গাজীপুরের টঙ্গীতে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার (২০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার রেল কলোনি বস্তি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম সিজন (২৫)। তিনি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার কান্দিপাড়া গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে। সিজন পরিবার নিয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার মরকুন পশ্চিমপাড়া রেল কলোনি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিজন একটি পুরাতন মালামাল কেনাবেচার দোকানে কাজ করতেন। রবিবার রাতে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন তিনি। এসময় দুই যুবক চায়ের দোকানে এসে সিজনকে ডেকে বাইরে নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

আরো পড়ুন:

মামা-মামি ও বোনকে হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড

রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

সেখানে সিজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা তাকে রাজধানীর উত্তরা এলাকার আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে গেলে চিকিৎসক সিজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

ঢাকা/রেজাউল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি: মাদারীপুরের ২ যুবক নিখোঁজ, পরিবারে মাতম

লিবিয়া থেকে স্বপ্নের ইউরোপে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে মাদারীপুরের রাজৈর ও শিবচরের দুই যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে দালালচক্রের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন নৌকাডুবির খবর। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দুই যুবকের পরিবারে চলছে মাতম। এক মাস ধরে এই তাদের সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগ ছিল না। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম পশ্চিম তেলিকান্দির ছামির শেখ (২০) নিখোঁজদের একজন। গত ১৫ নভেম্বর লিবিয়া উপকূলে ঘটে যাওয়া নৌকাডুবির পর থেকে তার কোনো সন্ধান নেই। একই গ্রুপে থাকা লিবিয়া থেকে ফিরে আসা জামাল সর্দার জানান, সাগর পাড়ি দেওয়ার সময় ছামির নিখোঁজ হন।

আরো পড়ুন:

লিবিয়ায় নৌকাডুবি: ৪ বাংলাদেশির মৃত্যু

লিবিয়া থেকে দেশে ফেরার অপেক্ষায় ২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি

পরিবার জানায়, গোপালগঞ্জের ছাগলছিড়া এলাকার দালাল ইলিয়াসের মাধ্যমে ছমিরকে ১৯ লাখ টাকায় ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয়। ১৬ লাখ টাকা অগ্রিম দেওয়ার পর ছামিরকে লিবিয়া পাঠানো হয়। 

নিখোঁজ ছমিরের মা সুফিয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “শেষবার কথা হলে ও বলেছিল, মা ৩০ ঘণ্টা যোগাযোগ করতে পারব না। দোয়া করবেন।” এরপর থেকে ফোন বন্ধ। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে ফেরত এনে দেন, না হয় ওর কাছে পৌঁছে দেন। আমার ছেলের কোনো খোঁজ নাই।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবচরের বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশাত মাতুব্বর নিখোঁজ হন অপর এক নৌকাডুবিতে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দালাল কুদ্দুস তার পরিবারকে জানান, ইতালি যাওয়ার পথে যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি ডুবে গেছে, বেশির ভাগই নিখোঁজ।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে নিশাতের বাড়িতে দেখা যায়, পরিবাররে সদস্যরা আহাজারি করছেন। ৬ মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে নির্বাক নিশাতের স্ত্রী মেহেনাজ। মা সাবিনা বেগম বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন।

নিশাতের স্ত্রী মেহেনাজ জানান, স্থানীয় দালল কুদ্দুসের মাধ্যমে ২২ লাখ টাকার চুক্তিতে গত অক্টোবর মাসের শুরুতে মিশর হয়ে লিবিয়া যান নিশাত। ১০ নভেম্বর থেকেই তার ফোন বন্ধ। এক মাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর বৃহস্পতিবার আসে নৌকাডুবির খবর।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল হক বলেন, “পরিবার যদি আইনগত সহায়তা চায়, প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে।”

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, “কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ