গিল-সুন্দর-জাদেজার সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়ের সমান এক ড্র
Published: 27th, July 2025 GMT
ম্যান্ডেটরি শেষ এক ঘণ্টার খেলা যখন শুরু হবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস এগিয়ে গেলেন ভারতীয় দুই ব্যাটসম্যানের দিকে। উদ্দেশ্য ড্র মেনে নিয়ে করমর্দন করা। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর ফিরিয়ে দিলেন স্টোকসকে। না, ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট জয়ের কোনো সম্ভাবনাই ছিল না জাদেজা-সুন্দরের ভারতের। ৮৯ ও ৮০ রানে দাঁড়ানো দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির এত কাছে থেকে ফিরতে চাননি বলেই ফিরিয়ে দিয়েছেন স্টোকসের প্রস্তাব।
এরপর যা হলো সেটিকে হাস্যকর বলাই ভালো। প্রায় অন্ধকার হয়ে আসা মাঠে বল করলেন হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের মতো অনিয়মিত স্পিনাররা। আর জাদেজা ও সুন্দর মেরেকেটে দ্রুতই তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। প্রথমে সেঞ্চুরিতে পৌঁছালেন জাদেজাই। ব্রুককে ছক্কা মেরেই পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিলেন।
প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা সুন্দর তিন অঙ্ক ছুঁলেন ১৫ বল পর ব্রুকের বলেই ২ রান নিয়ে। এরপরই দুই দলের খেলোয়াড়েরা হাত মিলিয়ে ড্র মেনে মাঠ ছাড়েন। আর তাতে ওভালে সিরিজের শেষ ম্যাচটাই হয়ে গেল সিরিজ নির্ধারণী। চার ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে।
শেষটা অদ্ভুতুড়ে হলেও জাদেজা ও সুন্দরের অবশ্য সেঞ্চুরি পাওনা হয়েই গিয়েছিল। সকালে লোকেশ রাহুল ও শুবমান গিলের বিদায়ের পর শেষ দুই সেশনে কী প্রতিরোধটাই গড়েছেন দুজন। ইনিংস হারের শঙ্কা উড়িয়ে ম্যাচটা ড্র করে ভারতকে সিরিজে টিকিয়ে রাখার পুরস্কারই তো সেঞ্চুরিতে পেলেন দুজন।
ম্যাচটা যখন শেষ হলো ভারতের স্কোর ৪২৫/৪। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে চেয়ে দলটি এগিয়ে গিয়েছিল ১১৪ রানে। স্টোকস যখন প্রথমবার ড্রর প্রস্তাব দিলেন তখন দলটি এগিয়ে ছিল ৭৫ রানে। পঞ্চম উইকেটে ২০৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়া জাদেজা ১৮৫ বলে ১০৭ ও সুন্দর ২০৬ বলে ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ শেষ দিনটা ভারত শুরু করে ২ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে। ৩১১ রানের ঘাটতি নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা দলটি গতকাল শূন্য রানেই প্রথম ২ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ব্যবধানে হারার শঙ্কায় পড়ে। তবে গিল-রাহুল সেদিন আর উইকেট পড়তে দেননি। দলটি তৃতীয় উইকেট হারায় ১৮৮ রানে। ভারতের ওপেনার লোকেশ রাহুলকে এলবিডব্লু করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরির পাননি রাহুল। তবে ১৮৮ রানের জুটিতে তাঁর সঙ্গী শুবমান গিল সেঞ্চুরি তুলেই ফিরেছেন, করেছেন ১০৩ রান। এই সিরিজে যা ভারত অধিনায়কের চতুর্থ সেঞ্চুরি। তাতে এক সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে দুই কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ও সুনীল গাভাস্কারের পাশে বসেছেন গিল।
গিল ফেরেন ২২২ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে। ভারত তখন পিছিয়ে ৮৯ রানে। এরপর আর উইকেট হারায়নি ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ৩৫৮ ও ১৪৩ ওভারে ৪২৫/৪ (গিল ১০৩, জাদেজা ১০৭*, সুন্দর ১০১, রাহুল ৯০; ওকস ২/৬৭, স্টোকস ১/৩৩, আর্চার ১/৭৮)।ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৬৯।
ফল: ড্র
সিরিজ: ৫-ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-১-এ এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বেন স্টোকস।.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বায়ার্নের টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ড
জার্মান ফুটবলের পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখ আবারও ছুঁয়ে দেখল ইতিহাস। চলতি ডিএফবি পোকাল তথা জার্মান কাপের ২০২৫-২৬ আসরে আরেকটি দারুণ জয় তুলে নিয়ে তারা টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত থাকার গৌরব অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ইতিহাসে নতুন এক রেকর্ড গড়ে নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করল তারা।
ভিনসেন্ট কোম্পানির অধীনে এই মৌসুমে বায়ার্ন যেন অন্য গ্রহের এক দল। গ্রীষ্মের ট্রান্সফার উইন্ডোতে লুইস দিয়াজ ও নিকোলাস জ্যাকসনের মতো তারকাদের দলে টেনে শক্তি বাড়ায় জার্মান জায়ান্টরা। এরপর থেকেই তারা খেলছে দুরন্ত ছন্দে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১৪ ম্যাচে জয়!
আরো পড়ুন:
রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে
রশিদ-জাম্পাকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের রিশাদ
এর আগে বায়ার্ন মিউনিখ ও এসি মিলান যৌথভাবে ১৩ ম্যাচ টানা জয়ের রেকর্ডের মালিক ছিল। তবে জার্মান কাপে বুধবার দিবাগত রাতে কোলনের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে এককভাবে শীর্ষে উঠে গেছে বাভারিয়ানরা।
সে ম্যাচে লুইস দিয়াজ শুরুতেই গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। এরপর হ্যারি কেন ৩৮ ও ৬৪ মিনিটে জোড়া গোল করে ব্যবধান বাড়ান। আর ৭২ মিনিটে মাইকেল ওলিসে গোল করে বায়ার্নের উৎসবে যোগ দেন।
ম্যাচ শেষে বায়ার্নের ডিফেন্ডার জোনাথান তা বলেন, “আমরা সব সময় ক্ষুধার্ত, জয়ের ক্ষুধায়। কখনও সন্তুষ্ট থাকি না। আজকের জয় উপভোগ করছি। তবে কাল থেকেই পরের ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু হবে।”
আগামী ১ নভেম্বর বুন্দেসলিগায় বায়ার লেভারকুসেনের মুখোমুখি হবে বায়ার্ন মিউনিখ। এরপর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগে ৫ নভেম্বর তাদের অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ, প্যারিসে পিএসজির বিপক্ষে লড়াই। বর্তমানে দুই দলই চ্যাম্পিয়নস লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। ফলে ম্যাচটি হয়ে উঠবে মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের এক মহারণ।
ঢাকা/আমিনুল