১. নিজেকে সহজলভ্য না করা

যে পুরুষ ফোনে মেসেজ পেলেই সব কাজ ফেলে উত্তর দেন না, ফোন বেজে উঠলেই অস্থির হয়ে পড়েন না—নারীরা স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। কারণ, এতে তাঁরা ভাবেন, এই মানুষটা আলাদা।

একজন পুরুষ, যিনি কাউকে ভালোবাসলেও নিজের জগৎ ভুলে যান না, তিনি নারীদের কাছে ভিন্ন রকম। এতে নারী বুঝতে পারেন, এই পুরুষটি কারও মনোযোগ পাওয়ার জন্য ছোটেন না, বরং নিজের সময় ও জীবনকে গুরুত্ব দেন। আর যা সহজে পাওয়া যায় না, সেটাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে আকর্ষণীয়।

আমাদের সমাজে যেখানে অনেকে মনে করেন, ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে থাকাই ভালোবাসার প্রমাণ, সেখানে এ ধরনের পুরুষ হন ব্যতিক্রম। তিনি তাঁর প্রতিটি মুহূর্ত অন্যের জন্য উন্মুক্ত রাখেন না; কারণ, তাঁর সময় দখল করে রেখেছে তাঁর লক্ষ্য, কাজ ও তাঁর জীবন। এই সামান্য দূরত্বই জন্ম দেয় গভীর আকর্ষণের।

২.

আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ‘না’ বলা

একজন নারী যখন কাউকে সত্যিকার অর্থে পছন্দ করেন, তিনি শুধু সুন্দর চেহারা দেখেন না। তিনি খোঁজেন এমন একজনকে, যিনি নিজের সীমারেখা সম্পর্কে সচেতন এবং কারও মন রক্ষার জন্য নিজের অবস্থান থেকে সরে যান না। যিনি সোজাসাপটা বলেন, ‘আমি যেতে পারব না’ বা ‘আমি কাজটা করতে পারব না’।

আবার ভদ্রতা দেখিয়ে বলেন না, ‘আশা করি কিছু মনে করবেন না।’ যে পুরুষ দুঃখ প্রকাশ না করে এবং অপরাধবোধ ছাড়াই ‘না’ বলতে পারেন, তিনি নারীদের চোখে হয়ে ওঠেন সম্মানের। কারণ, এতে নারী বুঝতে পারেন, এই মানুষটির আত্মমর্যাদা আছে, নিজের সময়কে গুরুত্ব দেন।

এ রকম পুরুষ পাওয়া সহজ নয়। আর যা সহজ নয়, তা–ই সবচেয়ে বেশি টানে। কারণ, নারী খোঁজেন এমন কাউকে, যাঁকে তিনি শুধু ভালোবাসবেন না, শ্রদ্ধাও করবেন।

৩. নিজেকে অসম্মানিত হতে না দেওয়া

কখনো কখনো অসম্মান করা হয় ঠাট্টার ছলে, কটাক্ষ করে। বেশির ভাগ পুরুষ এমন মুহূর্তে চুপ করে থাকেন, যাতে সহকর্মী বা পরিচিতজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি না হয়। কিন্তু একজন আত্মমর্যাদাবান পুরুষ তা করেন না। তিনি রেগে না গিয়ে, অন্যকে অপমান না করেও শান্ত গলায় বলেন, ‘আমি এ ধরনের আচরণ বা ব্যবহার মেনে নিই না।’

এই স্বচ্ছ ও দৃঢ় অবস্থান নারীদের মনে তৈরি করে ভরসা, নিরাপত্তা আর সম্মানের অনুভব। কারণ, তাঁরা বুঝে যান, যে পুরুষ নিজের সম্মান রক্ষা করতে জানেন, তিনি অন্যের সম্মান রক্ষায় পিছপা হবেন না।

এ ধরনের পুরুষ তাই নারীদের চোখে হয়ে ওঠেন আরও আকর্ষণীয়; শুধু তার কথার জন্য নয়, তাঁর স্থির ও সাহসী উপস্থিতির জন্য।

আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখতে যে ৩টি খাবার খাবেন২৮ জুলাই ২০২৫৪. চট করে প্রতিক্রিয়া না দেখানো

অনেক সময় নারীরা পুরুষকে ছোট ছোট পরীক্ষায় ফেলেন, তবে সেটা কিন্তু বেকায়দায় ফেলার জন্য নয়, বরং অবচেতনভাবে একজন সঙ্গীর ভেতরে স্থিরতা ও ভরসা খোঁজার জন্য।

তাঁরা হয়তো খোঁচা দেন, রসিকতা করেন, কিংবা হালকা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, এটা দেখার জন্য যে পুরুষটি চাপের মুখে কতটা স্থির থাকতে পারেন।

বেশির ভাগ পুরুষ এসব মুহূর্তে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখান; রেগে যান, তর্কে জড়ান বা ব্যাখ্যা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু যেসব পুরুষ শান্ত থাকেন, একটুখানি হাসেন কিংবা কিছুই না বলে নিজের ভেতরের ভারসাম্য ধরে রাখেন, তাঁরা সেই মুহূর্তেই অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে ওঠেন।

এ ধরনের পুরুষকে তখন নারী আর সাধারণ কেউ মনে করেন না। বরং তিনি হয়ে ওঠেন এক দৃঢ় পুরুষ। আর তাঁদের উপেক্ষা করা যায় না। তাঁদের ভেতরের শক্তি, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং স্থিরতা নারীদের মনে আনে একধরনের নিরাপত্তা। নারীরা মনে করেন, তাঁরা শুধু পরিস্থিতি সামলাতে জানেন না, তার পাশে দাঁড়ানোও যায় নিশ্চিন্তে।

৫. নীরব আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা

আত্মবিশ্বাস, স্থিরতা ও ভেতরের শক্তি—সব মিলিয়ে আত্মমর্যাদা একজন পুরুষকে পছন্দ করার অন্যতম কারণ। যে পুরুষ অল্প কথায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন, অযথা ব্যাখ্যা দেন না এবং সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকেন, নারীদের কাছে তিনিই হয়ে ওঠেন আলাদা।

যেমন তিনি সহজভাবে বলেন, ‘আমি যেতে পারব না, পরে দেখা হবে।’ এতে থাকে না দুঃখ প্রকাশ, থাকে না বাড়তি ব্যাখ্যা। এতে নারী বুঝতে পারেন, এই পুরুষ নিজেকে বোঝেন এবং অন্যের মতামত দিয়ে নিজের পথ বদলান না।

এ ধরনের পুরুষদের আচরণে থাকে একরকম শান্ত আত্মবিশ্বাস। তাঁরা কম কথা বলেন, কিন্তু যা বলেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি তাঁর নীরবতাও অর্থবহ হয়ে ওঠে। নারীরা এসব পুরুষের মধ্যে খুঁজে পান ভরসা, যা শুধু কথায় নয়, আচরণেই ফুটে ওঠে। তাই নারীদের চোখে এই নিঃশব্দ আত্মমর্যাদা হয়ে ওঠে গভীর আকর্ষণের উৎস।

আরও পড়ুনহাতিরঝিলের রাস্তার গর্তে অটোরিকশা, দুজন আহত এবং একটি টুইস্ট১৬ ঘণ্টা আগে৬. লক্ষ্যে অটল থাকা

একজন পুরুষ সুদর্শন হলেই যে একজন নারী তাঁকে পছন্দ করবেন বা ভালোবাসবেন, এমনটা নয়। কারণ, একজন নারী এমন পুরুষকে ভালোবাসেন, যাঁর নিজের লক্ষ্য আছে। পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেন।

একজন নারী এমন কাউকে চান না, যিনি তাঁকেই (ওই নারীকে) নিজের পুরো জগৎ বানিয়ে ফেলেন। বরং এমন পুরুষকে ভালোবাসেন, যাঁর পাশে দাঁড়িয়ে নিজেও এগিয়ে যাওয়া যায়। যাঁকে সমর্থন করা যায়, যাঁর স্বপ্নে অংশ নেওয়া যায়।

সেই পুরুষ শুধু একজন সঙ্গী নন, বরং পূর্ণাঙ্গ এক মানুষ। যে পুরুষের সঙ্গে জীবন ভাগ করে নেওয়া যায় আত্মবিশ্বাস আর সম্মানের সঙ্গে। এই ভরসাপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে অটল পুরুষই একজন নারীর কাছে হয়ে ওঠেন সত্যিকার অর্থে পছন্দের।

সূত্র: মিডিয়াম

আরও পড়ুনজিমে কেন হার্ট অ্যাটাক হয়১৪ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ধরন র প র ষ একজন প র ষ একজন ন র লক ষ য পছন দ

এছাড়াও পড়ুন:

তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া

পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির। 

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।

ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।

ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়। 

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”

প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।

নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার