ভাঙ্গায় বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৫
Published: 4th, June 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা-ছেলে ৫ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের বাবলাতলা নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪ জন।
নিহতরা হলেন- মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মাদবরচর গ্রামের ইব্রাহীম সর্দার (৬০), ইব্রাহীমের ছেলে মনির সর্দার (৪০), তারা মিয়া শেখ (৫৫), ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ গ্রামের মিজানুর রহমান (৫০)। নিহত অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি।
নিহতদের স্বজন ও পুলিশ জানায়, সকালে গরু কিনতে শিবচর থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে অটোরিকশায় রওনা দেয় তারা। এসময় ভাঙ্গা বাবলাতলা নামক এলাকায় পৌঁছালে একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে অটোরিকশাটি। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বাবা-ছেলেসহ ৪ জন। খবর পেয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ও ফাঁয়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত ও গুরুতর আহতদের ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। এসময় হাসপাতালে আনার পর আরও একজন মারা যায়। আহত অপর ৪ জনকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত তারা মিয়ার ছেলে জাহিদুল ইসলাম জানায়, গরু কিনতে যাওয়ার সময় নিহতদের সঙ্গে প্রায় ১০ লাখ টাকা ছিল।
ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মিথুন সমকালকে জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৪ জন ও হাসপাতালে আনার পর আরও একজনসহ মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪ জন। তাদের ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত সড়ক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ
বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।
একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।
পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।
নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”
আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।