দিনে ৫ টাকা করে জমিয়ে দুস্থদের খাওয়ান তারা
Published: 12th, June 2025 GMT
বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের সামাজিক সংগঠন নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের ১২০ সদস্যের প্রত্যেকে প্রতিদিন জমা রাখেন ৫ টাকা। এভাবে মাসে ওঠে ১৮ হাজার টাকা। এই টাকায় তারা ছিন্নমূল শ্রমজীবী মানুষের জন্য প্রতি মাসে একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে বগুড়া শহরের খোকন পার্কে ৩৫০ ছিন্নমূল নারী-পুরুষ- শিশুকে খাওয়ানোর আয়োজন করে সংগঠনটি। ভালো খাবার পেয়ে সবার মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি।
সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে পরে কথা হয় প্রতিষ্ঠাতা ও সদস্যদের সঙ্গে। তারা জানান, সংগঠনের উদ্যোক্তা শহরের লতিফপুর এলাকার কয়েক শিক্ষার্থী। তারা টিফিনের টাকা জমিয়ে রোজায় দুস্থদের ইফতার করাতেন। ঈদে দিতেন সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন কাপড়। ২০২৩ সালের ৯ মার্চ এমন ১২ জন মিলে গড়ে তোলেন নবজাগরণ ফাউন্ডেশন। এর সদস্যরা প্রত্যেকে দৈনিক ৫ টাকা জমা দেন সংগঠনের ফান্ডে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা হলে ছিন্নমুল মানুষদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এখন এ উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন আশপাশের শিক্ষার্থীরাও। ১২ জনের সংগঠন হয়েছে ১২০ জনের।
সংগঠনটি আগে বগুড়াকেন্দ্রিক হলেও এখন অন্য জেলাতেও সদস্য আছেন। সেই জেলাগুলোতে এভাবেই টাকা তুলে দুস্থদের খাওয়ানো হয়। গতকাল বুধবার ছিল সংগঠনের ৫০তম আহারের আয়োজন। এসব আয়োজনে খাবার পেয়েছেন অন্তত ২০ হাজারের মতো ছিন্নমূল। এ ছাড়া সংগঠনটি পথশিশুদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী, শীতার্তদের গরম কাপড়, ঈদে নতুন জামা বিতরণসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাহাব মাহাদী এখন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি সমকালকে বলেন, কয়েক বছর আগে রমজান মাসে বন্ধুরা মিলে পুলিশ লাইন্স স্কুল মাঠে গল্প করছিলাম। ওই সময় তিনজন ছিন্নমূল পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ইফতারের সময় হলেও টাকা না থাকায় তাদের কাছে কোনো খাবার ছিল না। পরে আমরা তাদের ইফতার করাই। সে দিনই আমরা ছিন্নমূল মানুষদের খাওয়ানোর চিন্তা করি। এর পর নিজেরা টাকা তুলে প্রতি মাসে একবার এমন মানুষদের খাওয়াই।
সাধারণ সম্পাদক সরকারি আজিজুল হক কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী আল গালিব বলেন, আমরা এক সময় টিফিনের টাকা দিয়ে গরিবদের খাওয়াতাম। এখন পরিধি বেড়েছে। সদস্য সংখ্যা বাড়ায় চাঁদার পরিমাণও বেড়েছে। এতে বেশি মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ছিন্নমূলদের শুধু মাঠে চট বিছিয়ে খাওয়ানো হয়, তা নয়। বুফে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ব যবস থ স গঠন র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।