ময়মনসিংহে নারীর ফাঁদে পড়ে ১৪ হাজার রিয়াল খোয়ালেন প্রবাসী, এরপর যা হলো
Published: 22nd, June 2025 GMT
আট বছর সৌদি আরবে থেকে মাসখানেক আগে দেশে ফেরেন মো. শওকত হোসেন (৩৪)। সঙ্গে এনেছিলেন ১৪ হাজার সৌদি রিয়াল। সেগুলো বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করে বাড়িতে ঘর করার কাজ করতে চেয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে মুঠোফোনে কথা বলে এক নারীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফাঁদে পড়ে সব টাকা খোয়ান তিনি। পরে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর অভিযান চালিয়ে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী প্রবাসী শওকত হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি গ্রামে। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম খলিলুর রহমান ওরফে সজল মিয়া (২৪)। তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরি, মাদকসহ ছয়টি মামলা আছে কোতোয়ালি থানায়। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে নগরের পাটগুদাম আটাআনি পুকুরপাড় এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শওকত দেশে ফেরার পর নগরের পাটগুদাম আটাআনি পুকুরপাড় এলাকার রকি মিয়ার স্ত্রী রুমা আক্তারের (২৫) সঙ্গে মুঠোফোনে কথাবার্তা হয়। ওই নারী প্রথমে শওকতকে ফোন করে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। নিজের বাড়ি ফুলবাড়িয়া ও শওকতের এক আত্মীয়ের বাড়ির পাশের বাড়ির বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন। এরপর দুজনের মধ্যে কয়েক দিন মুঠোফোনে কথা হয়।
গতকাল বিকেলে শওকত তাঁর চাচাতো ভাই রিয়াজকে নিয়ে ১৪ হাজার রিয়াল ভাঙাতে ময়মনসিংহ শহরে আসেন। বিদেশি মুদ্রা ভাঙিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা নিয়ে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু শহরে আসার পর রুমা তাঁদের দুজনকে বাসায় দাওয়াত করে নিয়ে যান।
শওকত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুই ভাই পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় একটি হোটেলে নাশতা করার সময় রুমা ফোন করে তাঁর বাসায় যেতে অনুরোধ করেন। বাসা না চেনায় নিজে এসে এগিয়ে নিয়ে যান। বাসায় বেড়াতে যাচ্ছেন দেখে তাঁরা দুই কেজি আম ও বিস্কুট নিয়ে যান। তারপর দোতলা বাসার নিচতলার একটি কক্ষে নিয়ে তাঁদের আম কেটে খেতে দেন। এরপর নাশতা তৈরির কথা বলে কক্ষের বাইরে থেকে দরজা আটকে দেন। ২০ মিনিট পর এক যুবক এসে ‘খারাপ করতে এসেছি’ বলে গালাগাল শুরু করেন। পরে আরও একজন যুক্ত হন। হত্যার হুমকি দিয়ে চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন।
শওকত হোসেন আরও বলেন, ওই অবস্থা চলার এক ঘণ্টা পর রুমা এসে তাঁদের বলেন, ‘ওরা যা চায় দিয়ে দেন।’ তখন দুজনের পকেট থেকে দুটি মুঠোফোন, বিদেশি মুদ্রা, ১১ হাজার টাকা নিয়ে নেন। মুক্তি দিতে বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে আরও ২০ হাজার টাকা নেন। মুক্তি দেওয়ার আগে ইয়াবা সামনে রেখে দুজনের ছবি ও ভিডিও, নারীর সঙ্গে ছবি তোলেন ও ভিডিও করেন। পাশাপাশি সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাসা থেকে বের করে পাকা সড়কের কাছে এনে একটি রিকশায় তুলে দেন।
আজ দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানা চত্বরে কথা হয় শওকতের চাচাতো ভাই রিয়াজ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের রিকশায় তুলে দেওয়ার পর কিছু দূর যাওয়ার পর আমরা দৌড়ে থানায় যাই। পরে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ আমাদের সঙ্গে নিয়ে বাসাটিতে অভিযানে যায়। তখন পুলিশ ওই বাসা থেকে খলিলুর রহমানকে আটক করে। কিন্তু রকি মিয়া ও তাঁর স্ত্রী রুমা পালিয়ে যায়।’
পুলিশ জানায়, রকি মিয়ার বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি ও মাদক আইনে দুটি মামলা আছে। রুমা আক্তার ২০২৪ সালের মার্চ ও এপ্রিলে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ রেখে প্রবাসফেরত ও অর্থবিত্ত আছে এমন লোককে টার্গেট করে মুঠোফোনের নম্বর সংগ্রহ করে ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর বাসায় আটকে জিম্মি করে টাকা আদায় করতেন।
এ ঘটনায় শওকত হোসেন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন। তিনি বলেন, চক্রের অন্য দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শওকত হ স ন প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
ছবি পোস্ট করে কটাক্ষের শিকার, ক্ষুব্ধ শ্রীময়ী
কাদা ছোড়াছুড়ির পর গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক ও শ্র্রীময়ী চট্টরাজ। বিয়ের প্রায় ৬ মাস পর ২৬ বছরের ছোট স্ত্রীকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমায় যান কাঞ্চন। মধুচন্দ্রিমায় তোলা একটি ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন শ্রীময়ী। এ নিয়ে কটাক্ষের শিকার হয়েছেন এই দম্পতি।
এ ছবিতে দেখা যায়, সৈকতে স্ত্রী শ্রীময়ীকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে কাঞ্চন মল্লিক। তার পরনে শর্টস, গায়ে টি-শার্ট। অন্যদিকে খোলামেলা পোশাকে শ্রীময়ী। এ ছবির ক্যাপশনে লাল রঙের দুটো হার্ট ইমোজি দিয়েছেন অভিনেত্রী।
ছবিটির কমেন্ট বক্সে নেটিজেনদের অনেকে কাঞ্চন-শ্রীময়ীর প্রশংসা করছেন। অনেকে আক্রমণ করে মন্তব্য করছেন। জুনায়েদ নামে একজন লেখেন, “কাঞ্চনকে দেখতে কার্টুনের মতন লাগে।” সাবরিনা লেখেন, “একটা কার্টুন আরেকটার… যাচ্ছে, ভালো মিলছে দুজন।” শুভঙ্কর রায় লেখেন, “মাননীয় বিধায়ক মহাশয় থেকে আমরা কি শিক্ষা পেলাম?”
আরো পড়ুন:
‘আমি যৌবনের পিছনে ছুটছি না, সত্যকে আলিঙ্গন করছি’
দায়িত্ব নিয়েই বলছি—সাফা, তুই বিয়ে কর: তৌসিফ
এসব মন্তব্য দৃষ্টি এড়ায়নি শ্রীময়ীর। শুভঙ্করের মন্তব্যের জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এ অভিনেত্রী লেখেন, “আপনি যে পর্যায়ে আছেন তাতে কোনো শিক্ষাই আপনাকে শিক্ষিত করতে পারবে না। কারণ, এই বয়সে এসে আপনার মা-ই আপনাকে কোনো শিক্ষা দিতে পারলেন না। নিজের বউকে বলুন যদি আপনাকে কোনো শিক্ষা দিতে পারেন। তা হলে অন্যের বউয়ের ফেসবুকে গিয়ে তাকে ‘হট’ বলতে হবে না।”
পরে বেশ কজন নেটিজেন শ্রীময়ীর সঙ্গে একমত পোষণ করে মন্তব্য করেছেন। অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন—“এসব মন্তব্য এড়িয়ে চলুন।”
অভিনেত্রী অনিন্দিতা দাসকে ভালোবেসে প্রথম সংসার শুরু করেছিলেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। ২০১০ সালে ভেঙে যায় এ সংসার। তাদের সাড়ে সাত বছরের সংসার ছিল। এরপর পিংকি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কাঞ্চন। গত বছরের ১০ জানুয়ারি ৯ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন তারা।
দ্বিতীয় সংসার ভাঙার এক মাসের মাথায় অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজকে বিয়ে করেন ৫৫ বছর বয়সি কাঞ্চন। গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৮ বছর বয়সি এই অভিনেত্রীকে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন তিনি। এরপর সামাজিক রীতি মেনে ২৬ বছরের ছোট শ্রীময়ীকে ঘরে তুলেন কাঞ্চন।
মূলত, পিংকির সঙ্গে সংসার চলাকালীন কাঞ্চনের জীবনে শ্রীময়ীর আগমন ঘটে। পরকীয়ার অভিযোগ, অসম বয়স নিয়ে দারুণভাবে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী। বিয়ের পর এ সমালোচনার আগুন আরো ছড়িয়ে পড়ে। সমালোচনা-বিতর্ক নিয়ে একাধিকবার কথা বলেন শ্রীময়ী।
ঢাকা/শান্ত