ছবি: সংগৃহীত

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউরিন ইনফেকশন নেই, তবু কেন প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করে

ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা

শরীরে পানি কম থাকলে মূত্র স্বাভাবিকের তুলনায় ঘন হয়ে যায়। ঘন মূত্রে অ্যাসিডিটি বাড়ে, যা মূত্রনালির দেয়ালে জ্বালা সৃষ্টি করে। তখন প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ থেকে বাদামি হয়, দুর্গন্ধ হয় ও সামান্য পরিমাণে বারবার প্রস্রাবের চাপ হয়। তাই পানিশূন্যতা দেখা দিলে প্রস্রাবে জ্বালা হতে পারে, যা প্রচুর পানি খাওয়ার পর চলে যায়।

খাদ্য ও পানীয় থেকে প্রতিক্রিয়া

কিছু খাবার মূত্রনালিকে উত্তেজিত করে। যেমন—

অতিরিক্ত ঝাল ও ভাজাপোড়া খাবার।

কফি, চা, কোমল পানীয়।

অ্যালকোহল।

টমেটো ও লেবুজাতীয় খাবার।

এসব খাবার প্রস্রাবে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে জ্বালাপোড়া বাড়াতে পারে।

আরও পড়ুনপ্রস্রাব করতে গেলে আটকে যায়, কী করা১৮ ডিসেম্বর ২০২৪সাবান, সুগন্ধি বা রাসায়নিকের প্রতিক্রিয়া

বেশি সুগন্ধিযুক্ত সাবান, বডি ওয়াশ, টয়লেট টিস্যু, স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ফেমিনিন ওয়াশে থাকা রাসায়নিক উপাদান যোনিপথ বা মূত্রনালিতে জ্বালা, চুলকানি, লালচে ভাব সৃষ্টি করতে পারে।

যৌনমিলনের পর

যৌনমিলনের সময় ঘর্ষণ, লুব্রিকেশনের অভাব বা শুষ্কতার জন্য যোনিপথে মাইক্রো ইনজুরি হতে পারে। এসব মূত্রনালিতে অস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি করে। এটি আবার ‘হানিমুন সিস্টাইটিস’ নামে পরিচিত, যদিও সংক্রমণ না–ও থাকতে পারে।

ইস্ট ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস

শুধু মূত্রনালির সংক্রমণ নয়, যোনিপথের ছত্রাক সংক্রমণের কারণে প্রস্রাবের সময় জ্বালা করতে পারে। লক্ষণ হিসেবে সাদা দলা স্রাব, তীব্র চুলকানি, লালচে ভাব থাকে। অনেক সময় ইউরিন টেস্টে ইনফেকশন না ধরা পড়লেও যোনিপথের রস কালচার করে সংক্রমণ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনএক ঘণ্টা প্রস্রাব চেপে রাখার পরিণাম কী হতে পারে, জানেন?০৭ জুন ২০২৫হরমোনের পরিবর্তন

মেনোপজ, স্তন্যদানকাল বা হরমোনাল ভারসাম্যহীনতায় যোনিপথ শুষ্ক হয়ে যায়। এ অবস্থায় মূত্রনালি সংবেদনশীল হয়ে জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে।

স্ট্রেস ও উদ্বেগ

মানসিক চাপ শরীরের হরমোন এবং নার্ভাস সিস্টেমের ওপর প্রভাব ফেলে। অনেক ক্ষেত্রে স্ট্রেসের কারণে ব্লাডার অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে জ্বালা বা চুলকানির অনুভূতি বাড়ায়।

পাথর বা মূত্রনালির সমস্যা

অনেক সময় কিডনির পাথর বা মূত্রনালির ভেতরের ক্ষুদ্র প্রদাহও পোড়া অনুভূতি তৈরি করে। কিডনিতে পাথর হলে কোমরে ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত, তীব্র চাপ অনুভূত হয়।

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমাতে কী করবেন

প্রচুর পানি খান।

অতিরিক্ত ঝাল, কফি, চা, কোমল পানীয় পরিহার করুন।

দই, ফারমেন্টেড খাবার যোনিপথের স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

সুগন্ধিযুক্ত সাবান ও ন্যাপকিন এড়িয়ে চলুন।

ঢিলেঢালা ও সুতির অন্তর্বাস ব্যবহার করুন।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

জ্বালা ২-৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে।

প্রস্রাব কম হলে বা খুব ঘন হলে।

তলপেটে ব্যথা বা অস্বস্তি হলে।

যোনিপথে স্রাব বা চুলকানি হলে।

বারবার প্রস্রাবের চাপ থাকলে।

এসবের পাশাপাশি জ্বর থাকলে।

যেকোনো ধরনের প্রস্রাবজনিত জ্বালাপোড়াকে অবহেলা করা উচিত নয়। সংক্রমণ না থাকলেও এটি শরীরের কোনো অন্তর্নিহিত সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে, তাই সচেতন থাকুন, প্রয়োজন বুঝে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুনদিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক২৬ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ