সরকার প্রকৃতই বৈষম্যবিরোধী হলে মে মাসেই ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা উচিত: মুজাহিদুল ইসলাম
Published: 1st, May 2025 GMT
সরকার সত্যিকারের বৈষম্যবিরোধী হলে মে মাসের মধ্যে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী চেতনা নিয়ে দেশের মানুষ জীবন দিয়ে ও রক্ত ঝরিয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। এই শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ক্ষমতাসীন হওয়া বর্তমান সরকারকে শ্রমিক-মেহনতি মানুষের দাবির প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে কমরেড মণি সিংহ সড়কে শ্রমিক সমাবেশে অংশ নিয়ে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এসব কথা বলেছেন। ট্রাকের ওপর তৈরি করা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বক্তব্য দেন। মহান মে দিবস উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করেছিল গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (জিডব্লিউটিইউসি)।
সমাবেশে গার্মেন্ট টিইউসির উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক গুলি করে শ্রমিক হত্যার ঘটনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষ ও শ্রমিক শ্রেণির প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে দ্বিতীয় গণ-অভ্যুত্থান গড়ে তোলা হবে।
গার্মেন্ট টিইউসি নেতাসহ সাধারণ শ্রমিকদের নামে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে দায়ের করা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি বলে উল্লেখ করেন গার্মেন্ট টিইউসির সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী শ্রমিক-জনতার আশাবাদ ক্রমেই ক্ষোভে রূপান্তরিত হচ্ছে। অবিলম্বে বিদ্যমান মজুরিকাঠামো পর্যালোচনা করে পোশাকশ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে।
শ্রম সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করেছে, তা আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে সমাবেশে আশঙ্কা প্রকাশ করেন গার্মেন্ট টিইউসির সহসভাপতি জলি তালুকদার। তিনি বলেন, ‘শ্রম আইনের শ্রমিক স্বার্থবিরোধী সব ধারা বাতিল করার দাবি আজও উপেক্ষিত। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর শ্রমিক-জনতা যেভাবে প্রতারিত হয়েছে, একই অভিজ্ঞতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে যাতে না হয়, এ জন্য সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।’ অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা এবং শ্রমিক সংগঠনের বিরুদ্ধে সব আইনি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
জিডব্লিউটিইউসির সভাপতি মন্টু ঘোষ এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে অন্তত চারজন শ্রমিকের প্রাণের বিনিময়ে ১৮ দফা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু চুক্তি অনুসারে আজও পোশাকশ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আগের স্বৈরাচারী সরকারের পদ্ধতিতেই শ্রমিকদের নির্যাতন চালিয়ে দমন করা হচ্ছে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে গার্মেন্ট টিইউসির প্রতিষ্ঠাতা ও সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সহসভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন, সহসাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ বাপ্পী প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে লাল পতাকার একটি মিছিল পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, কদম ফোয়ারাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে মহান মে দিবসে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় এই সমাবেশ ও মিছিলের পাশাপাশি চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, আশুলিয়া, কাঁচপুরসহ ১৩টি পোশাকশিল্প এলাকায় জিডব্লিউটিইউসির উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ হয়েছে বলে সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র ম ন ট ট ইউস র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।