কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে দুই মাসেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ধরা পড়েনি অপহরণ মামলার কোনো আসামি। দীর্ঘ সময়েও অপহৃত ছাত্রীর সন্ধান না পাওয়ায় দিশাহারা পরিবার। অন্যদিকে আসামিরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। ৬ মার্চ পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মায়ের জিম্মায় দিলেও ৯ মার্চ থেকে আবার তার কোনো খোঁজ মিলছে না। তৌহিদুল ইসলাম (২২) নামের এক তরুণ এই অপহরণের সঙ্গে জড়িত বলে ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ।

প্রথমবার ওই ছাত্রী নিখোঁজের পর গত ৬ মার্চ অপহৃত স্কুলছাত্রীর বড় ভাই বাদী হয়ে ঈদগাঁও থানায় তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় তৌহিদুল ইসলাম, তাঁর বাবা নুরুল হক ও মা নার্গিস সুলতানাকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অপহৃত ছাত্রীর বয়স ১৭ বছর। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে তৌহিদুল পথ রোধ করে প্রায় সময় উত্ত্যক্ত করতেন। ঘটনাটি ওই তরুণের পরিবারকে একাধিকবার জানানো হয়। এরপর তৌহিদুল কয়েকজনের সহায়তায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করেন।

গত ৬ মার্চ ঈদগাঁও থানায় অপহরণ মামলা করা হলেও এ পর্যন্ত পুলিশ একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অপহৃত ছাত্রীকে একবার উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আবারও তাকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ অপহৃত ছাত্রীর ভাইয়ের। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, শুরু থেকে পুলিশ আসামির পক্ষ অবলম্বন করছে। মামলা নিতেও চায়নি। পরে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ঘটনার চার দিন পর ঈদগাঁও থানা-পুলিশ মামলা নিলেও আসামিদের ধরছে না। অপহৃত ছাত্রীকেও উদ্ধারে তেমন তৎপরতা দেখাচ্ছে না।

থানায় দায়ের করা মামলা তুলে না নিলে ছাত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিচ্ছেন আসামিপক্ষের লোকজন—এমন দাবি করে অপহৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। অপহৃত ছাত্রীর ভাই বলেন, উদ্ধার না হওয়ায় তাঁর বোনের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে। সে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আগামীবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দীনের ইন্ধনে তৌহিদুল তাঁর বোনকে অপহরণের সাহস পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষ তাঁর আত্মীয়। ঘটনার পর থেকে তিনি দুই পক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে মেয়েটিকে বাড়িতে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেন। একবার মেয়েটিকে পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর আবারও নিখোঁজ হয়। মেয়েটি এখন কোথায় আছে, তিনি জানেন না।

এ প্রসঙ্গে ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মছিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃত ভিকটিমকে ৬ মার্চ পুলিশ উদ্ধার করেছিল। ৭ মার্চ তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত ভিকটিমকে পরিবারের জিম্মায় দেন। ৯ মার্চ রাতে মেয়েটি আবার নিখোঁজ হয়। ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপহ ত ছ ত র র পর ব র র সদস র র সদস য র পর ব র ওই ছ ত র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পেলে রোববার দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী রোববার বা সোমবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরতে পারেন। তাঁকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে আনার চেষ্টা হচ্ছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া গেলে তিনি রোববার দেশে ফিরবেন। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে তিনি পরদিন সোমবার বাংলাদেশ বিমানে দেশে ফিরতে পারেন।

খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পেলে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) ৪ মে (রোববার) দেশে ফিরতে পারেন। তবে এখনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত না পেলে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে তিনি দেশে ফিরবেন।’

এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া না গেলে বাংলাদেশ সময় ৫ মে বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশে ফিরতে পারেন বলে জানান আব্দুস সাত্তার। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর দুই পুত্রবধূও দেশে ফিরতে পারেন।

প্রায় চার মাস আগে গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে রাজকীয় বহরের বিশেষ বিমান দিয়েছেন। ওই বিশেষ বিমানে (বিশেষ ধরনের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে তিনি লন্ডন যান।
সেখানে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে গত ২৫ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডনের বাসায় যান তিনি। এরপর থেকে সেখানেই তিনি ছিলেন। ছেলের বাসাতেই তাঁর চিকিৎসা চলে।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থরাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।

২০১৮ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে কয়েক দফা আবেদন করা হয়; কিন্তু তাতে সাড়া দেওয়া হয়নি।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দী হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাঁচ তরুণের সাফল্য
  • গাইবান্ধায় পল্লিচিকিৎসককে অপহরণের ভিডিও ভাইরাল
  • বিরতি দিয়ে বৃষ্টি পড়বে কয়েক দিন, এরপর মৃদু তাপপ্রবাহ
  • প্রাথমিকে বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
  • পিরোজপুরে একটি গ্রামের শতাধিক পরিবার আতঙ্কে
  • ‘অপহৃত’ যুবলীগ নেতাকে পাওয়া গেল থানায়, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
  • চকরিয়ায় ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
  • এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পেলে রোববার দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া
  • বাংলাদেশি চার জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি