ভারত-পাকিস্তান চলমান সংঘর্ষের মধ্যে উভয় দেশ অস্ত্রবিরতিতে রাজি হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই, তাদের কার্যকর মধ্যস্থতার জন্য।’

প্রতিবেশী ওই দুই দেশ কুটনীতিকভাবে মতপার্থক্য নিরসনের যে কোনো উদ্যোগকে বাংলাদেশ সমর্থন জানাবে বলেও এই বিবৃতিতে বলা হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এনা পরিবহনের মালিক এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এনা ট্রান্সপোর্টের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি চাঁদাবাজির মাধ্যমে ১০৭ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৭৪ টাকা অর্থ উপার্জন করে তা বিভিন্ন স্তরে লেনদেনের মাধ্যমে ঘুরিরে–ফিরিয়ে সাদাটাকা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।

আজ বুধবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল অপরাধ ইউনিট রমনা থানায় মামলাটি করে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও তাঁর পরিবারের ১৯৯টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা জমা হয়েছে। আর উত্তোলন হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৭ কোটি টাকা। চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত এসব অর্থ ‘স্ট্রাকচারিং’ বা ‘স্মার্ট লেয়ারিং’ কৌশল ব্যবহার করে নানা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সাদাটাকা দেখানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে মানি লন্ডারিং করা হয়েছে।

সিআইডি বলছে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বিভিন্ন ব্যাংক, ভূমি অফিস, সাবরেজিস্ট্রি অফিস, বাংলাদেশ মালিক পরিবহন সমিতি এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসহ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া রেকর্ডপত্রের ওপর ভিত্তি করে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে সিআইডি। অনুসন্ধান চলাকালে আদালতের আদেশে ধানমন্ডিতে ২টি ফ্ল্যাট এবং রূপগঞ্জের ২টি প্লট জব্দ করা হয়; যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া আদালতের আদেশে তাঁদের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়, যার মূল্য প্রায় ১১০ কোটি টাকা। গত ৩ জুলাই থেকে এই আদেশ কার্যকর করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ আশির দশকের পরে পরিবহন সেক্টরে যাত্রা শুরু করেন। পার্টনারশিপে একটি পুরোনো বাস কেনার মাধ্যমে তাঁর ব্যবসার সূচনা হলেও কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি প্রায় ২০টি বাসের মালিক হয়ে ওঠেন। অল্প সময়েই তিনি পরিবহন মালিকদের সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেন। বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দেন। প্রথমে বিএনপির রাজনীতি, পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদও লাভ করেন তিনি।

রাজনৈতিক পরিচয় খন্দকার এনায়েত উল্লাহকে বেপরোয়া করে তোলে উল্লেখ করে সিআইডি বলছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতন পর্যন্ত টানা ১৬ বছর তিনি ধারাবাহিকভাবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নতুন বাস নামালেই তাঁকে চাঁদা দিতে হতো জানিয়ে সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এনায়েত উল্লাহ ও তাঁর সহযোগীরা সিন্ডিকেট গড়ে বিভিন্ন অজুহাতে বাসমালিকদের কাছ থেকে প্রকাশ্য চাঁদা আদায় করতেন। দৈনিক চাঁদার পাশাপাশি মাসিক চাঁদাও নেওয়া হতো এবং নতুন বাস কোনো রুটে নামাতে হলে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা দিতে হতো। নতুন বাস কেনার সময় মালিকদের সেই বাসের একটি ভাগও এনায়েতকে দিতে বাধ্য করা হতো, না হলে বাসটি সড়কে চলতে পারত না। এর ফলে অনেক কোম্পানি বিক্রির সময় মালিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে চাঁদা পরিশোধ করত।

আরও পড়ুনখন্দকার এনায়েত উল্লাহর ১৮২টি গাড়ি জব্দের আদেশ০৪ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ