হলিউডের টপ ৫ রোমান্টিক ক্ল্যাসিক সিনেমা
Published: 12th, June 2025 GMT
প্রেম একটি চিরন্তন অনুভব; যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সাহিত্য, গান আর সিনেমায় অনবদ্যভাবে জায়গা করে নিয়েছে। আর সিনেমার পর্দায় ভালোবাসার গল্প যখন জীবন্ত হয়ে ওঠে, তখন তা শুধু একটি গল্প নয়; বরং হয়ে ওঠে দর্শকের হৃদয়ের অংশ। হলিউডে এমন কিছু রোমান্টিক সিনেমা রয়েছে, যেগুলো শুধু বক্স অফিসেই নয় বরং মানুষের মনেও স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। চলুন জেনে নেই হলিউডের এমনই সেরা ৫ রোমান্টিক ব্লকবাস্টার সিনেমা নিয়ে।
টাইটানিক [১৯৯৭]
আইএমডিবি রেটিং: ৭.
পরিচালক: জেমস ক্যামেরুন
অভিনয়ে: লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও, কেট উইন্সলেট
১৯১২ সালের বসন্তের সময়। বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজ আরএমএস টাইটানিক তার প্রথম যাত্রায় নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেয়। এই জাহাজেই ওঠেন রোজ ডেউইট বুকেটার। যিনি এক ধনী পরিবারের তরুণী। যাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে এক দাম্ভিক ও ধনী যুবকের সঙ্গে। রোজ দমবন্ধ হয়ে পড়েন সমাজ ও পারিবারিক চাপে। অন্যদিকে জ্যাক ডসন, দরিদ্র চিত্রশিল্পী। জুয়ার মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণির টিকিট পেয়ে জাহাজে উঠেছে। এক সন্ধ্যায় জাহাজের ডেকে দেখা হয় রোজ আর জ্যাকের এবং ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এক গভীর প্রেম। তবে এই প্রেমকাহিনি করুণ মোড় নেয়, যখন টাইটানিক একটি আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। সেই দুঃসহ পরিস্থিতিতে জ্যাক রোজকে বাঁচিয়ে তুলতে প্রাণপণ চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত জ্যাক প্রাণ হারালেও রোজ বেঁচে থাকে তার ভালোবাসার স্মৃতি নিয়ে।
দ্য নোটবুক [২০০৪]
আইএমডিবি রেটিং: ৭.৮/১০
পরিচালক: নিক ক্যাসাভেটিস
অভিনয়ে: রায়ান গসলিং, র্যাচেল ম্যাক অ্যাডামস
এক বৃদ্ধাশ্রমে বসে ডিউক নামক এক বৃদ্ধ একজন বৃদ্ধাকে (অ্যালিকে) একটি প্রেমের গল্প পড়ে শোনান। গল্পটি ১৯৪০-এর দশকে শুরু– নোয়া কালহুন, এক শ্রমিক শ্রেণির ছেলে এবং অ্যালি হ্যামিলটন, এক ধনী পরিবারের মেয়ে। তারা এক গ্রীষ্মে একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে, কিন্তু সামাজিক পার্থক্যের কারণে অ্যালির পরিবার তাদের আলাদা করে দেয়। নোয়া প্রতিদিন অ্যালিকে চিঠি লেখে, কিন্তু চিঠিগুলো অ্যালির মা পৌঁছাতে দেয় না। দীর্ঘ সময় পর অ্যালি অন্য এক যুবকের সঙ্গে বাগদান করে, কিন্তু হঠাৎ একদিন খবরের কাগজে নোয়ার ছবি দেখে পুরোনো ভালোবাসা ফিরে আসে। সে নোয়ার খোঁজে যায় এবং পুরোনো স্মৃতি আবার জেগে ওঠে। শেষে জানা যায়– এই বৃদ্ধ ডিউক আসলে নোয়া এবং অ্যালি এখন স্মৃতিভ্রষ্টতায় ভুগছে।
প্রিটি ওমান [১৯৯০]
আইএমডিবি রেটিং: ৭.১/১০
পরিচালক: গ্যারি মার্শাল
অভিনয়ে: রিচার্ড গিয়ার, জুলিয়া রবার্টস
এডওয়ার্ড লুইস একজন ধনী ব্যবসায়ী, যিনি সম্পর্কের চেয়ে ব্যবসা নিয়ে বেশি ব্যস্ত। একদিন তিনি ভিভিয়ান ওয়ার্ড নামে এক যৌনকর্মীর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাকে সপ্তাহজুড়ে সঙ্গী হওয়ার জন্য অর্থ প্রদান করেন। ভিভিয়ান তার অনন্য সরলতা ও স্বাধীনচেতা আচরণ দিয়ে এডওয়ার্ডের মনে দাগ কাটে। ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক শুধু অর্থনৈতিক চুক্তিতে সীমাবদ্ধ না থেকে এক আন্তরিক ও আবেগঘন সম্পর্কে রূপ নেয়। ভিভিয়ান সামাজিক পরিচয় নিয়ে দ্বন্দ্বে ভোগে, কিন্তু এডওয়ার্ড তাকে নিজস্ব মর্যাদায় ভালোবাসতে শেখায়।
লা লা ল্যান্ড [২০১৬]
আইএমডিবি রেটিং: ৮.০/১০
পরিচালক: ড্যামিয়েন চ্যাজেল
অভিনয়ে: রায়ান গসলিং, এমা স্টোন
মিয়া অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নে অডিশন দিতে থাকেন। অন্যদিকে সেবাস্টিয়ান, একজন প্রতিভাবান জ্যাজ পিয়ানোবাদক, নিজের ক্লাব খোলার স্বপ্ন দেখে। একাধিকবার হঠাৎ দেখা থেকে শুরু হয় তাদের প্রেম। তারা একে অপরের স্বপ্নে অনুপ্রেরণা দেয়, একসঙ্গে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা, সংগ্রাম এবং পেশাগত চাপে তাদের পথ আলাদা হয়ে যায়। একসময় তারা সফল হয়– কিন্তু একে অপর ছাড়া। শেষ দৃশ্যে, যখন তারা আবার দেখা করে, দর্শককে এক কল্পনার মাধ্যমে দেখানো হয়– যদি তারা এক সঙ্গে থাকত, তবে জীবনটা কেমন হতো।
গোস্ট [১৯৯০]
আইএমডিবি রেটিং: ৭.১/১০
পরিচালক: জেরি জাকার
অভিনয়ে: প্যাট্রিক সোয়ায়েজ, ডেমি মুর
স্যাম উইট, এক তরুণ ব্যাঙ্কার, তার প্রেমিকা মলিকে নিয়ে সুখে জীবন কাটাচ্ছিল। হঠাৎ এক রাতে স্যাম এক ছিনতাইকারীর হাতে খুন হয়। কিন্তু মৃত্যুর পর তার আত্মা পৃথিবীতে রয়ে যায়, কারণ সে বুঝতে পারে তার মৃত্যু ছিল পূর্বপরিকল্পিত। স্যাম তার আত্মার মাধ্যমে মে ব্রাউনের মাধ্যমে মলিকে সতর্ক করার চেষ্টা করে এবং খুনির পরিচয় প্রকাশে চেষ্টা চালায়। মলিকে রক্ষা করতে গিয়ে আত্মার শক্তি ও ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ পায়। এক হৃদয়ছোঁয়া দৃশ্যের মাধ্যমে তারা শেষবারের মতো বিদায় নেয়। এই গল্প প্রেম, মৃত্যু এবং আত্মার বন্ধনকে নিয়ে নির্মিত, যা দর্শকদের রোমাঞ্চ ও আবেগে ভাসিয়ে দেয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগে একটা মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এখতিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও এই কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।”
অধ্যাদেশে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।”
এছাড়া, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।
অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।”
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।
ঢাকা/এসবি