নেত্রকোণায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই জোরেশোরে চলছে। মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির ধাক্কা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত ভালো ফলন পেয়ে কৃষকদের মুখে ফিরেছে স্বস্তির হাসি। এখন ফসলের মাঠ ব্যস্ত চাষি ও শ্রমিকদের পদচারণায় মুখর।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সরজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পেকে ওঠা ধান বাতাসে দুলছে। কোথাও চলছে ধান কেটে আঁটি বাঁধার কাজ, কোথাও উঠানে মাড়াইয়ের ধুম। শ্রমিকদের পাশাপাশি কৃষকেরাও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাল মিলিয়ে করেছেন ধান কাটার কাজ।

আরো পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নজিরবিহীন বৃষ্টি, ৪৪৫৯ হেক্টর ফসল ক্ষতির মুখে

৮০টি সুপারির দাম ৬০০ টাকা

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, এ বছর জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে। ধান আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে। 

কৃষি বিভাগ জানায়, মাঠপর্যায়ের নিবিড় তদারকি ও কৃষকদের পরিশ্রমে এবার আমনের ভালো ফলন এসেছে। আগাম জাত চাষে কৃষকেরা বাড়তি একটি ফসল ঘরে তোলার সুযোগ পাচ্ছেন।

নেত্রকোণা সদর উপজেলার দুগিয়া গ্রামের কৃষক কাসেম আলী বলেন, “আমন ধান কাটা শুরু করছি। ৩০ কাঠা জমিতে মোটামুটি ভালোই ফসল হইছে। এখন দেখি বাজারে কেমন দাম পাই। ভালো দাম পাইলে খুশি।”

একই উপজেলার পাচকাহনিয়া গ্রামের কৃষক শামসুদ্দিন বলেন, “স্বল্পকালীন আগাম ধান লাগাইছিলাম। অহন কাটতাছি। আগাম ধান লাগাইয়া আমরার লাভের মধ্যে লাভ একটা, ফসল বাড়তি করতাছি। অহন এই ক্ষেতে সরিষা লাগাইয়াম। সরিষা কাইট্যা বোরো করবাম। সব মিলায়া লাভই।”

আটপাড়ার পাচগছ গ্রামের কৃষক তাহের মিয়া বলেন, “আগাম জাতের ধান কাটতাছি। ফলনও ভালো—কাঠাপ্রতি ৬ থেকে ৭ মণ। কাঁচা ধান ৯৫০ থেকে ১০৫০ টাকায় বেচতাছি। ধান কাটা শেষ হলে সরিষা, পরে বোরো আবাদ করমু।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.

আমিরুল ইসলাম বলেন, “আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। সার-বীজসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে কৃষকদের। ফলন ভালো, কৃষকেরাও খুশি।”

তিনি জানান, এখন পর্যন্ত জেলার ১৫ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। শ্রমিকের পাশাপাশি কৃষকেরা ব্যবহার করছেন কম্বাইন্ড হারভেস্টার। এ মৌসুমে জেলায় ৪ লাখ ২৫ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলাতেও ধান পাঠানো সম্ভব হবে।

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’

মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ