সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে জানিয়ে অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান এ আহ্বান জানান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের জয় বা পরাজয়ের কিছুই নেই। বরং গণতন্ত্রকামী জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করুন, করতে সাহায্য করুন।”

আরো পড়ুন:

নির্বাচনের ডেট দিন, না হলে আমরাই দিয়ে দেব: দুদু

গণতন্ত্রের যাত্রা পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: খালেদা জিয়া

তারেক রহমান বলেন, “বর্তমানে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মাসেও নির্বাচনের জন্য সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হওয়ায় আমরা যদি খেয়াল করি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটে নির্দিষ্ট মেয়াদের একটি স্থিতিশীল সরকার না থাকায় দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না। এখানে উপস্থিত প্রায় প্রত্যেকেই গণমাধ্যমের খবরে দেখেছি, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো দেশের শত শত শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরো অনেক কল-কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যা সম্ভাবনার কথা সরকারে কাছে তুলে ধরা বা বলার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না।”

তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারদের সঙ্গে স্বাভাবিক কারণেই জনগণের কোনো যোগযোগ নেই। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দুঃখ দুর্দশার সম্পর্কে উপদেষ্টারা ওয়াকিবহাল নন।  তারা অফিসে বসে ফাইলপত্র দেখে জনগণের সমস্যা হয়তো সমাধানের চেষ্টা কেউ কেউ করছেন।  জনগণের সমস্যা যদি ফাইল দেখে করা যেতই তাহলে তো নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল প্রয়োজন হতো না।”

তারের রহমান আরো বলেন, “দেশের মানুষ সরাসরি ভোট দিয়ে তাদের জবাবদিহিমূলক সরকার নির্বাচনে প্রস্তুত। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার মনে হয় জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে।”  

সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে লিখিত আকারে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “সংস্কারের ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দলের আপত্তি নেই। তবে সংস্কার নিয়ে অযথা সময়ক্ষেপণে অবশ্যই আপত্তি রয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দলের নয়, বিভিন্ন সংগঠনও তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। এই কারণেই আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষে করে, যদি তাদের ইনটেনশন সঠিক থাকে গণতন্ত্রের পক্ষে থেকে আমরা দাবি করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে। তবে আমি এটাও মনে করি, সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের একমত রয়েছে ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করুন। অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন।”

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্র চিন্তা থেকে প্রতি রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য একটা বার্তা আছে। কী সেই বার্তা রাষ্ট্র পরিচলানায় সফল হতে হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থকে সবার আগে বিবেচনায় আনতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষকের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে শহীদ জিয়ার প্রতিটি সৈনিক, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিটি কর্মীর আমার আহ্বান, আপনার জনগণের সঙ্গে থাকুন। জনগণকে অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।”

এ সময় তিনি সন্তান হিসেবে শহীদ জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

ঢাকা/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব জনগণ র স গণতন ত র সরক র র প রস ত

এছাড়াও পড়ুন:

জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের

জ্বালানি অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করার অঙ্গীকার করেছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনোনীত যুব সংসদের সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা জনগণের মৌলিক অধিকার। জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে—এটাই সংগ্রামের অঙ্গীকার। জ্বালানি সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

ক্যাব আয়োজিত প্রথম জ্বালানি যুব সংসদীয় অধিবেশনের শেষ দিনে আজ শনিবার এমন ঘোষণা পাঠ করে শপথ নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে শুক্রবার শুরু হওয়া দুই দিনের এ সংসদ শেষ হয় আজ।

শপথে আরও বলা হয়, জ্বালানি সংস্কার এই জ্বালানি অপরাধীদের বিচার দাবিকে জন–আন্দোলনের পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।

যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের এলাকায় লোডশেডিং একটা পরিচিত শব্দ। তারা শিক্ষিত না হলেও এটা জানে। একটা অসমতা রয়ে গেছে। আবার কৃষিতে বিদ‍্যুতের যে দাম, মাছ চাষ বা পোলট্রি খাতে সেই দামে দেওয়া হয় না। এটা করতে হলে ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে। অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি হয়েছে। এখন বিইআরসির অনুমোদন লাগবে।

যুব সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব‍্যবহার বাড়িয়ে টাকা লুটপাট করাই ছিল ফ‍্যাসিবাদের সময় মূল কাজ। গত সরকার নিজেদের পকেটে টাকা ঢোকাতে সেদিকে নজর দিয়েছে। পৃথিবীকে বাঁচাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতেই হবে। বিএনপির ৩১ দফায় স্পষ্ট করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে জ্বালানি খাতে দায়মুক্তির আইন করেছে দাবি করে ওই আইন বিলোপের দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, শুধু জ্বালানি নয়, সব খাতেই সমস্যা আছে। রাজনৈতিক নেতা যদি অসৎ হয়, অস্বাভাবিক উপায়ে নেতা হন, সবকিছু তাঁরা অস্বাভাবিক উপায়ে করেন।

যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে দুই দিনের সংসদের সারাংশ তুলে ধরা হয়।এতে বলা হয়, এতে ১০০ ‘সংসদ সদস‍্য’–এর অংশগ্রহণে ১৯টি প্রবন্ধ উপস্থাপনা ছিল দুই দিনের যুব সংসদে। এক হাজার নিবন্ধিত শিক্ষার্থী নিয়ে গত এক বছরে নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই সংসদ সদস্যদের বাছাই করা হয়।

দুই দিনের যুব সংসদে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মোট আটটি অধিবেশনে জ্বালানি খাতের আলাদা আলাদা বিষয়ের ওপর বেশ কিছু নিবন্ধ তুলে ধরা হয়। এতে বিদ্যুৎ খাতের ক‍্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ার সমালোচনা করা হয়। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানান অংশগ্রহণকারীরা।

শেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ক‍্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা হলে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত হবে।পরবর্তী যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এ আন্দোলনের দাবি মেনে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি
  • দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান