জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এক সন্ধিক্ষণের মুহূর্তে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। যেকোনো সংকটকালে ‘বিদেশি’দের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ আয়োজন ও সমাধানের রাস্তা বের করার নজির এতকাল দেখে আসছি। এই প্রথম আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে, কীভাবে তার রূপান্তর ঘটবে—সে সিদ্ধান্ত কোনো ‘বিদেশি’ হস্তক্ষেপ ছাড়াই রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ সংলাপ ও তর্কবিতর্কের মধ্য দিয়ে নিচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতাসহ এ অভূতপূর্ব ঘটনা গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে ঘটছে।
গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হওয়া উচিত, তার আইনকানুন, প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হওয়া দরকার—তা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে। তবে চব্বিশের জুলাই মাসে আমরা যে ধরনের সহিংসতা প্রত্যক্ষ করেছি, সেই আলোকে আমাদের আরও কিছু আলাপ করা দরকার ছিল বলে মনে করি, যা জনপ্রিয় পরিসরে এখনো অনুপস্থিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে এমন অনেক বিদ্বজ্জন জড়িত আছেন, যাঁরা প্রধানত ‘নাগরিক অধিকার’ নিয়ে কাজ করার জন্যই মশহুর। ফলে তাঁদের কাছে প্রত্যাশার পারদও ছিল উঁচুতে।
চব্বিশে আমরা যে ধরনের সহিংসতা দেখেছি, সেখানে কেবল কয়েকজন ব্যক্তির সম্পৃক্ততার বিষয় নয়; বরং সমাজের একটা বড় অংশ সেখানে জড়িত থাকে। আমলাতন্ত্র, পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বহু লোক এতে জড়িত থাকেন। সবাইকে যেমন আইনের সামনে নিয়ে আসা সম্ভব হয় নয়, তেমনি সবাইকে বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানোও সম্ভব হয় নয়। আবার প্রচলিত আইন এ ধরনের হত্যাযজ্ঞের বিচার করতে সক্ষম হয় না।
অন্যদিকে কেবল আইন-আদালতকেন্দ্রিক বিচার করলে এ সহিংসতার শিকার ভুক্তভোগীরা যে ধরনের ট্রমার ভেতর দিয়ে যান, সেটা নিরাময় করতে পারেন না। আবার এ ধরনের সহিংসতায় যে ধরনের বহুমাত্রিক ভুক্তভোগী তৈরি হন, প্রচলিত ব্যবস্থায় কেবল আপাতবিজয়ী গোষ্ঠীই নিজেদের ‘ভুক্তভোগী’ হিসেবে দাবি করতে পারে। ফলে কেবল তাদের সঙ্গে সংঘটিত সহিংসতার বিচারের দিকেই ধাবিত হন।
যখন কোনো সমাজে এ ধরনের বিরাট মাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে, তখন এর প্রভাব ও ধাক্কা সমাজ থেকে ধীরে ধীরে হ্রাস করতে চাইলে আমাদের ইনসাফের একটা বিরাট ক্যানভাসের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হতে হবে সমাজ ও রাষ্ট্রে সেই সহিংসতা যেন এমন কোনো ‘ক্ষত’ তৈরি করতে না পারে, যা ক্রমাগত সহিংসতার দুষ্টচক্র তৈরি করতে পারে।
মনে রাখা দরকার, সহিংসতার সঙ্গে আইডেন্টিটি বা পরিচয়ের সম্পর্ক নানামুখী হলেও প্রধানত দুই ধরনের সম্পর্ক দেখতে পাই আমরা। প্রথমত দেখি যে ‘পরিচয়’ই কখনো কখনো সহিংসতার কারণ হিসেবে উপস্থিত থাকে (আমরা যাকে নেতিবাচকভাবে আইডেন্টিটি পলিটিকস বলে নিন্দা করি)। দ্বিতীয়ত, সহিংসতা বা সহিংস অভিজ্ঞতা বা ইতিহাস খোদ সামষ্টিক ‘পরিচয়’ নির্মাণের অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে নিহত শিক্ষার্থীদের গায়েবানা জানাজা শেষে কফিন মিছিল বের করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।