রাষ্ট্র পাপ করলে রক্ত দিয়ে পরিস্কার করতে হয়: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
Published: 22nd, April 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, “দাঁড়িপাল্লা ইনসাফের প্রতীক, ভারসাম্যের প্রতীক। রাষ্ট্র যখন গুনাহ বা পাপ করে, তখন রক্ত দিয়ে লড়াই করে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হয়। ইনসাফ যদি নিজের বিরুদ্ধেও যায়, তবুও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করো।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ‘জাস্টিস ফর জুলাই’ আয়োজিত ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “প্রত্যেক মানুষের অন্তরে ইনসাফের বীজ নিহিত। একজন সাধারণ মানুষের মাঝেও ন্যায়ের বোধ কাজ করে। যখন ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হয়, তখন চিন্তা ও লড়াইয়ের সুনামি সৃষ্টি হয়। এ কারণেই ২০২৪ সালের আন্দোলন হয়েছে।”
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী থেকে শুরু করে ১৯৭১-পরবর্তী সময়েও দেশে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং ইনসাফ হাইজ্যাক হয়েছে। শেখ মুজিব দেশকে জমিদারিতে পরিণত করে নাগরিকদের প্রজায় রূপান্তরিত করেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করে বারবার লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।”
বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভেঙে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, “শুধু ২০২৪ সালের আন্দোলনের বিচার নয়, অতীতের দশকের পর দশকের চলমান মামলাগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক-শ্রমিক, দিনমজুরের জমির মামলারও বিচার চাইতে হবে। তবেই প্রকৃত ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বিচার কাঠামো গড়ে তুলতে হবে এবং চাপিয়ে দেওয়া হেজেমনি ভাঙতে হবে।”
ফ্যাসিবাদের বিচার প্রসঙ্গে ফুয়াদ বলেন, “ঘুম থেকে উঠে শেখ হাসিনাকে দেখতে না পাওয়াই সবচেয়ে বড় শান্তি। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাস পার হলেও ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া একটি প্রপাগান্ডার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। বিষয়টি নিয়ে এখনই আলাপ শুরু করা প্রয়োজন।”
জবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড.
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ