দুই বিভাগে পুরস্কার পেল ‘সাইলেন্স ইন দ্য ক্যাওয়াস’
Published: 3rd, June 2025 GMT
বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবে দুটি বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ‘সাইলেন্স ইন দ্য ক্যাওয়াস’ সিনেমা। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভাগে সালমা সুলতানা আশা এবং শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে সাদেকুল ইসলাম জুবায়ের ও বিল্লাল হোসেন এই পুরস্কার পেয়েছেন।
দেশের আট বিভাগীয় শহরে চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। গত ২৭-৩১ মে পর্যন্ত এই উৎসব চলে। ৩১ মে উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
এ উৎসবে সর্বমোট ৩২২টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ২০৯টি ফিকশন, ৫১টি প্রামাণ্যচিত্র। সিলেকশন কমিটি যাচাই-বাছাই করে ৮৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর অনুমতি দেয়। এর মধ্যে ৬০টি ফিকশন ও ২৯টি প্রামাণ্যচিত্র।
আরো পড়ুন:
বিয়ের সহজ সমাধান দিলেন ইমন
মা হতে ভয় পান দর্শনা?
ময়লার স্তুপে বড় হওয়া সর্বহারা এক তরুণকে ঘিরে এগিয়েছে ‘সাইলেন্স ইন দ্য ক্যাওয়াস’। অনেকটা সংলাপহীন, নৈঃশব্দ্যের আবহে নির্মিত হয়েছে এটি। জুলাইয়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সমাজচ্যুত এক ছেলের জীবনের গল্প এটি। কখনো সে প্রেমে পড়ে ভিক্ষুক তরুণীর এবং প্রতারিত হয়।
সমাজে কেয়াস সৃষ্টি হলে বলির পাঠা (স্কেপগোট) হয় অসহায় মানুষেরা, তার আদর্শ প্রমাণ এই চলচ্চিত্র। নানা মেটাফোর ও সিম্বল দিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গেছেন নির্দেশক। সারা দেশে আয়োজিত এই উৎসবে একজন নারী নির্দেশকের চমৎকার এই নির্দেশনা ইঙ্গিত দেয় নতুন বাংলাদেশের।
পরিচালক সালমা সুলতানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেছেন। একইসঙ্গে বিচরণ করছেন সিনেমা ও থিয়েটারে। সিনেমাটোগ্রাফার সাদেকুল ইসলাম জুবায়েরও একই বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। বিল্লাল হোসেন পড়াশোনা করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ল অ্যান্ড ল্যান্ড বিভাগে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র প রস ক র
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।