জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি সরকার মেনে নিয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কাকরাইল মসজিদের মোড়ে আন্দোলনস্থলে এসে অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ শিক্ষার্থীদের এ কথা বলেন।

এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সেগুলো উল্লেখ করেন তিনি। উপাচার্য রেজাউল করিম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবাসন–সংকটের কথা ভেবে খুব দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে সবকিছু করা হবে।

এরপর অনশনকারী এক শিক্ষার্থীকে পানি পান করিয়ে গণ-অনশন ভাঙান ইউজিসি চেয়ারম্যান। এ সময় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন উপস্থিত ছিলেন। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশন ভাঙলেও কিছু শিক্ষার্থী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিন দফা দাবি পূরণের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা না করা পর্যন্ত তাঁরা অনশন ভাঙবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা—এই তিন দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করেন জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে তাঁদের লংমার্চ কাকরাইলে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বাধা পার হয়ে শিক্ষার্থীরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক–শিক্ষার্থী আহত হন।

এরপর ওই দিন বেলা দুইটা থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যোগ দেন। এর পর থেকে টানা তিন দিন তাঁরা এই কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। এর মধ্যে আজ জুমার নামাজের পর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবেশ এবং বিকেল চারটা থেকে গণ–অনশন শুরু করেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।

ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উপাচার্যের বক্তব্যের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে শিক্ষার্থীদের বড় অংশ এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে আছেন। তাঁরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করলে তবেই তাঁরা আন্দোলন থেকে সরবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন জগন ন থ অনশন ভ সরক র ইউজ স

এছাড়াও পড়ুন:

লংমার্চে লাঠিপেটার পর বিক্ষোভ, রাতেও অবস্থানের ঘোষণা

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখী লংমার্চ পুলিশ লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর রাতেও বিক্ষোভে করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লংমার্চ ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক–শিক্ষার্থী আহত হন। পরে পুলিশের হামলার বিচার ও তিন দফা দাবিতে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। দাবি পূরণের স্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সেখানে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করার তিন দফা দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর লংমার্চ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণায় শেষ হলো আন্দোলন
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: আন্দোলনের মুখে সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নিল
  • আন্দোলন শেষ করলেন জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা
  • ৫০ ঘণ্টা ধরে অবস্থানের পর গণ-অনশনে জগন্নাথের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা
  • কাকরাইলে গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা, কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
  • গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা, কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
  • গণঅনশনে জবি শিক্ষার্থীরা, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
  • ঢাবির মুরুব্বিয়ানা বন্ধ করতে হবে: শরিফ ওসমান
  • লংমার্চে লাঠিপেটার পর বিক্ষোভ, রাতেও অবস্থানের ঘোষণা