জামালপুরে মধ্যরাতে ডেকে বের করে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 29th, June 2025 GMT
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার জিগাতলা এলাকায় নিজ বাড়ির উঠানে দুবারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার কুলিকান্দি ইউনিয়নের জিগাতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইউপি সদস্যের নাম আবদুর রহিম খন্দকার (৫০)। তিনি কুলকান্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং কুলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
পরিবারের লোকজনের ভাষ্য, একদল দুর্বৃত্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে রহিমকে ঘর থেকে বের করেন। এরপর বাড়ির উঠানে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউপি সদস্য পরিবারের সঙ্গে ঘরে ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত বাড়ির উঠানে গিয়ে তাঁকে ডাকতে থাকেন। এ সময় তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেন। পরে তিনি ঘর থেকে বের হন। সঙ্গে সঙ্গে দুর্বৃত্তরা তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা চলে যান। আজ রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কুলকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, আবদুর রহিম দুবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা কেন নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করেছে, বিষয়টি এলাকার কেউ বলতে পারছেন না। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আতিকুর রহমান বলেন, কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড এবং এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
আদমজী ইপিজেড এলাকায় বাড়ছে অপরাধ প্রবনতা, নিশ্চুপ আইনশৃংখলাবাহিনী
সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিনিয়ত এসব ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ পথচারী, বিশেষ করে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকরা।
অথচ ইপিজেড এলাকার পাশেই রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, র্যাব- ১১’র সদর দপ্তর ও শিল্পপুলিশের কার্যালয়। ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগ আইনশৃংখলা বাহিনীর নিশ্চুপ ভুমিকাতেই বাড়ছে অপরাধ প্রবনতা। র্যাব-পুলিশের কার্যকরী ভুমিকা না থাকায় অপরাধীরা প্রতিনিয়ত অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইপিজেড এলাকার রিমি গার্মেন্টসের সামনে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে ফুটপাত। এই ফুটপাতকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নানান সমস্যা। চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে চুরি ও ছিনতাই সবই চলছে প্রকাশ্যে। পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হওয়ার পর ছিনতাইকারীরা উৎপেতে থাকে নারী শ্রমিকদের টার্গেট করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রিমি গার্মেন্টসের দক্ষিণ পাশে বৈদ্যুতিক তারের বড় বড় রোল ফেলে রাখা হয়েছে। প্রায়ই এসব রোলের ভেতরে ছিনতাইকারীরা লুকিয়ে থাকে এবং সুযোগ বুঝে ছিনতাই করে।
রাত গভীর হলে এখানে ছিনতাইকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তারা নিয়মিত মাদক সেবন করে এবং মাদক কেনার অর্থ যোগাতে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে ডিএনডি লেকের পাড়েও দেখা যায় এসব অপরাধী সমবেত হয়ে মাদক সেবন করছে।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশ ও আইনশৃংখলার অন্যান্য বাহিনীর কোনো নজরদারি না থাকায় মাদকসেবীরা নির্বিঘ্নে এসব বৈদ্যুতিক তারের রোলের ভেতরে বসে মাদক সেবন করে। গত শনিবার সন্ধ্যায় এই স্থানে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে অটোচালক আকাশ ও শরিফ গুরুতর আহত হন। এ ঘটনা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
পোশাক কারখানার একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাতেই প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও র্যাব-১১ কার্যালয় মাত্র ১ থেকে ২ শত গজ দূরে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন স্পর্শকাতর এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকসেবন ও ছিনতাই হয়, তা বোধগম্য নয়।
তারা বলছেন দ্রুত এসব অপরাধীদের প্রতিহত না করলে এখানকার আইনশৃংখলার অবনতিসহ প্রানণাশের মত ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই এই অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর আলম বলেন, এসব অপরাধীদের রুখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সম্প্রতি ছুরিকাঘাতে আহত অটো চালকদের কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফুটপাত, লেকের পাড়ে অবৈধ দখলদারীদের ঘিরে রয়েছে অপরাধীরা এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা তাদের সাথে সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো।
এসময় তিনি এসব অপরাধীদের দমন করতে সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।