিয়ে তাঁরা তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

ঘটনার পর ছাত্রদল নেতা নাঈম ও রিমন গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁদের নেতা নবাব সিরাজ–উদ–দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এস এম জুবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তাঁর অগোচরে ঘটেছে। যাঁরা ঘটিয়েছেন, তাঁরা সাধারণ ছাত্র। কাজটা ঠিক হয়নি। তবে ছাত্রলীগের ছেলেরা ক্ষমতায় থাকতে এর চেয়েও নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড করেছেন। তাঁরা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের রাস্তায় পৈশাচিক নির্যাতন করেছেন।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে দস্তগির ইসলাম নামের এক তরুণ নিজেকে ‘মুজিব সেনা’ পরিচয় দিয়ে লিখেছেন, ‘এই বর্বরতা কি ভুলে যাব আমরা? কখনই না। বহু গুণে ফিরিয়ে দেব। নাটোর পৌর ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী কদরের (ফয়সাল) ওপর এই বর্বরতার বিচার একদিন নাটোরের মাটিতেই করব ইনশা আল্লাহ।’

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা আগে কেউ তাঁকে বলেননি। কেউ অভিযোগও দেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র শহর র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

পুতিনের দুই দিনের ভারত সফর নিয়ে এখন পর্যন্ত যা যা জানা গেল

নয়াদিল্লিতে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে তাঁরা বাণিজ্য ও কৃষি উৎপাদন এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতে পৌঁছান ভ্লাদিমির পুতিন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান নরেন্দ্র মোদি। এ সময় তাঁরা দুজন করমর্দন ও উষ্ণ আলিঙ্গন করেন।

আজ শুক্রবার সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে ২১ বার তোপধ্বনি ও গার্ড অব অনার দেওয়ার মাধ্যমে পুতিনের প্রতি সম্মান জানানো হয়। পরে তিনি মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন।

দুই নেতা ইউক্রেন ও শান্তি নিয়ে কথা বলেছেন। নরেন্দ্র মোদি বলেন, যুদ্ধে ভারতের অবস্থান নিরপেক্ষ নয়; বরং ‘শান্তির পক্ষে’। এ সময় পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের’ জন্য কাজ করছে রাশিয়া।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই নেতা বিবৃতি পড়ে শোনান, যাতে বলা হয়েছে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রকল্প চালু রাখতে সম্মত হয়েছে ভারত ও রাশিয়া।

মহাত্মা গান্ধী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ