গাজীপুরে ট্রাকচাপায় নারী শ্রমিকের মৃত্যু, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 6th, May 2025 GMT
গাজীপুরে মহাসড়ক অতিক্রম করার সময় দ্রুতগতির ট্রাকের চাপায় একজন নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুর মহানগরীর হারিকেন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে সহকর্মী অন্য শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
নিহত নারীর নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি, তবে তিনি হারিকেন এলাকায় ইন্টারলুপ বিডি কারখানার কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সকালে কাজে যাওয়ার সময় হারিকেন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই নারী মহাসড়ক অতিক্রম করছিলেন। এ সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক তাঁকে চাপা দেয়। এতে ওই নারী ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে আশপাশের কিছু শ্রমিক ও জনতা বিক্ষোভ করে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ আছে। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, ‘গার্মেন্টসের একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ করছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘টর্চার সেলে’ নির্যাতন চালানো ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে অব্যাহতি
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগে করা মামলায় ছাত্রদলের এক নেতা ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার পৃথক সময়ে বানিহালা ইউনিয়নের পৃথক এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতার নাম হিজবুল আলম ওরফে জিয়েস। তিনি বানিহালা ইউনিয়নের মাঝিয়ালি গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে ও একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। তবে তাঁকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা উত্তর ছাত্রদল। গতকাল রাতে এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রকাশিত হয়।
এর আগে গতকাল ভোরে হিজবুলের দুই সহযোগী রাফি (১৯) ও আবদুল্লাহকে (২০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে আজ হিজবুলকে আদালতে পাঠানোর কথা আছে।
মারপিট ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাটি করেন ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক মামুন সরকার। তিনি জানান, ৮ আগস্ট মাঝিয়ালি বাজারে এক দোকানদারের কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন হিজবুল। একপর্যায়ে ওই দোকানিকে মারধর করে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে দোকানটি খোলার ব্যবস্থা করে দেন মামুন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন (৯ আগস্ট) মামুনকে মারধর করেন হিজবুল। এই ঘটনায় গতকাল তারাকান্দা থানায় মামুন সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে হিজবুলসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৪–৫ জনকে আসামি করা হয়।
ওই মামলায় অভিযান চালিয়ে গতকাল ভোরে রাফি ও আবদুল্লাহ এবং রাত ৯টার দিকে হিজবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হিজবুলের একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের বিভিন্ন দেশি সামগ্রী ও নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ। মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা তারাকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন চন্দ্র পাল।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হিজবুলের কোনো তৎপরতা দেখা না গেলেও গত বছরের আগস্টের পর বানিহালা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। মাঝিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিজের একটি মাছের খামারে ‘টর্চার সেল’ তৈরি করেন। সেখানে দেশি অস্ত্র প্রদর্শন ও আটক ব্যক্তিদের তাঁর মারধরের ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওই আস্তানায় বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুঠোফোনে ভিডিও করে কিংবা নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখতেন হিজবুল। নির্যাতনের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে স্বীকারোক্তি নিতেন যে তাঁরা হিজবুলের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন তালুকদার আজ সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদলের ওই নেতার (হিজবুল) সম্পর্কে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। ওই অবস্থায় তাঁকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’