ভারত-পাকিস্তান চলমান সংঘর্ষের মধ্যে উভয় দেশ অস্ত্রবিরতিতে রাজি হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই, তাদের কার্যকর মধ্যস্থতার জন্য।’

প্রতিবেশী ওই দুই দেশ কুটনীতিকভাবে মতপার্থক্য নিরসনের যে কোনো উদ্যোগকে বাংলাদেশ সমর্থন জানাবে বলেও এই বিবৃতিতে বলা হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শীতে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে যেসব খাবার খেতে পারেন

শীতের ত্বক আদ্রতা হারাতে শুরু করে। এর কারণে সহজেই ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক, ফাটলযুক্ত রুক্ষ, পুষ্টিহীন ও নিস্তেজ। এই সময় পানীয়, ফল ও নিয়মিত খাবারে এমন কিছু যোগ করা জরুরি যেগুলো ত্বককে ভেতর থেকে সতেজ রাখতে পারে।

পানি
শুষ্ক ত্বকের জন্য প্রথম প্রয়োজন পানি। পানি আপনার কোষগুলিকে সক্রিয় ও কার্যক্ষম রাখে। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান না করলে চামড়া যেমন শুকনো ও রুক্ষ হয় তেমনি ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকদের কমপক্ষে ২-৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে শারীরিক অসুস্থ্যতা ও পরিশ্রম অনুযায়ী পানির চাহিদা কম বেশি হতে পারে। 

আরো পড়ুন:

শীতে চুল ‘ডিপ কন্ডিশনিং’ করার উপায়

মানুষ আর শিয়ালের বন্ধুত্ব

যেভাবে পান করবেন
শুধু পানি পান করতে ভাল না লাগলে ‘ডিটক্স ওয়াটার’ হিসেবে পান করতে পারেন। পানিতে কাটা ফল, মসলা, তুলসি পাতা, থাইপাতা দিয়ে ডিটক্স তৈরি করে নিতে পারেন।

শসা
শুকনো ত্বকের জন্য শসা একটি ভাল খাবার। একটি শশার মধ্যে ২৮৭ গ্রাম পানি থাকে। এছাড়া আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফলেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম, দস্তা, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবার আছে যা ত্বককে হাইড্রেট রাখার পাশাপাশি মাসেল, টেন্ডন এবং হাড়কে ও ভালো রাখে।

যেভাবে খাবেন
শসার সালাদ, শসার স্যান্ডউইচ, ডিটক্স পানি, শসার রস ও স্যূপ করে খেতে পারেন।

কলা
কলাতে থাকা ফাইবার আপনার ত্বকের কোষগুলিকে চাঙ্গা করে। এছাড়া কলা নিয়মিত গ্রহণে ত্বক গ্লো ও মসৃণতা দিতে পারে।

যেভাবে খাবেন
প্রতিদিন কমপক্ষে একটি কলা খেতে পারেন। তবে দুটির বেশি খাওয়া ঠিক নয়। খাবারে বৈচিত্র্য আনার জন্য খেতে পারেন কলার স্মুদি, কলার প্যানকেক ইত্যাদি। তবে যাদের কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিস সমস্যা আছে খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
 
সবুজ পাতাযুক্ত শাক- সবজি 
পালংশাক, ব্রকলি, বাধাকপি, শালগম মত সবজিগুলোতে পর্যাপÍ ভিটামিন এ বি সি, পটাশিয়াম, আয়রন, ফলিক এসিড, ফাইবার, দস্তা রয়েছে। এছাড়া এগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিইনফ্ল্যামেটরি রয়েছে যা ত্বককে শুকনো ও চুলকানি হতে রক্ষা করে।

যেভাবে খাবেন
তরকারি, স্মুদি, স্যূপ, সালাদ, স্যান্ডউইচ করে খেতে পারেন।
 
ডিম
শুকনো ত্বকের জন্য ডিমের কুসুম বেশি উপকারী। এটিতে ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিন রয়েছে যা ত্বকের কোষগুলির ঝিল্লী অখন্ডতা উন্নত করতে সহায়তা করে। 

যেভাবে খাবেন 
নাস্তায় ডিম সিদ্ধ বা পোচ, দুপুরে সালাদে দিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া সবজির মধ্যে মিক্সড করে ও স্যূপ করে যেভাবে ভালো লাগে খেতে পারে। তবে সারাদিনে একটি ডিম খাওয়া নিরাপদ।

বাদাম 
বিভিন্ন প্রকারের বাদাম যেমন কাজুবাদাম, আখরোট, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম খেতে পারেন। এসব বাদামে রয়েছে ওমেগা-থ্রি ওমেগা-সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই। এছাড়া ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, ফাইবার ইত্যাদি। এসব ত্বককে হাইড্রেট, নরম, কোমল ও উজ্জল রাখে। পাশাপাশি বাদামের এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ফ্রি-র‌্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। 

যেভাবে খাবেন 
বাদাম বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারেন। সালাদে, স্মুদিতে, দুধে মিশিয়ে খেতে পারেন। যারা গর্ভবতী, ওজন কমাতে চান প্রসূতি মা, বাড়ন্ত শিশু খেতে পারেন অনায়সে।

গাজর
গাজরে পাওয়া ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন করতে পারে। এছাড়া গাজরের ভিটামিন এ ত্বকের মরা কোষকে বিকশিত করে ত্বক সুস্থ রাখে। গাজরের হালুয়া, স্যুপ ও তরকারী করে খেতে পারেন। ভাল ফলাফলের জন্য রস করে খেতে হবে।

টমেটো
টমেটোতে উচ্চ মাত্রায় লাইকোপেন থাকে। এছাড়া টমেটোতে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিএজিংবৈশিষ্ট যুক্ত থাকায় ত্বককে সতেজ ও ডিহাইড্রেট রাখে। তরকারী, স্যূপ, চাটনি, সস করে খেতে পারেন।
 
জলপাই তেল
জলপাই তেলে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরী যা ত্বককে ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা করে ও ত্বককে হাইড্রেট রাখে। এটি সালাদে ও রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন।
 
মাছ
মাছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা ত্বকের প্রদাহ কমাতে, আদ্রতা আটকে রাখতে, ত্বককে ঝলমলে ও নরম রাখতে মাছ পুষ্টির একটির ভালো উৎস।ছোট মাছের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ সপ্তাহে ২দিন খেতে পারেন।

ডালিম
ডালিমের বীজে রয়েছে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের জ্বালা প্রদাহ, চুলকানি হৃাস করতে সহায়তা করে। এছাড়া ডালিমের রসে ভিটামিন এ, সি, এবং খনিজ সমৃদ্ধ থাকায় ত্বকের ফাটল নিরাময়ে সহায়তা করে। 

মধু
মধু প্রাকৃকিত অ্যান্টিসেপ্টিক যা ত্বকের রুক্ষভাব দূর করে ও ত্বককে করে মসৃণ ও উজ্জল। তবে মধু অবশ্যই ১-২ চা চামচের বেশি খাবেন না। যাদের ডায়াবেটিস ও ওজন বেশি তারা অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খাবেন লেবু, মধু, আদা দিয়ে চা খেতে পারেন।
 
তিসি
১ চা চামচ তিসি বীজ আপনার ত্বকের রুক্ষতা, কোমলতা ও হাইড্রেশন থেকে মুক্তি দিবে।

যেভাবে খাবেন 
তিসিবীজ সালাদে ছিটিয়ে, জুস, স্মুদিতে দিয়ে খেতে পারেন। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে অথবা হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন।

মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে পাওয়া অ্যান্টোসায়ানিন প্রকৃতির প্রদাহ বিরোধী যা ত্বককে করে প্রশমিত এবং ত্বককে টক্সিন থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম । এটি গ্রীল, বেকড ও তরকারী করে খেতে পারেন।

নারিকেল তেল 
নারিকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরীর বৈশিষ্ট যা ত্বককে করে ময়েশ্চারাইজ, নরম ও চকচকে। আপনারা জলপাই তেলের পরিবর্তে নারিকেল তেল সালাদে দিতে পারেন। অবশ্যই ঘরে বানানো নারিকেল তেল ব্যবহার করা উচিত। 

প্রয়োজনীয় আরও কিছু টিপস

১.তৈলাক্ত ভাজা খাবার ত্বকের জন্য ভালো নয়। তাই যতটা পারেন কম খাবেন।

২.ত্বক ভালো পেতে খাবারে চিনি, মিষ্টিজাতীয় খাবার ও ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন।

৩.নিজেকে ডিহাইড্রেট রাখুন। 

৪.পর্যাপ্ত ঘুমান (দিনে ৭-৮ঘন্টা )।

৫.বাইরের প্রসাধনীগুলো না কিনে ঘরে বানানো মাস্ক দিয়ে ত্বকের যত্ন নিন। 

৬.বাইরে বের হবার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। 

৭.মানসিক চাপ কমান। 

লেখক: পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার
বিরামপুর, দিনাজপুর।


লেখক: পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার, বিরামপুর, দিনাজপুর।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ