ঈদের আনন্দে যখন শহর ভরে ওঠে আলোকসজ্জা আর নাগরিক উদ্দীপনায়, তখন গ্রামীণ জনপদের মানুষও নিজের মতো করে খুঁজে নেয় উৎসবের স্বাদ। প্রকৃতি আর মানুষের মিলনমেলা নিয়ে প্রতিবছরের মতো এবারও বরেণ্য টিভি ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ নির্মাণ করেছেন ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’। তার এই আয়োজনের পুরোটা জুড়ে রয়েছে মাটির গন্ধ আর নানা পদের খেলা। তবে এবার জায়গাটা ছিল একটু আলাদা, একটু বেশি প্রাণবন্ত– জিন্দা পার্ক।
ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার জিন্দা গ্রাম যেন এক টুকরো সবুজ স্বর্গ। ইটপাথরের শহরের কাছেই এ আশ্চর্য এক গ্রামের গল্প যেন কল্পনাকেও হার মানায়। আর সেখানেই এবারে ধারণ হয়েছে ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল পরিবেশ, মানুষ আর আনন্দের এক চমৎকার সমাবেশ।
এবার খেলার তালিকাতেও এসেছে নতুনত্ব ও বৈচিত্র্য। খেলাগুলোর মধ্যে থাকছে– বৃক্ষমানবের দৌড়, তুলার খাঁচায় চাবি খোঁজা, শিশুদের প্রতিযোগিতামূলক বল খোঁজা, লুঙ্গিবাইচ, লেকের পাড়ে বউ সাজানো, তৈলাক্ত কলাগাছ ঝুলে লেক পার হওয়া। খেলা শুরু হয় ‘বৃক্ষমানবের দৌড়’ দিয়ে। গায়ে গাছের পাতা-মাটির রং মেখে ছুটে চলেছেন প্রতিযোগীরা। দর্শকদের হাসি আর হাততালিতে মুখর জিন্দা পার্ক। এরপর একে একে আসে তুলার খাঁচায় চাবি খোঁজা, শিশুদের বল খোঁজা, লুঙ্গিবাইচ, তৈলাক্ত কলাগাছ ঝুলে লেক পার হওয়া– সব খেলা যেন একেকটা হাসির ঢেউ তুলে দেয়।
এ আয়োজনে আরও দেখা যাবে শাইখ সিরাজ কখনও এক শিশুর পাশে বসে জানতে চাচ্ছেন তাঁর গ্রামের গল্প, কখনও একজন বৃদ্ধ কৃষকের কাছে শুনছেন ধানের সোনালি দিনের কথা। খেলার ফাঁকে ফাঁকে উঠে আসে জিন্দা গাঁয়ের ইতিহাস, কেমন করে তারা নিজেরাই গড়ে তুলেছে এই পার্ক, কেমন করে প্রকৃতিকে ছুঁয়ে থাকে তাদের প্রতিদিন। পুরো অনুষ্ঠান যেন শুধুই খেলা নয়– এ যেন গ্রামীণ জীবনের এক প্রাণবন্ত প্রতিচ্ছবি। যেখানে রয়েছে পরিশ্রম, রয়েছে সৌন্দর্যবোধ, আর রয়েছে এক গভীর সামাজিক বন্ধন। যে বন্ধন আজকের শহুরে জীবনে ক্রমেই ক্ষীণ। সন্ধ্যার আলো যখন ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে সবুজ গাছপালার গায়ে, তখন ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’ এর শেষ প্রতিযোগিতা চলছে। সবাই ক্লান্ত, কিন্তু হাসছে। কারণ এই আনন্দে ক্লান্তি বলে কিছু নেই।
কৃষকের ঈদ আনন্দ আয়োজনে মজার ও চমৎকার খেলায় অংশ নিয়েছেন স্থানীয় কৃষক, নারী ও শিশু এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ। শাইখ সিরাজ বলেন, ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’ শুধু একটি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান নয়, এটি এক প্রকার সামাজিক বার্তাবাহকও। যেখানে প্রতিবছর উঠে আসে গ্রামবাংলার মাটি, মানুষ ও সংস্কৃতির নতুন নতুন গল্প এবং কৃষকের রঙিন মুখচ্ছবি।’ জানা গেছে অনুষ্ঠানটি ঈদের পরদিন বেলা ৪টা ৩০ মিনিটে প্রচার হবে চ্যানেল আইতে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, এখন উজ্জীবিত হওয়ার সময়’
জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়। এ নিয়ে আলোচনার কমতি নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে ধবলধোলাই, তার আগে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতের কাছে হারের ধাক্কা এখনও ভোলেনি সমর্থকরা। এমন সময়ে নতুন দায়িত্ব পাওয়া বিসিবি পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানালেন, সমালোচনার চেয়ে এখন জরুরি খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করা।
সমকালের সঙ্গে আলাপে বুলবুল বলেন, ‘পাকিস্তান সফর শেষে জাতীয় দল দেশে ফিরলে আমরা প্রথমে পারফরম্যান্স মূল্যায়নের কাজ করব। খেলোয়াড়দের ফিডব্যাক দেব, আলোচনা করব কোথায় কোথায় উন্নতির জায়গা রয়েছে। যেহেতু আমরা তিন ফরম্যাটেই খেলি, সব জায়গাতেই উন্নতির চেষ্টা থাকবে।’
জাতীয় দলের পারফরম্যান্সের ওঠানামা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটি দলের পারফরম্যান্স কখনও উপরে ওঠে, কখনও নেমে যায়। আমাদের আগে জানতে হবে নিচে নামার কারণ কী। সেটা পরিষ্কারভাবে জানলে উন্নতির পথও সহজ হবে।’
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর ২০২৬ সালে ভারত-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে বিসিবির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? এমন প্রশ্নে বুলবুল জানালেন, ‘আমরা চেষ্টা করব অন্তত দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। তবে সেটা সম্ভব হবে দল গোছানো গেলে। আপনি দেখেছেন, আমরা আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র এমনকি পাকিস্তানের কাছেও হেরেছি। এমন অবস্থায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন সময় উজ্জীবিত হওয়ার।’
তবে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির ভূমিকায় থেকে সরাসরি টিম ম্যানেজমেন্টে হস্তক্ষেপ করতে চান না বলেও জানিয়েছেন বুলবুল। বলেন, ‘আমি সভাপতির জায়গা থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করব না। আমাদের ক্রিকেট অপারেশনসের প্রধান সহসভাপতি আছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম ভাই। তার মাধ্যমেই কাজ করতে চাই।’