ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম, এরপর যেভাবে যৌনপল্লিতে কিশোরী
Published: 22nd, June 2025 GMT
নোয়াখালীর দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় সাতক্ষীরার এক তরুণের। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেম। বিয়ের উদ্দেশ্যে ওই ছাত্রী বাড়িও ছাড়ে। এরপর পরিবারের সদস্যরা ওই ছাত্রীর আর খোঁজ পাননি দীর্ঘদিন। সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এক যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করে ওই কিশোরীকে। এ ঘটনায় দুই তরুণকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মা।
আজ রোববার বেলা ১১টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নোয়াখালীর সুধারাম থানায় ওই মামলা করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর মেয়ে মাদ্রাসায় দশম শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে পণ্য বিক্রি করত। এরই মধ্যে তাঁর মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলার এক তরুণের (২০) পরিচয় হয়, যা পরবর্তী সময়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। গত ৬ মে তাঁর মেয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে গয়না, নগদ টাকা নিয়ে জেলা শহর মাইজদীতে যায়। সেখান থেকে অভিযুক্ত তরুণ তাঁকে বিয়ের কথা বলে বাসে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় নিয়ে যান। যাত্রাবাড়ীতে তাঁরা একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। সেখানে ওই তরুণ তাঁর মেয়ের কাছ থেকে গয়না ও টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে যান।
ছাত্রীর মা এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, আনুমানিক ২০ দিন তাঁর মেয়েকে যাত্রাবাড়ীর ওই আবাসিক হোটেলে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত তরুণ। এরপর গত ২৭ মে মেয়েকে ওই তরুণ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তরুণের পরিবারের লোকজন তাঁর মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর ওই তরুণ ঢাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে মেয়েকে রেখে চলে যান। বাদীর অভিযোগ, বাসায় রেখে যাওয়ার পর ওই তরুণের বন্ধু তাঁর মেয়েকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন। সেখানে তাঁর মেয়েকে ১০ দিন আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে আরেকটি মেয়ের মুঠোফোন থেকে বাড়িতে বড় বোনের কাছে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায় সে। পরে ১৮ জুন ‘প্রটেক্ট আওয়ার সিস্টার বিডি’ নামের একটি সংগঠন তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে বাসযোগে নোয়াখালীর সোনাপুরে পাঠায়। সেখান থেকে তাঁরা তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সাতক্ষীরার ওই তরুণের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। মামলায় সাতক্ষীরার তরুণ ও তাঁর বন্ধুকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষাসহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তর ণ র
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধমুক্ত সবুজ বিশ্ব গড়ার বার্তা
এভারেস্টজয়ী প্রয়াত বন্ধু সজল খালেদ স্মরণে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প অভিযান করেছেন লেখক ও গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ। ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই সবুজ বিশ্ব গড়তে চাই’ স্লোগান নিয়ে তিনি এ অভিযান সম্পন্ন করেন। ১৩ জুন বিকেল পৌনে ৩টায় তিনি বেস ক্যাম্প পৌঁছান। এর আগে ৬ জুন সকালে নেপালের লুকলা থেকে বেস ক্যাম্পের উদ্দেশে ট্র্যাকিং শুরু করেন। অষ্টম দিনের মাথায় তিনি পৌঁছান পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে (৫,৩৬৪ মিটার)।
গাজী মুনছুর আজিজ বলেন, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে যারা এ অভিযানে সম্পৃক্ত হয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিশেষ ধন্যবাদ বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশে পর্বতারোহণের স্বপ্নদ্রষ্টা ইনাম আল হকের প্রতি এবং বিএমটিসি ক্লাবের সবার প্রতি। এ ছাড়া ধন্যবাদ অল্টিচিউড হান্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌফিক আহমেদ তমালের প্রতি। তাঁর সার্বিক সহযোগিতায় এ অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করি।
গাজী মুনছুর আজিজ বলেন, আমরা একটি যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী দেখতে চাই, যেখানে বোমার আঘাতে একটি শিশুও মারা যাবে না। এ ছাড়া একটি দূষণমুক্ত বিশ্ব গড়তে চাই, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঁচবে নির্মল আনন্দে। এসব বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিতে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে বেছে নিয়েছি।
আজিজ আরও বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করে নামার পথে সজল মারা যান। এখন বাংলাদেশের অনেকেই এভারেস্ট জয় করেছেন, সবাই তাদের গল্প শুনছেন। আমি মনে করি তাদের সঙ্গে সজলের গল্পটাও মানুষ জানুক। সেজন্যই তাঁকে স্মরণ করে আমার এ অভিযান। এ ছাড়া ২০০৭ সালে ইনাম আল হকের পরিকল্পনায় এবং সজলের উদ্যোগে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে দেশে প্রথম বারের মতো বাংলা ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৯ ও ২০১০ সালেও সজলের উদ্যোগে ম্যারাথন হয়। সজল মারা যাওয়ার পর আর বাংলা ম্যারাথন হয়নি। এরপর সজলকে স্মরণ করে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর মেরিন ড্রাইভে আমি একক ম্যারাথন করে আসছি। এখন বাংলাদেশে প্রচুর ম্যারাথন প্রতিযোগিতা হচ্ছে। আমি মনে করি ম্যারাথনের শুরুর গল্পটাও মানুষ জানুক।
সজল চেয়েছেন ম্যারাথনের মাধ্যমে কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের পর্যটনকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করে তোলা এবং একই সঙ্গে পরিবেশ
সচেতনতার বার্তা দেওয়া।
লেখক ও গবেষক গাজী মুনছুর আজিজ বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য। ভ্রমণ বিষয়ে তাঁর বেশ ক’টি বই বের হয়েছে। গত একুশে বইমেলায় বের হয়েছে তাঁর ভ্রমণবিষয়ক বই ‘পাখির খোঁজে বাংলাজুড়ে’। বিভিন্ন ম্যারাথন প্রতিযোগিতা, সাইকেল অভিযানসহ নিয়মিত ভ্রমণ ও অভিযানে বের হন। এ ছাড়া পরিবেশ সচেতনতায় গাছ লাগানোসহ নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকেন। u