শরীরে কোনো ধরনের সমস্যা হলে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। অনেকেই সেসব লক্ষণকে পাত্তা দেন না। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা বড় আকার নেয়। তাই যেকোন রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জেনে রাখা জরুরি। শরীরে হজমজনিত সমস্যা হওয়া মানে অন্ত্রের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পড়া। তাই জটিল রোগ হওয়ার আগেই কিছু লক্ষণ জেনে রাখা দরকার। যেমন-
বদহজমের সমস্যা থাকলে সারাক্ষণই পেটে একটা চিনচিনে ব্যথা, অস্বস্তি হতে পারে। কিছু খেলেই মনে হবে পেটে ব্যথা হচ্ছে। এক্ষুনি বাথরুমে দৌড়াতে হবে। বদহজমের সমস্যা মানেই হচ্ছে খাবার সঠিক ভাবে হজম না হওয়া। এর ফলে অস্বস্তিকর ঢেকুর উঠতে পারে। তাই সারাক্ষণ ঢেকুর উঠতে থাকলে সাবধান হওয়া জরুরি।
যারা অনেকদিন ধরে বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন পানি খেলেও তাদের মনে হয় অ্যাসিডিটি হচ্ছে। এমন হলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
সামান্য কিছু খেলেও অনেকেরই ঢেকুর উঠতে থাকে। এর অন্যতম কারণ বদহজমের সমস্যা। এই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খাবার দেখলে অনীহা, খিদে না থাকা, গা-গোলানো এবং বমিভাবে এগুলি বদহজমের কারণেই দেখা যায়। এইসব উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা করবেন না।
বদহজমের সমস্যা থাকলে গ্যাসেরও সমস্যা হয়। সারাক্ষণ গলায় এক ধরনের চাপ অনুভূত হয়। এমন হলে সতর্ক হোন।
বদহজমের সমস্যা থাকলে সারাক্ষণ মনে হবে পেট যেন ফুলে ফেঁপে রয়েছে। সামান্য কিছু খেলেই অস্বস্তি হবে। এইসব উপসর্গ অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকা বদহজমের সমস্যা অবহেলা করলে পরবর্তীতা পেটের বড় রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ কারণে যাদের প্রচণ্ড অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের সমস্যা আছে তারা ভাজাভুজি, তেলমসলা, ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন। সহজপাচ্য খাবার খান। প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে পানি পান করুন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বদহজম বদহজম র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
এই সময় অনেকের মুখ বেঁকে যায় কেন? কিছু পরামর্শ
ঋতু পরিবর্তনের সময় নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে। এ সময় মুখ বেঁকে যাওয়া রোগে (বেলস পলসি) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি হয়। ভাইরাসের আক্রমণজনিত এ রোগে যে কোনো বয়সী লোক আক্রান্ত হতে পারেন। তবে যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের এ রোগ বেশি হয়। বিশেষ করে ভ্রমণের সময় ঠান্ডা বাতাস লাগলে, বেশি রাত জাগলে হঠাৎ এ রোগ দেখা দিতে পারে।
উপসর্গ: এ রোগটি সহজেই নির্ণয় করা যায়। বেশির ভাগ রোগীই কানের গোড়ায় বা ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করেন। কুলি করতে গেলে আক্রান্ত অংশের পাশ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। চোখ বন্ধ করতে পারেন না। কথা বলতে বা হাসতে গেলে মুখ একদিকে বেঁকে যায়। খাবার মুখের ভেতরের আক্রান্ত অংশে জমা হয়ে থাকে। হঠাৎ এসব উপসর্গ দেখা দিলে উল্লিখিত রোগটি হয়েছে ধরে নেওয়া যায়।
ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা: আক্রান্ত স্থানের প্রদাহ কমানোর জন্য চিকিৎসকরা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন। ইদানীং অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধও স্বল্প মেয়াদে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
ফিজিওথেরাপি: কানের গোড়ার যে ছিদ্র দিয়ে সপ্তম স্নায়ু প্রবেশ করে, ঠিক সেই অংশে স্নায়ুটি ফুলে ওঠে। ফলে স্নায়ুটি চাপে পড়ে যায় এবং উদ্দীপনা চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ঠিক এ অংশে ইলেকট্রো-ফিজিওথেরাপি প্রয়োগ করে স্নায়ু ও আশপাশের মাংসপেশি এবং তন্তুগুলোর প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ছাড়া মুখমণ্ডলের মাংসপেশিগুলোকে ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত করে স্থায়ীভাবে মুখ বেঁকে যাওয়াজনিত জটিলতা দূর করা যায়। এ ছাড়া ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞরা বিশেষ ধরনের ব্যায়াম দেখিয়ে দেন, যা রোগীকে দ্রুত সুস্থ করে তোলে।
দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে: এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ৫০ শতাংশ রোগীই সাত থেকে ২১ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। বাকি রোগীরা তিন মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। খুব অল্পসংখ্যক রোগীর মুখ স্থায়ীভাবে বেঁকে যায়। তবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে প্রায় সব রোগীই সুস্থ হয়ে ওঠেন।
পরামর্শ: ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাবেন না। আরামদায়ক ও খোলামেলা পরিবেশে অবস্থান করুন। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ যেসব ব্যায়াম দেখিয়ে দেন, তা আয়নার সামনে বসে অনুশীলন করুন। চুইংগাম চিবোতে পারেন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। আক্রান্ত চোখকে বাতাস ও তীব্র আলো থেকে বাঁচাতে বড় ও কালো কাচের চশমা ব্যবহার করুন।
লেখক: বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা