হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিনেত্রী তানিন সুবহা। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির মুখপাত্র জয় চৌধুরী।
সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তানিন। প্রথমে তাকে রাজধানীর আফতাবনগরের একটি ক্লিনিকে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফেরেন। কিন্তু সন্ধ্যার কিছু সময় পর আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তখন তাৎক্ষণিকভাবে বনশ্রীর একটি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকেরা জানান, কয়েকবার বমির পর তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে। বর্তমানে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
তানিন সুবহার মা তাসলিমা গণমাধ্যমকে জানান, হঠাৎ করেই ওর বুকে ব্যথা শুরু হয়। এরপর ও বমি করতে থাকে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু অবস্থা ভালো ছিল না। এখন ও আইসিইউতে, সবাই দোয়া করবেন আমার মেয়ের জন্য।
অনেক সহকর্মী, নির্মাতা ও ভক্ত তার সুস্থতা কামনা করে সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দিচ্ছেন। নায়িকা শিরিন শিলা মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে সুবহার হাসপাতালের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেন, তানিন এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। লাইফ সাপোর্ট রুমে একমাত্র আমাকে দেখার অনুমতি দিয়েছে।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির মুখপাত্র জয় চৌধুরী বলেন, ‘সহকর্মী বন্ধু চলচ্চিত্র অভিনেত্রী তানিন সুবহা মাইল্ড স্টোক করে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে। সবাই দোয়া করবেন।’
২০১৫ সালে আজাদ কালাম পরিচালিত ‘জমজ’ নাটকের মাধ্যমে তানিন সুবহার মিডিয়ায় অভিষেক ঘটে, যেখানে তিনি মোশাররফ করিমের বিপরীতে অভিনয় করেন। এরপর ‘আলাল দুলাল’, ‘সেয়ানা জামাই’, ‘ম্যারেজ মিডিয়া ডটকম’সহ আরও বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেন তিনি।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অবাস্তব ভালোবাসা’, ‘মাটির পরী’, ‘স্বপ্নের সাথী’, ‘দেমাগ’ ও ‘তুই আমার’।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র র একট অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত