রিফাত রশিদ
সভাপতি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম একটি শক্তি ছিল দীর্ঘদিনের ক্যাম্পাসে রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক পলিসি মেকিং সম্পর্কিত পাঠচক্রগুলোয় অংশগ্রহণ করা। দেশের মানুষ হরতাল, অবরোধ এই শব্দগুলো নেতিবাচক হিসেবে ধরে। সেখান থেকে কীভাবে আধুনিক আর সৃষ্টিশীল করে সবার কাছে পৌঁছানো যায়, সেটি আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল।
‘স্বপ্নের বাসা’ নামের একটি বাসা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন চাঁনখারপুল এলাকায়। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান স্ট্র্যাটেজিগুলো প্রস্তুত করতাম এবং পরবর্তীকালে আমরা সবার মতামত নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতাম। আমাদের এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামের প্রস্তাবনা করেন আব্দুল হান্নান মাসউদ। পরবর্তীকালে অবরোধ কর্মসূচির জন্য আমরা কার্জন হলের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হোয়াইট হাউসে বসে অবরোধ নিয়ে আলোচনা করি। সেখানে আসিফ মাহমুদ ভাই সর্বপ্রথম ‘বেঙ্গল ব্লকেড’ নাম দিয়ে অবরোধ করার প্রস্তাবনা করেন। পরবর্তী সময়ে আমরা সকলে এই প্রস্তাবে সম্মত হই। এরপর যখন আমরা স্বপ্নের বাসায় মিটিংয়ে বসি তখন আমি ‘বেঙ্গল’ শব্দটা ব্যবহার না করে ‘বাংলা’ ব্যবহার করার প্রস্তাব করি। কমপ্লিট শাটডাউন টার্মটা পুরোপুরি আসিফ ভাইয়ের মাথা থেকে এসেছে। তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই টার্ম প্রস্তাব করেন। আন্দোলনের সময় যখন ডিবি অফিসে মূল নেতৃবৃন্দ আটক ছিলেন, তখন যে টার্মগুলো ছিল বেশির ভাগই আমার, হান্নান মাসউদসহ বাকিদের একত্রে সম্মত হয়ে দেওয়া। মূলত আমাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বোঝাপড়া, একসঙ্গে থাকা, জেল খাটা, নিপীড়ন সহ্য করার মাধ্যমে চিন্তা, চেতনায় এক ধরনের মিথস্ক্রিয়া তৈরি হয়েছে, যা আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন প রস ত ব আম দ র অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ
ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক হতে পারে ৪৫০ কোটি ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে স্পেনের একটি আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর এমন অবস্থান নিয়েছে রিয়াল।
সুপার লিগের পরিকল্পনা আটকে দিয়ে উয়েফা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গ করেছে বলে এর আগে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা উয়েফার আপিল বুধবার মাদ্রিদের প্রাদেশিক আদালত খারিজ করে দেন। একই আদালত স্প্যানিশ লিগ লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আপিলও খারিজ করেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালত সিজেইউ রায় দিয়েছিল, ২০২১ সালে উয়েফা ও ফিফা যে নিয়মগুলো প্রস্তাবিত সুপার লিগ ঠেকাতে ব্যবহার করেছিল, তা ইউরোপীয় আইনের পরিপন্থী। সেই রায় আপিলের পরও বহাল থাকায় রিয়াল মাদ্রিদ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই রায়ে ‘আনন্দিত’, কারণ এটি ‘ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবি করার পথ খুলে দিয়েছে।’
আপিল খারিজের পর বিবৃতি দিয়েছে উয়েফাও। ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই রায় ‘২০২১ সালে ঘোষিত এবং ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ‘সুপার লিগ’ প্রকল্পকে বৈধতা দেয় না। একই সঙ্গে এটি উয়েফার ২০২২ সালে গৃহীত ও ২০২৪ সালে হালনাগাদ করা বর্তমান অনুমোদন-নিয়মকেও খর্ব করে না, যেগুলো এখনো কার্যকর রয়েছে।’
আদালতের রায় বিস্তারিত পর্যালোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছে উয়েফা। আর লা লিগা জানিয়েছে, তারা আদালতের নতুন রায়কে সম্মান জানালেও এর গুরুত্বকে খাটো করে দেখছে। লিগ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘এই সিদ্ধান্ত কোনো নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা কাঠামো অনুমোদন বা সমর্থন করে না, আর ২০২১ সালে ঘোষিত প্রাথমিক প্রকল্প সম্পর্কেও কিছু বলে না, যা পরবর্তীতে আয়োজকেরা পরিবর্তন করেছে।’
২০২১ সালের এপ্রিলে স্পেন, ইতালি ও ইংল্যান্ডের ১২টি ক্লাবের অংশগ্রহণে চালু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপার লিগ প্রকল্প ভেস্তে যায়। প্রথমে ইংলিশ ক্লাবগুলো, পরে ধীরে ধীরে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো সুপার লিগ থেকে সরে আসে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এ নিয়ে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা ও আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।
মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও সুপার লিগের আয়োজক সংস্থা এ২২-এর আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই উয়েফার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি প্রস্তুত করছেন। এই পত্রিকার সূত্রমতে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪,৫০০ মিলিয়ন ইউরো, যা আর্থিক ক্ষতি, সম্ভাব্য লাভ হারানো এবং ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে যোগ করা হচ্ছে।