শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিককে তিরস্কার করল কিউবা
Published: 31st, May 2025 GMT
ক্যারিবিয়ান দেশ কিউবার সরকার দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রতিনিধি মাইক হ্যামারের ‘উস্কানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে।
শুক্রবার (৩০ মে) কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর সিনহুয়ার।
মন্ত্রণালয় হাভানায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হ্যামারের কাছে প্রতিবাদের একটি নোট পাঠিয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করলেন ট্রাম্প
বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিনিদের সতর্ক করল দূতাবাস
নোটে বলা হয়েছে, “কিউবার নাগরিকদের অত্যন্ত গুরুতর অপরাধমূলক কাজ করতে, সাংবিধানিক আদেশের উপর আক্রমণ করতে, অথবা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কাজ করতে বা একটি প্রতিকূল বিদেশি শক্তির স্বার্থ ও উদ্দেশ্যের সমর্থনে বিক্ষোভ করতে উৎসাহিত করে, কূটনীতিক উস্কানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে লিপ্ত হচ্ছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, “হ্যামার তার দেশের প্রতিনিধি হিসেবে যে দায়মুক্তি ভোগ করেন, তা কিউবার সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার পরিপন্থি কাজের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, যেখানে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এক্ষেত্রে, কিউবা।”
নোট অনুসারে, কূটনীতিক ভিয়েনা কনভেনশন এবং দুই সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন।
কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ক পরিচালক আলেজান্দ্রো গার্সিয়া দেল তোরো’র মাধ্যমে এই বার্তাটি দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, হ্যামার কিউবার বেশ কয়েকটি শহর পরিদর্শন করেছেন, যেখানে তিনি সরকারের বিরোধীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন যে, হোয়াইট হাউজ ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বীপটিতে যে অবরোধ আরোপ করেছে তা আরো কঠোর করার জন্য নতুন ব্যবস্থা প্রয়োগ করবে।
শুক্রবারের বিবৃতি কিউবা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান তিক্ত সম্পর্কের সর্বশেষ ইঙ্গিত, বিশেষ করে জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার পর থেকে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানুয়ারিতে তার মেয়াদের শেষের দিকে ‘সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক’ তালিকা থেকে কিউবাকে বাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করার দিনই ট্রাম্প কিউবাকে আবারো ‘কালো’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন।
কিউবার সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের নেতৃত্বকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ম র ক ন য ক তর ষ ট র র ক টন ত ক কর ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’