ভোট বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা এই সরকারকে সমর্থন ও সাহস দিয়ে প্রত্যাশা করেছি- অতি দ্রুত মানুষের নির্বাচনের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু ১০ মাস অতিক্রম করছে; আমরা দেখছি জনগণের অধিকারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভোটের অধিকার। আর ভোট ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার মতো এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।

আজ বুধবার বিকেলে নয়া পল্টনে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমরা বারবার তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি কেন অতি দ্রুত নির্বাচন দরকার। কারণ, সরকার দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে। তা না হলে সংস্কার ও মামলার বিষয়টিকে নির্বাচনের সঙ্গে কেন যুক্ত করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী টোয়েন্টি-থার্টি ভিশন ঘোষণা করেছে এবং তারেক রহমান ১৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে তুলে ধরছেন। অর্থাৎ আমরা সংস্কার নিয়ে সবসময় চিন্তা করেছি। কিন্তু সকল সংস্কার এককথায় করা যাবে না, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

বিএনপি নেতা বলেন, আমরা চাই নির্বাচনের সংস্কার অতি দ্রুত শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তা না হলে তারুণ্যকে নিয়ে আমরা এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করব। এই ষড়যন্ত্র জনগণকে মোকাবেলা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমে ছাত্রদল-যুবদলকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। একইভাবে তার সুযোগ্য পুত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। আজকের এই দিনে আমরা তরুণ সমাজের কাছে আবেদন জানাবো জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ভূমিকা রাখার জন্য। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ যারা নির্ধারণ করবে তারাই আজকের তরুণ প্রজন্ম। আর এই বিষয়টি জানান দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তারেক রহমান।

দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমাদের কী ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে আপনারা তা জানেন। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাভোগ করতে হয়েছে, তারেক রহমানকেও বানোয়াট মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের একটি কর্মীও বাদ যায় নাই, যারা জেল খাটে নাই, মামলার শিকার হয় নাই। আর এই নির্যাতনের শেষ হয়েছে ছাত্র-যুবকদের আন্দোলনের মাধ্যমে, যোগ করেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে

সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পথনকশা ঘোষণা না হলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সম্পাদনে সচেষ্ট আছে। তারা ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চূড়ান্ত করেছে এবং ১০ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসন বণ্টনের কাজটি খুবই জরুরি। প্রতিটি নির্বাচনের আগে কমিশন আসনের বিষয়ে জনগণের মতামত নিয়ে থাকে; এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষায়িত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ইসি গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো ও বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছে। বর্তমানে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ও গাজীপুরে পাঁচটি আসন রয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী বাগেরহাটে সংসদীয় আসন একটি কমে হবে তিনটি। আর গাজীপুরে একটি বেড়ে হবে ছয়টি সংসদীয় আসন। তবে কমিশনের এই প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। সংসদীয় আসনগুলোর সীমানার খসড়া নিয়ে কোনো আপত্তি থাকলে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আপত্তি কিংবা দাবির শুনানি শেষে চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হবে।

জনশুমারি-২০২২ অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কারিগরি কমিটি শুমারিতে বেশ কিছু অসামঞ্জস্য পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকা রয়েছে। ওই তালিকার মোট ভোটারের ভিত্তিতেই ২০ হাজার ৫০০ কমবেশি গড় ভিত্তিতে গ্রেডিং তৈরি করে কোন জেলায় বেশি ভোটার, কোথায় কম, তা পর্যালোচনা করা হয়। এক থেকে তিন আসনবিশিষ্ট জেলাগুলোকে আসন বাড়ানো-কমানোর ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়, সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে এ পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো আবেদন কমিশন পেয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি আসনে ছোট-বড় সংশোধন, সমন্বয়ের প্রস্তাব কারিগরি কমিটি করেছে।

গত বুধবার নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোনো জেলার মোট ভোটার ও জনসংখ্যা বিশ্লেষণ করে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশের ৩৯ থেকে ৪২টি আসনের সীমানায় ছোটখাটো পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আড়াই শতাধিক আসনের সীমানা বহাল থাকছে। সে ক্ষেত্রে আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজটি চূড়ান্ত করতে ইসিকে খুব বেগ পেতে হবে না।

অন্যদিকে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রগুলোকেও প্রস্তুত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, কোনো কেন্দ্রের অবকাঠামো মেরামত বা সংস্কার করতে হলেও যেন তারা দ্রুততম সময়ে করে। সাধারণত সরকারি স্থাপনা মেরামতের কাজটি করে থাকে গণপূর্ত বিভাগ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংস্কারের কাজ করে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ।

এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন প্রবাসীরা যাতে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। প্রবাসীরা বহু বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন তাঁদের সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনগুলোতে নাম নিবন্ধনের অনুরোধ করেছে। দূরবর্তী স্থান থেকে সরাসরি নিবন্ধন করতে অনেকে আগ্রহী হবেন না। সে ক্ষেত্রে অনলাইনেও নিবন্ধনের সুযোগ রাখতে হবে। ইতিমধ্যে কিছু প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন। নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষিত হলে তাঁদের আগ্রহ বাড়বে আশা করা যায়।

নির্বাচন কমিশনের এসব উদ্যোগ ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। কিন্তু তাদের মূল যে দায়িত্ব জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, সেটা কতটা সুচারুভাবে করতে পারে, তার ওপরই সাফল্য–ব্যর্থতা নির্ভর করবে। ইসিকে মনে রাখতে হবে, নাগরিকেরা ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, যাঁরা বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি কাজ ও পদক্ষেপে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকবে, এটাই প্রত্যাশিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেভাবে সুষ্ঠু ভোটে বাধা হতে পারে
  • মিয়ানমারে ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা জান্তা সরকারের, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লুলার প্রতিবাদে অন্যরাও শামিল হোক
  • এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
  • বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব‍্যবস্থা না হলে গণতন্ত্র আবার হুমকিতে পড়বে: এবি পার্টি
  • মানুষ ঠিকমতো ইভিএম বোঝে না, পিআর বুঝবে কী করে: মির্জা ফখরুল