সংস্কারের বিষয়গুলো নির্বাচিত সংসদের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়ন কার্যক্রমকে যদি কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ঐকমত্য কমিশন পরবর্তী সরকারের ওপর ন্যস্ত করতে চায় তাহলে এনসিপি মনে করে, সেই সংস্কারের গোটা আলোচনা কার্যকর হবে না।’

সংস্কারের ম্যান্ডেট এই সরকারের হাতেই রয়েছে বলে এনসিপি মনে করে—উল্লেখ করে আখতার বলেন, ‘আমরা যারা ঐকমত্য কমিশনে বসছি, জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি, আমরা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অধিকার রাখি। পরবর্তী সরকারের কাছে সংস্কারের কার্যভার ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী আমরা নই।’

সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শেষে এ কথা বলেন আখতার হোসেন।

অনেকের মধ্যে জুলাই সনদকে নিছক একটি দলিল হিসেবে প্রকাশের চিন্তা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপি নেতা আখতার। তিনি বলেন, ‘আমরা তার বিপক্ষে অবস্থান করি। আমরা মনে করি, জুলাই সনদের মধ্য দিয়ে যে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়িত হবে, সেটা বাংলাদেশের সামনের রাজনীতিকে নির্ধারণ করবে। সামনের বাংলাদেশের কাঠামোকে নির্ধারণ করবে।’

এনসিপির দাবি তুলে ধরে আখতার হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশে নতুন কাঠামোকে বাস্তবায়ন করতে, নতুন বন্দোবস্তকে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য কার্যকর করতে গণপরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তারপর গণপরিষদে আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

এদিনের আলোচনায় অধস্তন আদালতকে উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত করা এবং জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তাবে এনসিপি একমত হয়েছে বলে জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, দুটি প্রস্তাব ঘিরে কয়েকটি বিষয় বিবেচনার কথা বলেছেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন সরক র র র জন ত এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

দল হিসেবে আ.লীগকে বাদ দিতে পারেন না: জিএম কাদের

বর্তমান সরকার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নামে অনৈক্য কমিশন তৈরি করেছে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন,“আপনারা আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়েছেন। এটার আমি কোনো অর্থ দেখি না। আওয়ামী লীগকে আপনি দল হিসেবে বাদ দিতে পারেন না। আপনি যদি আওয়ামী লীগকে বাদ দিতে চান, তাহলে মামলা করে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা দিবস উপলক্ষে সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন: জিএম কাদের

জাপার কর্মী সমাবেশ পণ্ড, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

জিএম কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিচার ছাড়া, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অর্ডারে (নির্বাহী আদেশে)। এর বিরুদ্ধে বললে আমাদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।”

সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে অভিযোগ তুলে জিএম কাদের বলেন, “আপনারা নিরপেক্ষ নন, তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় হোন। দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন। প্রয়োজনে আমরা মাঠে নামব কিন্তু পাতানো নির্বাচন হতে দেব না।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নামে অনৈক্য সৃষ্টি করা হচ্ছে অভিযোগ করে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, “তারা (কমিশন) দেশের অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, এটা একটা বড় ধরনের ষড়যন্ত্র দেশের বিরুদ্ধে। দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। আমি হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, দেশের মানুষ এগুলোকে ক্ষমা করবে না।”

“বিগত সময়ে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে খালের কিনারায় ফেলে গেছেন। আর বর্তমান সরকার খালের কিনারা থেকে খালের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এখন দেশ নিচের দিকে পড়ছে। যত দিন দেরি হবে, তত বেশি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জিএম কাদের বলেন, “বাংলাদেশ এখন একটি গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। প্রতিদিন মিল ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবার ফলে কর্মহীন বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সর্বকালের সকল রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। সারা দেশে প্রতি মাসে খুনের সংখ্যা  অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, “দেশ আজ দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। দেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

জাতীয় পার্টিকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি ছাড়া নির্বাচন হলেও সেই নির্বাচনে গঠিত সরকার পরবর্তী সময়ে টিকবে না।”

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন যে সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে, তা টেকসই হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “সংস্কার কমিশনের আলোচনায় জাতীয় পার্টির পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা সেটা করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার কিছু দলের সরকার হয়ে গেছে। এই সরকার কিছু দলকে ভালোবাসে, কিছু দলকে ঘৃণা করে। তাই এদের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন সম্ভব নয়।”

যারাই ক্ষমতায় থাকে, তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির অফিসে তিন বার আগুন দেওয়া হয়েছে। যদি ৩০০ বারও আগুন দেওয়া হয়, তবু জাতীয় পার্টি ফিরে আসবে।”

“সংবিধানে কোন গণভোটের অপশন নেই। এই মুহূর্তে গণভোট করা হলে তা হবে অসাংবিধানিক। যদি জাতির প্রয়োজনে গণভোটের প্রয়োজন হয় তবে তা অবশ্যই সংসদে পাশ করেই করতে হবে।”

উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শেরিফা কাদের, রেজাউল ইসলাম ভূঞা, মমতাজ উদ্দিন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নী, ড. নুরুল আজহার শামীম, লাকী বোগম, খলিলুর রহমান খলিল, নুরুজ্জামান জামান, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন, হেলাল উদ্দিন, এম এ সোবহান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, যুগ্ম মহাসচিব নোমান মিয়া, সামসুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক, মিজানুর রহমান মীরু, দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, ছাত্রনেতা নাজমুল হাসান রেজা প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ প্রস্তুত করছে কমিশন, অগ্রগতি হিসেবে দেখছে এনসিপি
  • বাস্তবায়ন আদেশের ড্রাফট দেখার পর জুলাই সনদে স্বাক্ষর: আখতার
  • ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি
  • জুলাই সনদের বিষয়ে নিষ্পত্তির পর ভোটের দিকে যাবে এনসিপি
  • চীন সংযোগে ঝুঁকি আছে, তা বাংলাদেশকে বোঝাব : ক্রিস্টেনসেন
  • দল হিসেবে আ.লীগকে বাদ দিতে পারেন না: জিএম কাদের
  • কুবির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে হারিয়ে গেছে ফলাফল, আবার হবে পরীক্ষা
  • ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে রায় বাতিল চাইলেন আইনজীবী
  • এইচএসসি ফল বিপর্যয়: ব্যর্থতা নয়, জাগরণের বার্তা
  • ছাত্রলীগ কর্মী জিসান এখনও ওয়ার্ড সচিবের দায়িত্বে বহাল