প্রাথমিকে বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 3rd, May 2025 GMT
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, প্রাথমিকে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে। বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি। উপদেষ্টা আজ শনিবার লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে লক্ষ্মীপুর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
একসময় বিদ্যালয়ের বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে হতো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। সেটি বাদ দিয়ে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। তাতে সব শিক্ষার্থীই বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারত। যদিও পিইসি পরীক্ষা নিয়ে ছিল সমালোচনা। কারণ এর ফলে কোচিং-প্রাইভেটের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। এই পরীক্ষার নামে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং এরপর শিক্ষাক্রমের রূপরেখা বিবেচনায় পিইসি পরীক্ষা আর হয়নি। তখন বৃত্তিও বন্ধ হয়।
কিন্তু কিন্তু ২০২২ সালে একেবারে শেষ বেলায় এসে আকস্মিকভাবে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও বিশেষজ্ঞরা সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। বৃত্তি পরীক্ষাও ওই বছর। কিন্তু এরপর ওই বৃত্তি পরীক্ষার ফল নিয়েও ব্যাপক ভুলভ্রান্তির ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলন করে বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণ দেখিয়ে ফল স্থগিত করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য সংশোধন করে ফল প্রকাশ করা হয়। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ২০২৩ সালেও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও শেষমেশ বৃত্তি পরীক্ষা থেকে সরে আসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন আবার বৃত্তি চালু পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, তাঁদের লক্ষ্য হলো ন্যূনতম সাক্ষরতা, শিশুরা মাতৃভাষায় সাবলীলভাবে বলতে পারবে, পড়তে পারবে, লিখতে পারবে। গাণিতিক বিষয়ে সাক্ষরতা অর্জন করবে। যদি শিশুরা সেগুলো পারে তাহলে বলবেন তাঁরা লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাথমিকে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে, বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি। মৌলিক শিক্ষার পাশাপাশি কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস যেমন-বিতর্ক প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা উৎসব, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫উপদেষ্টা বলেন তাঁরা যৌক্তিক দাবিকে স্বীকৃতি দেন, মন্ত্রণালয় কার্যকর করার চেষ্টা করে। শূন্যপদ পূরণে চেষ্টা করছেন। অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিকল্পনায় কিছু সমস্যা রয়েছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। চোখে পড়ার মতো।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকারের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ প্রমুখ।
এর আগে উপদেষ্টা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে 'জেলা প্রশাসন গ্রন্থাগার' পরিদর্শন করেন।
উপদেষ্টা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘আন্ত: প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার’ চূড়ান্ত পর্ব শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
আরও পড়ুনএবার আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে, ২০২৭ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের চিন্তা৩০ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র উপদ ষ ট পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়ায় চাকরিচ্যুতদের অবরোধ প্রত্যাহার, ৪ ঘণ্টা পর সচল হলো ২০ ব্যাংক
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ব্যাংক অবরোধ কর্মসূচি প্রায় চার ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। দেশের ৬টি বেসরকারি ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে উপজেলার প্রায় ২০টি ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে বেলা একটার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এরপর উপজেলায় সব ব্যাংকের লেনদেন ও সেবা চালু হয়েছে।
চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ব্যাংক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় পটিয়ায় সব ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ে লেনদেনসহ ব্যাংকিং সেবা বন্ধ হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা কোনো ব্যাংকের এটিএম বুথও গ্রাহকদের ব্যবহার করতে দেননি। চাকরিচ্যুত কর্মীরা বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর তাঁরা চাকরিচ্যুত হন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই প্রায় সাত হাজার কর্মীকে এসব ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর অধিকাংশই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তাই তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
আন্দোলন চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌর সদরের থানার মোড়ের একটি কার্যালয়ে আন্দোলনরত ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আসাদুজ্জামান, পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান ও পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান। বৈঠকের পর কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনচাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভে চট্টগ্রামের পটিয়ায় ২০ ব্যাংকের সেবা বন্ধ৩ ঘণ্টা আগেআন্দোলনকারীদের একজন শিবলু আলম। তিনি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চুয়াডাঙ্গা শাখার ক্যাশ অফিসার ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাঁদের দাবির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। এ কারণে তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন। একটার পর সব ব্যাংকের শাখায় লেনদেন শুরু হয়েছে।
পটিয়া থানার ওসি নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা বৈঠকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সবকিছু চলছে। জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিনও তাঁদের ব্যাংকে লেনদেন শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা ব্যাংকের প্রধান ফটক খুলে দেওয়ার পর তাঁরা কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। এরপর ব্যাংকের লেনদেন শুরু হয়েছে।