পিএসসি সংস্কারের ৮ দফা দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের শাহবাগ ব্লকেডের পর আগামী ৮ মে তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। 

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নিয়ে এ ব্লকেড শুরু করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। এতে শাহবাগ মোড় দিয়ে চত্বরের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মধ্যস্থতায় পিএসসির সদস্য জহিরুল হক ভূইয়াসহ আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘ আলোচনার পরে ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয় এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়। 

পরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান আসিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৮দফা দাবির জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকে কমিটির প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। পিএসসির দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও গঠিত কমিটি আলোচনায় বসবেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে সড়কের চারদিকে অবস্থান নিয়ে তারা ‘এই মুহূর্তে দরকার, পিএসসি সংস্কার’ ‘জুলাইয়ে অঙ্গীকার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

তাদের আট দফা দাবি হলো– ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন আবার করা; আগে ৪৪ এর ভাইভা শেষ করে তারপর ৪৬ এর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া; কমিশনে বসিয়ে খাতা দেখানো; অতি দ্রুত কমিশনের বিজ্ঞ সদস্যদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ এ উন্নীত করা; ভাইবা শেষ হবার পর ও রেজাল্টের আগে ক্যাডার চয়েজ প্রত্যাহারের সুযোগ প্রদান; ৪৫-৪৭ বিসিএসের ক্ষেত্রে ভাইবার পূর্বে পুনরায় ক্যাডার চয়েজ পূরণের সুযোগ প্রদান; প্রিলির কাট অফ মার্ক এবং প্রিলি, লিখিত ও ভাইবার মার্ক প্রকাশ করা এবং লিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে রুটিন ঘোষণা করা; সুপারিশ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও যথাসম্ভব স্বচ্ছকরণ, ভেরিফিকেশনের হয়রানি লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গেজেট প্রণয়ন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষকরণ এবং ৪৪ এর ক্যাডার পদবৃদ্ধি ও নন ক্যাডার বিধি’২৩ সংস্কার। 

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শাহ আলম স্নেহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো.

আওরঙ্গজেব, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মো. সিরাজুস সালেহীন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী সাকির রাজু ভাস্কর্যে অনশন শুরু করেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব স এস র ল খ ত পর ক ষ ব স এস র প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে