দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে একজন নারীকে ধর্ষণ, তারপর নির্যাতন—আর সেই বীভৎস ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া। কুমিল্লার মুরাদনগরের এই ঘটনা শুধু একজন নারীর প্রতি সহিংসতা নয়, পুরো সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা, পাশাপাশি সরব হয়েছেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারাও।
প্রতিবাদ জানিয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “মানুষ আর মানুষ নেই। পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ আর কোনো মানুষ থাকবে না। খুব শীঘ্রই।” দুই হাত জোড় করা ইমোজি দিয়ে চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া লিখেছেন, “স্টপ রেপ।”
হ্যাশট্যাগ দিয়ে আরেক চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি লিখেছেন, “ধর্ষণকে না বলুন। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। নীরবতাই সমর্থন। ধর্ষণ বন্ধ করুন।”
আরো পড়ুন:
তারকাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ
জেল থেকে ফ্রেমে ফারিয়া
চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী লিখেছেন, “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। জন্ম দিয়েছো তুমি মাগো তাই তোমায় ভালোবাসি। আমার প্রাণের বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি! কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীর সাথে যা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। যিনি ধর্ষণ করেছেন এবং যিনি পরবর্তীতে ভিডিও করে পাবলিশ করেছেন উভয়ের বিচার চাই।”
ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেতা আরশ খান লিখেছেন, “কাপুরুষত্ব যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছায় তখন তা কুপুরুষত্বে রূপ নেয়। জন্ম পরিচয়হীন না হলে একজন নারীর সাথে এমন করা সম্ভব না। একবার জারজ সবসময় জারজই থাকে।”
চিত্রনায়ক জিয়াউল রোশান লিখেছেন, “কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনায় ধর্ষকদের একটাই শাস্তি চাই। জনসম্মুখে ফাঁসি। তারা কোন দল করে, আর কোন ধর্মের সেটা জানা দরকার নাই, জানতেও চাই না, জাস্ট জনসম্মুখে ফাঁসি চাই। আর আপনারা যারা সমবেদনা জানিয়ে সেই ভিডিওটি শেয়ার করছেন আবার কেউ কেউ ভিউ পাবার লোভে সেই ভিডিওটা আপলোড করছেন, আপনারাও সে ধর্ষণকারীর মতোই অপরাধী। আপনারা ভিউখোর রাক্ষস। ফাজলামি ছেড়ে দেন আর অতি সত্তর এইসব ডিলিট করেন।”
সংগীতশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী পারশা মাহজাবীন পূর্ণী লিখেছেন, “বিবস্ত্র বাংলাদেশ।”
বলা দরকার, ধর্ষণের পর নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় ৫ জনকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানায়নি। এর আগে গত শুক্রবার ভুক্তভোগী ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করেন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র চ ত রন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
এমন এক সময়ে যখন বেশিরভাগ মানুষ লেখার জন্য কিবোর্ড ব্যবহার করে, তখন হাতের লেখা কি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ? ভারতীয় আদালতের মতে, অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, যদি সেই লেখক হন একজন চিকিৎসক।
ডাক্তারদের বাজে হাতের লেখা নিয়ে ভারতসহ সারাবিশ্বেই রসিকতা করা হয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রে এই লেখা কেবল ফার্মাসিস্টরাই বুঝতে পারেন, রোগী কিংবা অন্য কেউ নয়। কিন্তু স্পষ্ট হাতের লেখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি আদেশ জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মেডিকেল প্রেসক্রিপশন পাঠ একটি মৌলিক অধিকার।’ কারণ এটি জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
আদালতের এই আদেশ এমন একটি মামলায় এসেছে, যেখানে লিখিত শব্দের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় একজন নারীকে ধর্ষণ, প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ ছিল এবং বিচারপতি জসগুরপ্রীত সিং পুরি জামিনের জন্য পুরুষের আবেদনের শুনানি করছিলেন।
ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন, লোকটি তাকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তার ভুয়া সাক্ষাৎকার নিয়েছে এবং তাকে যৌন শোষণ করেছে।
অভিযুক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তাদের সম্মতিতে সম্পর্ক ছিল এবং অর্থ নিয়ে বিরোধের কারণে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
বিচারপতি পুরি জানান, যখন ওই নারীকে পরীক্ষা করা এক সরকারি চিকিৎসকের মেডিকেল রিপোর্টটি দেখেন, তখন এর কিছুই তিনি বুঝতে পারেননি।
বিচারপতি তার আদেশে লিখেছেন, “এটি এই আদালতের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। কারণ একটি শব্দ বা একটি অক্ষরও স্পষ্টভাবে পড়া যায়নি।”
বিবিসি রায়ের একটি কপি দেখেছে যার মধ্যে প্রতিবেদন এবং দুই পৃষ্ঠার একটি প্রেসক্রিপশন রয়েছে। পুরো প্রেসিক্রিপশন ও রিপোর্ট অপাঠ্য।
বিচারপতি পুরি লিখেছেন, “যেহেতু প্রযুক্তি ও কম্পিউটার সহজলভ্য, তবুও এটা অবাক করার মতো যে সরকারি ডাক্তাররা এখনো হাতে প্রেসক্রিপশন লিখছেন যা সম্ভবত কিছু রসায়নবিদ ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারে না।”
আদালত সরকারকে মেডিকেল স্কুলের পাঠ্যক্রমের মধ্যে হাতের লেখার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে এবং ডিজিটালাইজড প্রেসক্রিপশন চালু করার জন্য দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করতে বলেছে।
বিচারপতি পুরি জানিয়েছেন, যতদিন না এটি বাস্তবায়ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত সব ডাক্তারকে বড় অক্ষরে স্পষ্টভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে।
ঢাকা/শাহেদ