করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
Published: 17th, November 2025 GMT
করদাতা মারা গেলেও তাঁর পক্ষে কর দিতে হয়। মৃত করদাতার পক্ষে কর দেওয়ার কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। বাধ্যবাধকতা হলো মৃত করদাতার যদি এমন কোনো সম্পদ থাকে, যেমন বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে আয় হয়। কিন্তু ওই সম্পদ তাঁর (মৃত ব্যক্তি) নামেই আছে। তাহলে ওই মৃত করদাতার ওপর কর বসবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, কয়েক হাজার এমন করদাতা আছেন। চলতি মাসের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত আছে।
উদাহরণ
আবদুল জলিল একজন অবসরভোগী সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর পাওয়া টাকা ও জমানো টাকা দিয়ে রাজধানীর আশকোনা এলাকায় একটি তিনতলা বাড়ি করেছেন। নিজেই ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। কিছুদিন আগে বার্ধক্যজনিত রোগে তিনি মারা গেছেন। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী ও তাঁর তিন মেয়ে। দুই মেয়ে দেশের বাইরে থাকেন। ছোট মেয়ে ওই বাড়িতেই থাকেন।
ওই বাড়িতে ছয়টি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে একটিতে আবদুল জলিলের ছোট মেয়ে, তাঁর মা ও পরিবার নিয়ে বাস করেন। বাকি পাঁচটি ফ্ল্যাট থেকে প্রতি মাসে বেশ ভালো অঙ্কের টাকা বাড়িভাড়া পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগপর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে আবদুল জলিল প্রতিবছর রিটার্ন দিয়ে নিয়মিত কর দিয়ে আসছিলেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন নিয়মিত করদাতা ছিলেন। আবদুল জলিলের পক্ষে তাঁর সম্পদ থেকে আয়ের ওপর এখন উত্তরাধিকারীদের কর দিতে হবে।
কীভাবে দেবেন
এবার দেখা যাক, এনবিআর মৃত করদাতার সম্পদ থেকে আয়ের ওপর কীভাবে কর আদায় করবে। প্রথমেই মৃত করদাতার একজন উত্তরাধিকারীকে প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করবেন কর কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট উপ–কর কমিশনার নোটিশ করে তা ওই উত্তরাধিকারকে জানাবেন। পরে ওই উত্তরাধিকারী প্রতিবছর ওই মৃত করদাতার পক্ষে রিটার্ন জমা দিয়ে নির্ধারিত কর পরিশোধ করবেন।
কেন দেবেন
মৃত ব্যক্তির নামে থাকা সম্পদ বা ব্যবসা–বাণিজ্য থেকে শুধু করযোগ্য আয় থাকলেই রিটার্ন দিয়ে কর দিতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলে রিটার্ন দিতে হবে না। যত দিন পর্যন্ত ওই সম্পদ তাঁর উত্তরাধিকারীদের নামে ভাগ–বাঁটোয়ারা না হবে, তত দিন মনোনীত প্রতিনিধি ওই মৃত করদাতার পক্ষে কর দিয়ে যাবেন। কোনো কারণে কর না দিলে কিংবা আয়কর অধ্যাদেশ শর্তগুলো পরিপালন না করা হলে ওই মনোনীত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ই ম ত করদ ত র ল জল ল কর দ ত
এছাড়াও পড়ুন:
৯১ বছর বয়সেও দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করেন তিনি
যৌবনে কাজ করে অর্থ সঞ্চয় করবেন। শেষ বয়সে সেই অর্থে শান্তিতে দিন কাটাবেন। অধিকাংশ মানুষ জীবনকে এভাবে দেখতে ভালোবাসেন; কিন্তু তা সব সময় হয়ে ওঠে না। সিঙ্গাপুরের ৯১ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের জীবনেও সেই পরিকল্পিত জীবন জোটেনি। এই প্রবীণ বয়সেও তিনি দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে কাজ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার ব্লগার লেইংয়ের ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সিঙ্গাপুরের একটি শপিং মলের শৌচাগারে কাজ করছেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। ব্লগার জানান, ‘খুব বয়স্ক একজন মানুষকে এত খেটে কাজ করতে দেখে আমি তাঁর দুপুরের খাবারের জন্য কিছু টাকা দিলাম।’
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, লেইং ওই বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। কেমন আছেন, জানতে চাইলে বৃদ্ধ শান্ত স্বরে জানান, তিনি ভালো আছেন। তাঁর বয়স ৯১ বছর শুনে বিস্মিত হন লেইং। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘অসম্ভব! আপনি এখনো কাজ করছেন? ইউ আর দ্য ম্যান!’ এই বৃদ্ধের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
কাজের সময়সূচি জানতে চাইলে বৃদ্ধ জানান, ‘কাজ শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টায়। ১২ ঘণ্টার পুরোটা সময় তিনি দাঁড়িয়ে কাজ করেন।’ কীভাবে এত সুস্থ থাকেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সাধারণ খাবার খাই।’ ব্যায়াম করেন কি না, জানতে চাইলে সাদামাটাভাবে বলেন, ‘কখনো ব্যায়াম করিনি।’
ভিডিওটি দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন ভারতীয় অভিনেতা আর মাধবন। ভাইরাল ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘ভিডিওটি আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।’ নেট ব্যবহারকারীদের অনেকে বৃদ্ধের অধ্যবসায় এবং লেইংয়ের সহমর্মিতার প্রশংসা করছেন।
একজন মন্তব্য করেন, ‘এটা দেখে চোখে পানি এসে গেল। কী অসাধারণ মানুষ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এটাই তাঁর সুস্থ থাকার রহস্য—সক্রিয় থাকা, মানুষের সঙ্গে মেশা। সুখই আসল ব্যায়াম।’
সিঙ্গাপুরে শপিং মলের শৌচাগারের দেখভালের দায়িত্বে সাধারণত বয়স্ক কর্মীদের কাজ করতে দেখা যায়। তবে ৯১ বছর বয়সে দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজ করা রীতিমতো অবাক করার মতো। তিনি সিঙ্গাপুরের কোন শপিং মলে কাজ করেন বা তাঁর আয় কত ইত্যাদি জানা যায়নি।